আজ, বিশ্ব হাত ধোয়া দিবস।
হাত ধোয়া নিয়ে মানুষকে সচেতন করতে হাত ধুয়ে নেমেছে উত্তর ২৪ পরগনা জেলা প্রশাসন।
আজ, শুক্রবার বিশ্ব হাত ধোয়া দিবসে জেলা জুড়ে বিভিন্ন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে। সকাল ৯টা এবং বেলা দেড়টায় জেলার ২৮ লক্ষ মানুষ একই সঙ্গে হাত ধোবেন বলে জানিয়েছে জেলা প্রশাসন। এ জন্য ১৩২০০টি জায়গা বাছা হয়েছে। যার মধ্যে বারাসত, বসিরহাট, নৈহাটি, দমদম, ব্যারাকপুর স্টেশন এবং জেলার গুরুত্বপূর্ণ বাসস্ট্যান্ডগুলিও আছে। এ সব জায়গায় হ্যান্ড স্যানিটাইজার, সোপ পেপার, জল রাখা হবে। যাঁরা কর্মসূচিতে সামিল হয়ে হাত ধোবেন, তাঁদের একটি করে রিস্টব্যান্ড পরানো হবে। এ ব্যাপারে তথ্যও রাখা হবে। ছ’টি ধাপে স্বাস্থ্যসম্মত ভাবে হাত ধোয়ার কৌশল শেখানো হবে। বিশাল এই কর্মযজ্ঞ গিনিস বুক অব ওয়ার্ল্ড রেকর্ডসে জায়গা করে নেবে বলে আশা জেলা প্রশাসনের কর্তাদের। বারাসতের কাছাড়ি ময়দানেও একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। সেখানে উপস্থিত থাকবেন এ দেশের ইউনিসেফের মুখ্য আধিকারিক মেলিন কোটস। বেলা ১টা ২৫ মিনিটে বাজবে সাইরেন। ঠিক দেড়টায় শুরু হবে অনুষ্ঠান।
কিন্তু জেলা জুড়ে এমন বিশাল কর্মযজ্ঞের কারণ?
‘নির্মল বাংলা’ গড়ার লক্ষেই এমন কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে বলে প্রশাসন সূত্রের খবর। জেলাশাসক মনমীত কৌর নন্দা বলেন, ‘‘বিভিন্ন স্কুল, মাদ্রাসা, পিছিয়ে পড়া এলাকার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র-সহ আরও অনেক গোষ্ঠীকে এই কর্মসূচিতে সামিল করা হয়েছে। গত কয়েক দিন ধরে তা নিয়ে জেলা জুড়ে প্রচারও হয়েছে।’’
জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক প্রলয় আচার্য বলেন, ‘‘জেলা স্বাস্থ্য দফতরের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, সুন্দরবন-সহ জেলার প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে জলবাহিত রোগ ছড়াচ্ছে নানা সময়ে। হাত না ধুয়ে খাবার খাওয়া যার একটি বড় কারণ। সে দিকে লক্ষ্য রেখেই রাজ্যের সব থেকে বেশি জনসংখ্যাসম্পন্ন এই জেলায় হাত ধোয়া নিয়ে সচেতনতা বাড়াতে এই বিশাল কর্মসূচি নেওয়া হয়েছে।’’ কিন্তু জেলার সব স্কুলে তো এখনও পরিস্রুত পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই। অতিরিক্ত জেলাশাসক (উন্নয়ন) শান্তনু মুখোপাধ্যায় জানান, ব্লক ও পঞ্চায়েত স্তরে যেখানে এমন সমস্যা আছে, সেখানে ব্লক প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কিছু বাকি থাকলেও সে ব্যাপারেও তদারকির কাজ চলছে।’’
রোগ ঠেকাতে হাত ধোয়ার প্রচলন খুব বেশি দিনের নয়। উনবিংশ শতকে প্রথম সচেতনতা তৈরি হয়। সদ্য প্রসূতি এবং আহত সৈনিকদের ক্ষেত্রে হাত ধোয়ার প্রয়োজনীয়তা প্রথম চোখে পড়ে কিছু মানুষের। তাঁদের মধ্যে অগ্রগণ্য ছিলেন হাঙ্গেরির চিকিৎসক ইগনাস সেমেলউইজ। ভিয়েনা, অস্ট্রিয়ায় কাজ করতে গিয়ে তাঁর এই অভিজ্ঞতা হয়। ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলেরও এ বিষয়ে অবদান রয়েছে। তার আগে দুর্গন্ধকেই রোগ ছড়ানোর কারণ বলে মনে করতেন উন্নত দেশগুলির মানুষ। ১৯৮০-র দশকে এসে হাত ধোয়ার মতো জরুরি স্বাস্থ্যবিধি যে বহু রোগ প্রতিরোধে সক্ষম, তা নিয়ে সচেতন হয় মানুষ। ২০০৯ সালে সোয়াইন ফ্লু ছড়ানোর পর সচেতনতা বাড়ে বিশ্ব জুড়ে। তথ্যসূত্র: উইকিপিডিয়া।
কেন জরুরি
সর্দি-কাশি, ইনফ্লুয়েঞ্জার হাত থেকে রেহাই মেলে।
শ্বাসকষ্টজনিত সংক্রমণ রোখা যায়।
ডায়েরিয়া সংক্রমণ কমে।
শিশু মৃত্যুর হার কমাতে সাহায্য করে মা ও শিশুর হাত ধোয়ার অভ্যাস।
পাঁচ বছরের নীচের শিশুদের উচ্চতা বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সাহায্য করে।
হাত ধোয়ার সঠিক উপায়
খাবার আগে ও পরে উষ্ণ গরম জলে সাবান দিয়ে হাত ধুলে ভাল।
শৌচকর্মের পরে সাবান ব্যবহার অবশ্যই উচিত।
সাবানের বদলে মাটি বা ছাই ব্যবহার করা যায়।
হাতের কাছে আর কিছু না পেলে স্রেফ ঠান্ডা জলে ভাল করে হাত ধুয়ে তবেই খাবার মুখে তোলা উচিত।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy