Advertisement
০১ মে ২০২৪

ভোটচিত্রে ভোলবদল উঁচু তলার ইঙ্গিতেই

ছ’দিন কেটেছে শুধু। কিন্তু ফারাকটা যেন মনে হচ্ছে আকাশ-পাতালের। ভোটচিত্রে এই ভোলবদলের ছবিটাই আজ দেখলেন সল্টলেকের বাসিন্দারা। কী রকম?

ভোট-পাহারা। সল্টলেক এবি ব্লক কমিউনিটি হলের বাইরে শুক্রবার সুমন বল্লভের তোলা ছবি।

ভোট-পাহারা। সল্টলেক এবি ব্লক কমিউনিটি হলের বাইরে শুক্রবার সুমন বল্লভের তোলা ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১০ অক্টোবর ২০১৫ ০৩:৩১
Share: Save:

ছ’দিন কেটেছে শুধু। কিন্তু ফারাকটা যেন মনে হচ্ছে আকাশ-পাতালের। ভোটচিত্রে এই ভোলবদলের ছবিটাই আজ দেখলেন সল্টলেকের বাসিন্দারা।

কী রকম?

সে দিন দরজা বন্ধ করে ছাপ্পা ভোট দিচ্ছিল বহিরাগত যুবকের দল। এলাকার বাসিন্দারা তা দেখতে বলেছিলেন পর্যবেক্ষককে। কিন্তু তিনি গাড়ি থেকে নামেননি। দেদার ছাপ্পা দেখেও দেখেননি ভোটকর্মীরা।

আর এ দিন ভোট চলাকালীনই একটি বুথের প্রিসাইডিং অফিসারকে সরিয়ে দেওয়া হল। অভিযোগ, ইভিএম মেশিনের সামনে বসে তৃণমূলের পোলিং এজেন্ট খেতে খেতে দেখছিলেন, কারা কোথায় ভোট দিচ্ছেন! বিরোধীরা ভোট বয়কট করায় বুথের ভিতরে তাদের কোনও এজেন্ট ছিলেন না। শুধুমাত্র এক ভোটার মিনমিন করে অভিযোগ করেছিলেন। তার ভিত্তিতে তৎক্ষণাৎ কড়া ‘অ্যাকশন’। আচরণের এমন ফারাক দেখে হতভম্ব সেই ভোটারই!

সূত্রের খবর, আসলে উপর থেকে আসা নির্দেশই ফারাকটা গড়ে দিয়েছে। আগের ভোটের দিন যেমন সল্টলেক দাপিয়ে বেড়াতে দেখা গিয়েছিল তৃণমূলের তাবড় নেতাদের, এ দিন তাঁরা কার্যত ঘরবন্দি। বিধাননগরের তৃণমূল বিধায়ক সুজিত বসুকে সে দিন আঙুল তুলে শাসাতে দেখা গিয়েছিল, তাঁর সামনেই বেধড়ক মারধর করা হয়েছিল সাংবাদিকদের। এ দিন তিনি ঘরে বসে বলেছেন, ‘‘সল্টলেকে সে দিন না গেলেই ভাল হতো। যে কারণেই যাই না কেন, সল্টলেকে যাওয়াটা আমার ভুলই হয়েছিল।’’ রাজ্যের খাদ্যমন্ত্রী, সল্টলেকের নির্বাচনের দায়িত্ব যাঁর কাঁধে, সেই জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকও এ দিন বাড়ি থেকে বেরোননি। উল্টে ফোন করে করে দলীয় নেতা-কর্মীদের নির্দেশ দিয়েছেন, ‘‘কোনও গণ্ডগোল চলবে না। শান্তিতে ভোট করতে হবে।’’

বিবেকের ডাক?

তৃণমূল সূত্রের খবর, এ-ও সেই উপরতলার নির্দেশেরই ফল। এ রকম ‘শান্তিপূর্ণ’ পুনর্নির্বাচন করাই ছিল এ বার স্ট্র্যাটেজি। আর সেই কৌশলই গড়ে দিয়েছে ফারাকটা।

আর সে জন্যই সল্টলেকের যে বাসিন্দারা ছ’দিন আগে দেখেছিলেন অপরিচিত যুবকের দল থিক থিক করেছে বুথের ভিতরে-বাইরে, মারধর গালিগালাজ করে হটিয়েছে ভোটারদের, এ বার তারা উধাও।

উপরতলার ইঙ্গিত বুঝে পাল্টে গিয়েছে পুলিশ। আগের দিন তারা ছিল কার্যত দর্শকের ভূমিকায়। এ দিন তাদের থিকথিকে ভিড় বুথের সামনে, ভিতরে। ‘বডি ল্যাঙ্গুয়েজে’ আত্মবিশ্বাস। পরিস্থিতি পুরো নিয়ন্ত্রণে দেখে তাদের কাউকে দেখা গিয়েছে খোশমেজাজে স্কুলের দোলনায় বসে দোল খেতেও! যা দেখে এলাকার এক প্রবীণ বাসিন্দা বলেন, ‘‘বোঝা যাচ্ছে, এ বার অন্য রকম ভোট করানোর জন্য উপরতলা থেকে নির্দেশ এসেছে!’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE