রাতে ঘোষণা হয়েছে। সকাল থেকেই সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে বার্তা নামতে লাগল সমতলে: ‘১০৩ দিন পরে ফিরে এলাম, হোয়াটসঅ্যাপে ফিরে এলাম!’ একই সঙ্গে পাঠানো শুরু হলো পাহাড়ের ছবি। দার্জিলিং তত ক্ষণে সরগরম। হোয়াটসঅ্যাপে ডাক পড়েছে, তাই হাটবাজারে জমজমাট ভিড়। এটিএম সচল হয়েছে, তাই সেখানে দীর্ঘ লাইন।
দোকানদার, হকাররাই বা হাত গুটিয়ে থাকবেন কেন? ঝপাঝপ ঝাঁপ খুলে রেস্তোরাঁ চালু হয়ে গেল। হকাররাও বসে গিয়েছেন ফুটপাথে।
সব দেখেশুনে দার্জিলিঙের অনেকেই বলছিলেন, দু’দিনের মধ্যে পাহাড় পুরোপুরি ছন্দে ফিরে যাবে। এই প্রেক্ষাপটেই এল বিমল গুরুঙ্গ ঘোষণা: বুধবার সকাল ৬টা থেকে বন্ধ তুলে নেওয়া হচ্ছে। এই ঘোষণা নিয়ে অবশ্য বিশেষ হেলদোল নেই পাহাড়বাসীর। বরং অনেকেই বলছেন, ঘোষণা না করলেও বন্ধকে আর পাত্তা দিত না পাহাড়।
ইন্টারনেট চালু হয়ে যাওয়ায় বিশেষ করে খুশি পাহাড়ের মানুষ। দার্জিলিঙে এমন অনেকেই আছেন, যাঁদের বাড়ি সমতলে। কারও কলকাতায়। কারও বা দক্ষিণবঙ্গে। তাঁরা বলছেন, এ বারে সহজে বাড়ির সঙ্গে যোগাযোগ রাখা সম্ভব হবে। নেট চালু হওয়ার বিষয়টি সোমবার রাতে ঘোষণা করে রাজ্য সরকার। তাদের বক্তব্য ছিল, পাহাড় স্বাভাবিক হচ্ছে দেখেই ইন্টারনেট চালু করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এ দিন সকালে অনেকেই জানতেন না সে খবর। তবে বেশি ক্ষণের জন্য নয়। সোশ্যাল মিডিয়াই জানিয়ে দিয়েছে, ফের বিশ্বের সঙ্গে জুড়ে গিয়েছে পাহাড়।
এর পর শুধু দোকানপাট খোলার অপেক্ষা ছিল। বেলা বাড়তে সেই ঝাঁপ তোলাও শুরু হয়ে গেল। দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ হয়ে থাকা বহু হোটেল, রেস্তোরাঁর মালিকপক্ষের তরফে রাতেই যোগাযোগ করা হয় স্থানীয় কর্মীদের সঙ্গে। সকাল থেকে তাঁরা এসে সাফাইয়ের কাজ শুরু করেন। রাস্তায় তত ক্ষণে গাড়িও চলতে শুরু করেছে। এবং সংখ্যায় আগের দিনের থেকে অনেক বেশি। আজ, মহাসপ্তমীতে আবার সেই চেনা ছন্দে পাহাড় ধীরে ধীরে ফিরবে বলেই পাহাড়বাসীর আশা। দশমীর উৎসব কী ভাবে উদ্যাপন করা হবে, তাই নিয়ে চিন্তায় ছিলেন অনেকে। রাতে তাঁরাও প্রস্তুতি শুরু করে দেন।
দিনভর ছন্দে চললেও রাতের দিকে ইন্টারনেট সংযোগ আবার গোলমাল করতে থাকে। দার্জিলিঙের জেলাশাসক জয়সী দাশগুপ্ত জানান, ইন্টারনেট পরিষেবা ফিরেছে ঠিকই, তবে আন্দোলনের সময়ে বহু জায়গায় টেলিফোনের ফাইবার অপটিক্যাল কেবলও কাটা হয়। কয়েক জনের এই কাজের জন্যই পাহাড়বাসীকে একটু সমস্যায় পড়তে হচ্ছে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy