পিনাকীচন্দ্র ঘোষ
চার বছর একটানা সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি থাকার পর ২৭ মে অবসর নিতে চলেছেন পিনাকীচন্দ্র ঘোষ। অবসরের পর তাঁর ইচ্ছে, মানুষকে আইনি সাহায্য করা। গরিবের প্রয়োজনে বিনা মূল্যে আইনি পরামর্শ দেওয়া।
বিশিষ্ট আইনজীবী ফালি নরিম্যান বলেছেন, ‘‘পিনাকীর সবথেকে বড় বৈশিষ্ট্য হল, বিচারপতির আসনে তিনি যখন বসেন, তখন তিনি মামলাকারীকে মামলাকারী হিসেবেই দেখেন। তিনি সরকারের পক্ষে না বিপক্ষে, সেটা কখনও দেখেননি।’’ সেই কারণেই পিনাকীবাবুর সরকার-বিরোধী রায়ের সংখ্যাও কম নয়।
বিচারপতিদের তালিকায় বাঙালিদের ঐতিহ্য সুপ্রিম কোর্টে অনস্বীকার্য, সে কথা স্বীকার করেন দুঁদে আইনজীবী রাম জেঠমলানী থেকে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিও। বিজন মুখোপাধ্যায় প্রধান বিচারপতি হয়েছিলেন। প্রয়াত আইনমন্ত্রী অশোক সেনের শ্বশুরমশাই সুধীরঞ্জন দাসও হয়েছিলেন প্রধান বিচারপতি। অমল সরকার, সব্যসাচী মুখোপাধ্যায়ও প্রধান বিচারপতি হিসেবে দাগ কেটেছিলেন সুপ্রিম কোর্টে। লন্ডনে সব্যসাচীবাবুর দুর্ঘটনায় আকস্মিক মৃত্যু বিচার জগতে শোকের ছায়া ফেলেছিল। একবার বাংলার তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বিধান রায়ের ভাইপো সুবিমল রায়কে হাইকোর্টের বিচারপতি হতে বলা হয়েছিল। তিনি রাজি হননি। সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হয়েছিলেন। সেই ভাবেই পিনাকীবাবু সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বলে তাঁর পুত্র সৌমাভ দিল্লিতে না এসে কলকাতা হাইকোর্টে ওকালতি করছেন। সৌমাভই জানালেন, পিনাকীবাবুর অবসর নেওয়ার ঠিক পরের দিন, ২৮ মে তাঁর জন্মদিন। পরিবারের সবাই মিলে দিনটা কাটানোর পরিকল্পনা চলছে। পুত্রের মন্তব্য, ‘‘বাবা আগে ভোজনরসিক ছিলেন। এখন খাওয়াদাওয়া কমিয়ে দিয়েছেন।’’ পিনাকীবাবুর কন্যা সংযুক্তা পেশায় চিকিৎসক। তিনিও থাকেন কলকাতায়।
আরও পড়ুন: হেরিটেজ লালবাতি, নাছোড় বরকতি
গত কাল থেকেই সুপ্রিম কোর্টে ছুটি পড়ে গিয়েছে। আর কখনওই বিচারপতির চেয়ারটিতে গিয়ে পিনাকীচন্দ্র ঘোষকে বসতে হবে না। কিন্তু আনুষ্ঠানিক ভাবে অবসর গ্রহণ এখনও হয়নি। পুত্র সৌমাভ বলেন, আপাতত বাবা সবথেকে যে কাজটি করতে ভালবাসেন, সেই কাজটিই করছেন। ঠাকুর-মা-স্বামীজি সম্পর্কিত বিবিধ বই পড়ছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy