Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ফেসবুকে গুরুঙ্গের পক্ষ নিয়ে ধমক খেলেন দিলীপ

সোমবার সাত সকালেই সে কথা রাজ্যের এক নেতাকে ফোন করে জানিয়েও দিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে রাজ্যে দলের এক পর্যবেক্ষক। বিজেপি সূত্রের খবর, বিজেপির ওই কেন্দ্রীয় নেতা জানতে চেয়েছেন, দিলীপবাবুর তরফে ফেসবুক পোস্টগুলি কে লেখেন? এ বার থেকে ফেসবুকে কিছু লেখার আগে তার বয়ান ভাল করে খতিয়ে দেখার নির্দেশও দিয়েছেন ওই নেতা।

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

রোশনী মুখোপাধ্যায়
শেষ আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০১৭ ০৩:৫০
Share: Save:

দার্জিলিঙের সংঘর্ষে পুলিশ কর্মী অমিতাভ মালিকের হত্যাকাণ্ডে এখন কাঠগড়ায় বিমল গুরুঙ্গ। তার পরেও গুরুঙ্গের পক্ষ নিয়ে ফেসবুকে লেখায় বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের উপর বেজায় চটেছেন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ।

সোমবার সাত সকালেই সে কথা রাজ্যের এক নেতাকে ফোন করে জানিয়েও দিয়েছেন কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে রাজ্যে দলের এক পর্যবেক্ষক। বিজেপি সূত্রের খবর, বিজেপির ওই কেন্দ্রীয় নেতা জানতে চেয়েছেন, দিলীপবাবুর তরফে ফেসবুক পোস্টগুলি কে লেখেন? এ বার থেকে ফেসবুকে কিছু লেখার আগে তার বয়ান ভাল করে খতিয়ে দেখার নির্দেশও দিয়েছেন ওই নেতা। তিনি বলে দিয়েছেন, এগুলি সবই সর্বভারতীয় সভাপতির ফরমান।

আরও পড়ুন: মুকুলকে দলেই নিচ্ছে বিজেপি

দিলীপবাবু রবিবার ফেসবুকে লিখেছিলেন, ‘বিমল গুরুঙ্গ এবং তাঁর গোষ্ঠীর উপর রাজ্য সরকার অপ্রয়োজনীয় ভাবে যে হিংসা নামিয়ে এনেছে, আমরা তা সমর্থন করি না। তিনি যখন তৃণমূলের সঙ্গে ছিলেন, তখন তিনি ভাল ছিলেন! আর এখন যে হেতু তিনি বিজেপি-র সঙ্গে আছেন, তাই তাঁকে সন্ত্রাসবাদী এবং সমাজবিরোধী বলে মনে করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।’

অমিতাভর মৃত্যুর পরে শনিবারও তিনি এই কথাগুলিই বলেছিলেন। কিন্তু ফেসবুকে লেখার পরই দিলীপবাবুর ওই সব মন্তব্য অমিতের নজরে আসে। তারই জেরে এ দিন সকালে দিল্লির ফোন পান রাজ্য বিজেপি-র ওই নেতা।

দলীয় সূত্রের খবর, অমিতাভর মৃত্যুর সঙ্গে গুরুঙ্গের নাম জড়ানোর পর আইনের চোখে তিনি নির্দোষ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত তাঁর পাশে দাঁড়ালে জনমানসে বিজেপি-র ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ হতে পারে বলে মনে করছেন অমিত। তবে এ দিন সন্ধ্যা পর্যন্ত ফেসবুক থেকে দিলীপবাবুর ওই পোস্ট মোছা হয়নি। এ নিয়ে প্রশ্নের জবাবে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘আমাদের এক রাজ্য নেতার কাছে ফোন এসেছিল। নির্দিষ্ট ভাবে বিমল গুরুঙ্গ সংক্রান্ত আমার পোস্ট নিয়ে কিছু বলা হয়েছে বলে আমার জানা নেই। বলা হয়েছে, ফেসবুক পোস্টে ভুল-ত্রুটি থাকছে। এ বার থেকে যেন সে বিষয়ে আমরা আরও সতর্ক হই।’’ তবে এ দিন ধর্মতলায় দলীয় কর্মসূচিতে দিলীপবাবু বক্তৃতায় তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বলেন, ‘‘পাহাড়ে কোনও দল বা নেতার সঙ্গে আমরা নেই।’’

পাহাড় থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনী সরানোর সিদ্ধান্তকেও এ দিন সমর্থন করেছেন দিলীপবাবু। আরও এক ধাপ এগিয়ে তিনি বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর চক্রান্তে সাহায্য করার জন্য কেন্দ্রীয় বাহিনী থাকবে না। আমি কেন্দ্রকে অনুরোধ করব, রাজ্যে যে কেন্দ্রীয় বাহিনী আছে, তা তুলে নেওয়া হোক। তা ছাড়া, পাহাড়বাসীর অভিযোগ, ওখানে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে রাজ্য সরকার অত্যাচার চালাতে বাধ্য করছে। আর দায় পড়ছে কেন্দ্রের ঘা়ড়ে। কেন কেন্দ্র ওই দায় নেবে?’’ দিলীপবাবুর আরও দাবি, ‘‘আর কেন্দ্রীয় বাহিনী দিয়েই যদি চালাতে হয়, তা হলে এ রাজ্যে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করার অনুরোধ করব কেন্দ্রকে।’’ উপযুক্ত প্রশিক্ষণ, বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট, হেলমেট, কোবরা বাহিনী ছাড়া কেন স্বল্প অভিজ্ঞতাসম্পন্ন অফিসার অমিতাভকে গুরুঙ্গের মোকাবিলায় পাঠানো হয়েছিল, সে প্রশ্নও এ দিন তুলেছেন দিলীপবাবু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE