তাঁর রাধা আর কোনও দিন ক্যানভাসে ধরা দেবে না। মঙ্গলবার ভোরে কলকাতার এক হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেছেন শিল্পী সুহাস রায়। তাঁর পুত্রবধূ স্বাতী রায় জানান, পঞ্চমীর দিন, ৬ অক্টোবর অসুস্থ অবস্থায় নার্সিংহোমে ভর্তি করা হয় তাঁকে। স্ট্রেচারে নিয়ে যেতে যেতেই হৃদ্রোগে আক্রান্ত হন প্রবীণ শিল্পী। ভেন্টিলেটরেও সেরে উঠছিলেন ক্রমে। কিন্তু শেষরক্ষা হল না। মঙ্গলবার, মৃত্যুর সময়ে তাঁর বয়স হয়েছিল ৮০ বছর। রেখে গিয়েছেন স্ত্রী, পুত্রবধূ ও পৌত্রকে। ১৯৩৬ সালে ঢাকা শহরে জন্মানো শিল্পীর শিল্পদীক্ষা শুরু এ শহরেরই ইন্ডিয়ান আর্ট কলেজে। অতঃপর শান্তিনিকেতনে নন্দলাল বসু ও রামকিঙ্কর বেজের ছাত্র। সেখান থেকে ফরাসি সরকারের বৃত্তি নিয়ে প্যারিস। গ্রাফিক ডিজাইনিং-এ সিদ্ধি ছিল তাঁর। একোল নর্মাল-এ গ্রাফিক্সের প্রধান শিক্ষক তিনি। কিন্তু বিদেশ, গ্রাফিক্স সব ছেড়ে সুহাস রায় ফিরে এলেন তাঁর পুরনো স্কুলে। সাধের শান্তিনিকেতনে। চিত্রকলার শিক্ষক হিসেবে সেখানেই কাটিয়ে দিলেন বাকি জীবন। গ্রাফিক্স ছেড়ে তখন তিনি অ্যাক্রিলিকে, ক্যানভাসের রং-তুলির জগতে। সেই রং-তুলিতেই ধরা দিয়েছে তাঁর ‘রাধা’। এই রাধা কৃষ্ণের প্রেমিকা নয়, পদাবলির নায়িকা নয়। ঠিক যেন আমাদের চেনা কোনও মেয়ে। কখনও তার জলজ নগ্নিকা শরীরের আশপাশে বেগুনি ফুল, কখনও মাথায় সিঁদুর, কখনও সে নিরাভরণ। এই অচেনা রাধাকে কোথায় পান তিনি? ‘মনুষ্যত্বের অন্ধকার ও নিষ্ঠুরতাই আমাকে অচেনার খোঁজে নামিয়েছে,’ বলতেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy