পঞ্চায়েতের নির্বাচনী সংঘর্ষ দমনে পুলিশ যে ‘সক্রিয়’ ভূমিকা নিচ্ছে না অবশেষে তা মেনে নিলেন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার। দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য পুলিশকে নির্দেশও দিলেন।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে বিরোধীরা মনোনয়ন দিতে পারেননি, এই অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা চলছে। নির্বাচন প্রক্রিয়ার উপরে স্থগিতাদেশও রয়েছে। এই অবস্থায় নির্বাচন কমিশনারের মঙ্গলবারের এই নির্দেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। সব জেলার পুলিশ সুপার ও পুলিশ কমিশনারদের কাছে পাঠানো নির্দেশে নির্বাচন কমিশনার অমরেন্দ্র কুমার সিংহ বলেছেন, ‘বিভিন্ন জেলায় সংঘর্ষের ঘটনা নজরে এসেছে। এখনই দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিতে হবে। নইলে তা আরও বাড়বে।’
পঞ্চায়েত ভোটের নির্ঘণ্ট প্রকাশের পর থেকে সর্বত্র সংঘর্ষে আক্রান্ত হয়েছেন প্রার্থীরা। রক্তাক্ত হয়েছেন প্রাক্তন সাংসদ একাধিক বিরোধী নেতা। লাঞ্ছিত হয়েছেন মহিলারাও। জেলাশাসকের অফিস চত্ত্বরেও আক্রান্ত হয়েছেন রাজনৈতিক দলের পদাধিকারী। অভিযোগ কোথাও কোথাও পুলিশের উপস্থিতিতেই শাসকদলের কর্মীরা বিরোধীদের উপর চড়াও হয়েছেন। কিন্তু একাধিকবার এমন অভিযোগ পেয়েও আলাদা করে পুলিশ কমিশনার বা পুলিশ সুপারদের লিখিত কোনও নির্দেশ পাঠাননি নির্বাচন কমিশনার। কিছুদিন আগে নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের সঙ্গে বৈঠকে তিনি মৌখিকভাবে অফিসারদের ‘নৈরাজ্য’ যাতে না হয় সে ব্যাপারে সতর্ক করলেও লিখিত কিছু বলেননি।
নবান্নের হিসাবে পঞ্চায়েত নির্বাচনে অশান্তির ঘটনা এখনও পর্যন্ত মাত্র সাতটি। তবে নির্বাচন কমিশনারের এ দিনের নির্দেশ রাজ্য প্রশাসনের ওই হিসাবের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ কি না সে প্রশ্ন তুলছেন অনেকেই। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘পুলিশের সামনেই মারধর চলছে। এখন নির্দেশ দিয়ে কী হবে? ঘটনা সাতটি নয়, একশোর বেশি।’’ কংগ্রেসনেতা মনোজ চক্রবর্তীও বলেন, ‘‘নির্দেশই সার। পুলিশ তা কার্যকর করার সাহস দেখাতে পারবে না।’’
তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য সব নস্যাৎ করে বলেন, ‘‘যেখানে প্রয়োজন, সেখানেই পুলিশ কঠোর ব্যবস্থা নিয়েছে।’’ তবে পরিস্থিতি যে তৃণমূলের পক্ষেও খুব স্বস্তিকর নয় তার প্রমাণ মিলেছে দলের আইনজীবী নেতা কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়। এ দিন হাইকোর্টে তিনি বলেন, ‘‘এক একটি আসনে তৃণমূলের চারজন প্রার্থী লড়ছেন।’’ পাশাপাশি তিনি এ কথা বলেছেন, ‘‘২০১৩ সালে বিজেপি ১১ হাজারের বেশি প্রার্থী দিয়েছিল। এবার দিয়েছে ৩৮ হাজার।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy