Advertisement
২১ মে ২০২৪

তৃণমূলের ‘প্রভুত্বে’ সুর বদল পরিবর্তনপন্থীদের

এখন তাঁদের একাংশই শাসক তৃণমূলের ‘আধিপত্যবাদ ও প্রভুত্বে’র বিরুদ্ধে সরব হলেন।

সাংবাদিকদের মুখোমুখি বিশিষ্টজনেরা। বুধবার প্রেস ক্লাবে। নিজস্ব চিত্র

সাংবাদিকদের মুখোমুখি বিশিষ্টজনেরা। বুধবার প্রেস ক্লাবে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ১২ এপ্রিল ২০১৮ ০৪:২৪
Share: Save:

সিপিএমের অপশাসনের প্রতিবাদ করে পরিবর্তনের ডাক দিয়েছিলেন তাঁরা। এখন তাঁদের একাংশই শাসক তৃণমূলের ‘আধিপত্যবাদ ও প্রভুত্বে’র বিরুদ্ধে সরব হলেন।

এ বার পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্বে সন্ত্রাসের প্রেক্ষিতে সরাসরি শাসক দলের বিরুদ্ধে মুখ খুললেন নাট্যব্যক্তিত্ব বিভাস চক্রবর্তী, গায়ক প্রতুল মুখোপাধ্যায় এবং পল্লব কীর্তনীয়া, রাজ্যের প্রাক্তন অ্যাডভোকেট জেনারেল বিমল চট্টোপাধ্যায় প্রমুখ। যাঁরা প্রত্যেকেই ‘পরিবর্তনপন্থী’ হয়ে এই তৃণমূলের হয়েই পথে নেমেছিলেন বাম আমলে। পরিবর্তনপন্থীদের এই সুর বদলে প্রবল উষ্মা প্রকাশ করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

বুধবার প্রেস ক্লাবে বিভাসবাবুদের বক্তব্যের প্রেক্ষিতে মমতা সন্ধ্যায় নবান্ন থেকে বেরনোর মুখে বলেন, ‘‘এসইউসি-র তরুণ মণ্ডলের গাড়ি করে তাঁরা গিয়েছেন। এসইউসি নিয়ে গিয়েছে। ভুল বুঝিয়ে নিয়ে গিয়েছে। তাঁদের অসম্মান করি না। তাঁরা তাঁদের কথা বলতে পারেন।’’ বিদ্বজ্জনদের বক্তব্য ঠিক নয় দাবি করে তৃণমূলের মহাসচিব বলেন, ‘‘ওঁদের কাছে সঠিক তথ্য নেই। ওঁদের তথ্য-সহ বোঝাব।’’

২০০৭-এর ১০ নভেম্বর নন্দীগ্রামে ‘সূর্যোদয়’-এর চার দিন পর এসইউসি প্রভাবিত শিল্পী-সাংস্কৃতিক কর্মী-বুদ্ধিজীবী মঞ্চের ডাকেই কলকাতার রাজপথে সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিছিলে হেঁটেছিলেন বিদ্বজ্জনেরা। সেই ম়ঞ্চের তরফেই এ দিন কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক সম্মেলন করে বিভাসবাবুরা বোঝালেন, বাম আমলের পরিবর্তনের সময়ে তৃণমূলের পাশে ছিলেন বলে আজীবন সেখানেই থেকে যাবেন, এমন বাধ্যবাধকতা তাঁদের নেই। বিভাসবাবুর বক্তব্য, ‘‘আমরা কোনও রাজনৈতিক কর্মী নই।’’ তাঁর প্রশ্ন, ‘‘একটা গণতান্ত্রিক নির্বাচনে এক জনের রক্তও কেন ঝরবে? এক জনও বা কেন মনোনয়ন পত্র দাখিল করতে বঞ্চিত হবেন?’’

প্রতুলবাবু স্মরণ করালেন, ‘‘আধিপত্যবাদ চালিয়ে প্রভুত্ব করে বেশি দিন শাসন করা যায় না, এটা যেন শাসক দল মনে রাখে। আমরা যারা তথাকথিত নাগরিক সমাজ এই আধিপত্যের বিরুদ্ধে এগিয়ে এসেছিলাম। আজ আবার আধিপত্যের ডঙ্কা বাজছে। আমাদের উচিত আবার এগিয়ে আসা।’’

২০১৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটে তৎকালীন রাজ্য নির্বাচন কমিশনার মীরা পাণ্ডের সঙ্গে মমতা সরকারের সংঘাত আদালতে গড়িয়েছিল। তখন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল ছিলেন বিমলবাবু। তিনিও এ দিন ওই মঞ্চেই বলেন, ‘‘আমি যখন রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল ছিলাম, তখন কিছু মামলা আমাকে লড়তে হয়েছিল। আমি আমার মতো মামলা লড়লেও আমার বিবেক সেখানে উপস্থিত ছিল না।’’

আরও পড়ুন: বাড়তি দায়িত্ব সামলাবে কে, উঠছে প্রশ্ন

‘পরিবর্তনপন্থী’দের মুখে শাসক-বিরোধী বক্তব্য শুনে বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের কটাক্ষ, ‘‘দেরিতে হলেও ওঁদের উপলব্ধি হয়েছে। মমতাকে সমর্থন করে যে ভুল করেছিলেন, তার জন্য সমাজের কাছে ক্ষমা চেয়ে আবার পরিবর্তনের জন্য পথে নামুন।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE