গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
পিছিয়ে যাচ্ছে পঞ্চায়েত নির্বাচন। নতুন করে ভোট নির্ঘণ্ট তৈরি করতে হবে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে। শুক্রবার এমন নির্দেশই দিয়েছে কলকাতা হাইকোর্ট।
হাইকোর্টে বিচারপতি সুব্রত তালুকদারের সিঙ্গল বেঞ্চে এ দিন বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে কমিশন। পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার মেয়াদ এক দিন বাড়িয়ে ফের তা প্রত্যাহার করে কমিশন যে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল, ১০ এপ্রিলের সেই নোটিস খারিজ করে দিয়েছে আদালত। বিচারপতি তাঁর ৩৫ পাতার রায়ে নির্দেশ দিয়েছেন, নতুন করে নির্বাচন প্রক্রিয়ার দিনক্ষণ ঠিক করতে হবে। নয়া দিনক্ষণ স্থির হওয়ার পর ফের নির্বাচনী প্রক্রিয়া শুরু করা যাবে।
ফলে, গত ২ এপ্রিল রাজ্য নির্বাচন কমিশন নোটিস জারি করে ভোটের যে দিনক্ষণ ঘোষণা করেছিল, তা কার্যত পিছিয়েই গেল। ওই নির্দেশিকা অনুযায়ী রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোট হওয়ার কথা ছিল ১, ৩ এবং ৫ মে। কিন্তু, আদালতের এ দিনের নির্দেশে তা আর কোনও ভাবেই সম্ভব নয়। পাশপাশি, নতুন করে মনোনয়নপত্র জমাও নিতে হবে। নতুন দিনক্ষণ কবে ঘোষণা করা হবে, তা এখনও জানায়নি কমিশন। কমিশন সূত্রে জানা গিয়েছে, আদালতের রায়ের কপি হাতে পাওয়ার পর তা খতিয়ে দেখে নয়া দিনক্ষণ ঠিক করা হবে।
আরও খবর
এর আগে আদালতে যা ঘটেছে
তবে, আদালতের রায়ে খুশি বিরোধীরা। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী এ দিনের রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন। তাঁর কথায়, ‘‘ঐতিহাসিক রায়। বিচার ব্যবস্থার উপর আস্থা ছিল এবং আমাদের নৈতিক জয় হয়েছে। এই নির্দেশ থেকে এটা পরিষ্কার, আদালতও বুঝতে পেরেছে, এ রাজ্যে বিরোধীরা কী ভাবে সন্ত্রাসের শিকার!’’
বিজেপিও এই রায়কে স্বাগত জানিয়েছে। বিজেপির তরফে হাইকোর্টে এই মামলা দায়ের করেছিলেন প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘এই রায়ে পশ্চিমবঙ্গের গণতন্ত্রপ্রেমী মানুষের জয় হল।’’
দেখুন ভিডিও
আরও খবর
পঞ্চায়েত জটে উন্নয়ন থমকে গিয়েছে,উষ্মা প্রকাশ করলেন মমতা
তবে, শাসক দল তৃণমূল এই রায়ে বিরোধীদের কোনও জয় দেখতে পাচ্ছে না। হাইকোর্টের রায়কে স্বাগত জানিয়েছেন তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘গরমে, রমজান মাসে মানুষের যাতে কষ্ট না হয়, সেটা দেখতে হবে।’’ তৃণমূলের তরফে এই মামলার শুনানিতে অংশ নিয়েছিলেন আইনজীবী কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়। এ দিন তিনি বলেন, ‘‘বিরোধীরা চেয়েছিল, নির্বাচন বাতিল করতে। কিন্তু, তারা সফল হয়নি। আদালত এ দিন শুধু কমিশনের ১০ তারিখের নির্দেশ খারিজ করেছে।’’ পাশাপাশি তিনি জানিয়েছেন, এই রায়ের প্রেক্ষিতে তাঁরা আর ডিভিশন বেঞ্চে যাবেন না।
পঞ্চায়েত নির্বাচনে মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ দিন ছিল ৯ এপ্রিল। কিন্তু, শাসকদলের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসের অভিযোগ তুলে বিরোধীরা দাবি তুলতে থাকে তাদের মনোনয়ন জমা দিতে দেওয়া হচ্ছে না। এর পর ৯ তারিখ রাতেই নির্বাচন কমিশন নোটিস জারি করে মনোনয়ন জমা দেওয়ার জন্য এক দিন মেয়াদ বাড়ায়। কিন্তু পর দিন সকালেই সেই নোটিস প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়। এর পরেই আদালতে দ্বারস্থ হয় বিরোধীরা। ১২ তারিখ হাইকোর্টে বিচারপতি তালুকদারের বেঞ্চ গোটা নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় স্থগিতাদেশ জারি করে। তার পর একাধিক দিন শুনানির পর আজ রায় ঘোষণা করলেন বিচারপতি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy