হাওড়ার উলুবেড়িয়ার এক গৃহবধূর অস্বাভাবিক মৃত্যুর পরে কেটে গিয়েছে সাত-সাতটি বছর। সেই ঘটনায় বৃহস্পতিবার রাজ্যের কাছে মেডিকো-লিগ্যাল রিপোর্ট তলব করল কলকাতা হাইকোর্ট। সেই সঙ্গেই হাইকোর্টের বিচারপতি জানিয়ে দিয়েছেন, ওই অস্বাভাবিক মৃত্যু নিয়ে নিম্ন আদালতের মামলায় আজ, শুক্রবার যে-চার্জ গঠন করার কথা ছিল, তা-ও মুলতুবি থাকবে।
অপমৃত্যুর ক্ষেত্রে প্রথম বিচার্য, মৃতদেহে কোনও আঘাত ছিল কি না। থাকলে সেই আঘাতের স্বরূপ ও সম্ভাব্য কারণ ব্যাখ্যা করতে হয় মেডিকো লিগ্যাল রিপোর্টে। কিন্তু ওই বধূর ক্ষেত্রে সেই রিপোর্ট পেশ করা হয়নি। পুলিশ জানায়, ২০১০ সালের ১১ অক্টোবর মিতা মণ্ডল (২২) নামে ওই বধূর অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়। তাঁর দাদা খোকন দাস সে-দিনই উলুবেড়িয়া থানায় এফআইআর দায়ের করে জানান, মিতাকে খুন করা হয়েছে। তদন্ত শুরু করে সিআইডি। তদন্তকারীরা জানান, মিতার গলায় ফাঁস দেওয়া ছিল। গ্রেফতার করা হয় মিতার স্বামী রানা মণ্ডলকে। পরে তিনি জামিনে ছাড়া পান। পণঘটিত বধূ-মৃত্যুর কথা জানিয়ে পুলিশ চার্জশিট জমা দেয় নিম্ন আদালতে।
কিন্তু সিআইডি-র তদন্তে সন্তুষ্ট হতে না-পেরে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তোলেন মিতার দাদা। বোনের অস্বাভাবিক মৃত্যুর ঘটনার সিবিআই তদন্ত চেয়ে হাইকোর্টের বিচারপতি দেবাংশু বসাকের আদালতে মামলা দায়ের করেন তিনি। এ দিন সেই মামলার শুনানিতে খোকনবাবুর আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় ও সৌরভ মণ্ডল অভিযোগ করেন, মৃতার গলায় ফাঁসের চিহ্ন ছাড়াও ময়না-তদন্তের রিপোর্টে মৃতদেহে একাধিক আঘাতের চিহ্নের উল্লেখ রয়েছে। অথচ সেই সব আঘাতের ব্যাখ্যা কী, তার মেডিকো-লিগ্যাল রিপোর্ট চার্জশিটে দেননি তদন্তকারীরা। সেই জন্যই মৃতার বাপের বাড়ির সন্দেহ, এটি নিছক পণঘটিত বধূ-মৃত্যুর ঘটনা নয়। এটি পরিকল্পিত খুন। নিম্ন আদালতে চার্জ গঠনের দিন স্থিরও হয়ে গিয়েছে।
অভিযোগ শুনে বিচারপতি বসাক সরকারি কৌঁসুলি পান্তু দেবরায়কে নির্দেশ দেন, দু’সপ্তাহের মধ্যে মেডিকো-লিগ্যাল রিপোর্ট আদালতে পেশ করতে হবে। একই সঙ্গে তিনি জানিয়ে দেন, তাঁর আদালতে চলা মামলার নিষ্পত্তির আগে পর্যন্ত নিম্ন আদালতে চার্জ গঠন মুলতুবি থাকবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy