জুহি চৌধুরী
জলপাইগুড়ি ও কলকাতা: মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ভারত-নেপাল সীমান্তের খড়িবাড়ি থানা এলাকা থেকে জুহি চৌধুরীকে গ্রেফতার করল সিআইডি। যদিও তার আগেই এই বিজেপি নেত্রীর সূত্র ধরে রূপা গঙ্গোপাধ্যায় এবং কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে শিশু পাচার কাণ্ডের সঙ্গে জড়িয়ে দিলেন এই মামলায় অন্যতম প্রধান অভিযুক্ত চন্দনা চক্রবর্তী।
চন্দনার এই দায় চাপানো বিবৃতি শোনার পরে ক্ষোভে ফেটে পড়ে রূপা বললেন, ‘‘এক জন অভিযুক্তের কথার উত্তর দেওয়ার জন্য কি আমি বসে আছি? আগে ভাল করে ওকে শেখান!’’ সিআইডি-র বিরুদ্ধে মানহানির মামলা করার হুঁশিয়ারিও দিয়েছেন রূপা। আর চন্দনার অভিযোগের জবাবে কৈলাসের প্রতিক্রিয়া, ‘‘সবই মুখ্যমন্ত্রীর খেলা! সিবিআই তদন্ত হলে সব স্পষ্ট হবে।’’
সিআইডি সূত্রের দাবি, শিশু পাচার-কাণ্ডে ধৃত চন্দনা একটি লম্বা টেবিলের এক পাশে বসে জবানবন্দি দিয়েছেন। আর গোয়েন্দারা তা ক্যামেরায় রেকর্ড করেছেন। চন্দনার সামনে টেবিলে একটি ছাপা কাগজ ছিল। কিন্তু তাঁর চোখ ছিল ক্যামেরার দিকে। শান্ত ভাবে চন্দনা পরপর যা বলে গিয়েছেন, তা বিজেপি-র মহিলা মোর্চার সভানেত্রী তথা রাজ্যসভা সাংসদ রূপা, দলের কেন্দ্রীয় পর্যবেক্ষক কৈলাস এবং ওই মোর্চার সাধারণ সম্পাদক জুহি চৌধুরীর পক্ষে স্বস্তিকর নয়। দলীয় সূত্রে খবর, এই পরিস্থিতিতে দলের কথাতেই শেষ পর্যন্ত জুহি ধরা দিয়েছেন।
চন্দনা মঙ্গলবার শিলিগুড়িতে সাংবাদিকদের সামনে দাবি করেন, তিনি নিরপরাধ। তাঁকে বলির পাঁঠা করা হচ্ছে। তিনি তদন্তে সহযোগিতা করবেন। চন্দনা বলেন, ‘‘আমরা জুহির কাছে সংস্থার স্পেশ্যাল অ্যাডপশন এজেন্সির ব্যাপারে সাহায্য চাইতে গিয়েছিলাম। উনি আমাদের ঝামেলাগুলি মিটিয়ে দেবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। জুহি এটার সঙ্গে তিন বছর ধরে যুক্ত। অন্যায় বা ভুল করে থাকলে ওঁরাই করেছেন৷’’
তবে রূপা বা কৈলাসের নাম নিলেও তাঁর সঙ্গে জুহি ছাড়া আর কারও কথা হয়নি বলেও এ দিন দাবি করেন চন্দনা৷ তাঁর কথায়, ‘‘আমার সঙ্গে জুহি ছাড়া আর কারও কথা হয়নি। জুহির হয়তো রূপা গঙ্গোপাধ্যায় ও কৈলাস বিজয়বর্গীয়র সঙ্গে কথা হয়েছে। আমি পাশের ঘরে ছিলাম।’’ এর পরেই সাংবাদিকদের প্রতি চন্দনার পরামর্শ, ‘‘এটা রাজনৈতিক ভাবে দেখুন৷’’
চন্দনার বক্তব্যে জুহি, রূপা এবং কৈলাসের নাম আসায় খুশি তৃণমূল। দলের জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী বলেন, ‘‘আমরা চাই, রূপা গঙ্গোপাধ্যায় এবং কৈলাস বিজয়বর্গীয়কে নিয়েও তদন্ত হোক।’’ বিজেপি-র জেলা সভাপতি দীপেন প্রামাণিকের অবশ্য পাল্টা বক্তব্য, ‘‘চন্দনার দাবি, পাশের ঘরে গিয়ে জুহি রূপা গঙ্গোপাধ্যায় ও কৈলাস বিজয়বর্গীয়ের সঙ্গে কথা বলেছে বলেই সে ফেঁসে গিয়েছে। অথচ, ওর মুখে শিশু বিক্রি নিয়ে কোনও কথাই নেই! এর থেকে হাস্যকর অভিযোগ আর কী হতে পারে?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy