কেন্দ্র-রাজ্য রাজনৈতিক সংঘাতের ছায়া পড়তে চলেছে আসন্ন প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানেও। শুক্রবার পার্ক স্ট্রিটে বড়দিনের উৎসবের উদ্বোধনে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজে পশ্চিমবঙ্গকে বাদ দেওয়া হচ্ছে। এটা বাংলার অপমান।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘আমরা দু’বছর প্রজাতন্ত্র দিবসের প্যারেডে প্রথম পুরস্কার পেয়েছি। এ বার আমাদের বিষয় ছিল ‘ঐক্যই সম্প্রীতি’। বোধ হয় সেই জন্যই বাদ দিয়েছে। কিন্তু আমাদের বাদ দেওয়া হল কেন, তার কারণ দেখানো উচিত। বলতে বাধ্য হচ্ছি, এটা বাংলার অপমান।’’
দিল্লিতে প্রজাতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে পশ্চিমবঙ্গের ট্যাবলো ঠাঁই পাবে কি না, কেন্দ্রীয় সরকার এখনও সেই ব্যাপারে কিছু না-জানানোয় নবান্ন যে বেজায় ক্ষুব্ধ, বিকেলে মুখ্যমন্ত্রীর অনুষ্ঠানের আগেই তা জানান রাজ্যের আইন প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘‘আমাদের কাছে খবর আছে, বিভিন্ন রাজ্যের সঙ্গে ট্যাবলো নিয়ে কথাবার্তা বলেছে কেন্দ্র। কোনও কোনও রাজ্যকে সবুজ সঙ্কেত দেওয়া হয়েছে। অথচ আমাদের সঙ্গে ট্যাবলো নিয়ে এখনও কথাই বলেনি দিল্লি!’’ কেন্দ্রের কাছে রাজ্য এর প্রতিবাদ জানাবে বলে জানান চন্দ্রিমা।
আরও পড়ুন: বড়দিন হোক জাতীয় ছুটি, দাবি মুখ্যমন্ত্রী মমতার
প্রতি বছর ২৬ জানুয়ারি, প্রজাতন্ত্র দিবসে দিল্লির রাজপথে কুচকাওয়াজে ট্যাবলো পাঠায় বিভিন্ন রাজ্য। সাধারণত কেন্দ্রের বিশেষজ্ঞ কমিটি রাজ্যগুলির ট্যাবলোর ‘থিম’ বিচার-বিবেচনা করে পরামর্শ দেয় কেন্দ্রকে। অনুষ্ঠানে কোন রাজ্যের ট্যাবলো থাকবে আর কাদের থাকবে না, সেই পরামর্শ অনুযায়ী সেটা চূড়ান্ত করে কেন্দ্র। চন্দ্রিমার কথায়, ‘‘এ বার আমাদের থিম হচ্ছে ‘ঐক্যই সম্প্রীতি’। সেটা কেন্দ্রের বিশেষজ্ঞ কমিটির কাছে তুলে ধরা হয়েছে। কমিটির মনোভাব ইতিবাচক বলে মনে হয়েছে আমাদের।’’
কিন্তু ওই পর্যন্তই! রাজ্য সরকারের বক্তব্য, অক্টোবরে থিম দেখার পরে কোনও এক অজ্ঞাত কারণে দিল্লি এখনও এই ব্যাপারে যোগাযোগ করেনি। চন্দ্রিমার অভিযোগ, সংবিধানের মূল মন্ত্রই হচ্ছে একতা আর সম্প্রীতি। বিবিধের মাঝে মিলন। অথচ তাকেই দূরে ঠেলে দিচ্ছে কেন্দ্র!
নবান্নের বক্তব্য, এ বারেই প্রথম নয়। ২০১৪ সালে ‘ছৌ নাচ’ থিম করে সেরার মর্যাদা পেয়েছিল রাজ্য। কিন্তু পরের বছর ‘কন্যাশ্রী’-কে থিম করা হলেও তা স্থান পায়নি কুচকাওয়াজে। আবার ২০১৬-য় ‘বাউল’ থিম করে সেরার শিরোপা পায় রাজ্য। ২০১৭-য় ‘দুর্গোৎসব’ থিম করে অনুষ্ঠানে জায়গা করে নিয়েছে রাজ্য। কিন্তু এ বার আর উচ্চবাচ্য করছে না কেন্দ্র। ‘‘এটা দিল্লির প্রতিহিংসাপরায়ণ মনোভাব,’’ বলছেন চন্দ্রিমা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy