Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

টয় ট্রেনের ধাক্কা পাহাড়ে, জখম ৪

কিছু ক্ষণ ধরেই বৃষ্টি হচ্ছিল। তার মধ্যেই ভেজা লাইন ধরে পাহাড়ি পথে দার্জিলিং থেকে নামছিল টয় ট্রেন। কার্শিয়াং ছাড়ার পরে মহানদী এলাকায় বাঁক ঘুরতে ব্রেক কষেন চালক। কিন্তু তাতে গতি তেমন কমেনি। তখন আর এক বার সজোরে ব্রেক কষেন চালক।

দার্জিলিং থেকে নামার পথে বেলাইন টয়ট্রেন। মঙ্গলবার রবিন রাইয়ের তোলা ছবি।

দার্জিলিং থেকে নামার পথে বেলাইন টয়ট্রেন। মঙ্গলবার রবিন রাইয়ের তোলা ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০১৭ ০১:৫২
Share: Save:

কিছু ক্ষণ ধরেই বৃষ্টি হচ্ছিল। তার মধ্যেই ভেজা লাইন ধরে পাহাড়ি পথে দার্জিলিং থেকে নামছিল টয় ট্রেন। কার্শিয়াং ছাড়ার পরে মহানদী এলাকায় বাঁক ঘুরতে ব্রেক কষেন চালক। কিন্তু তাতে গতি তেমন কমেনি। তখন আর এক বার সজোরে ব্রেক কষেন চালক। সঙ্গে সঙ্গে চাকা লাইন থেকে ছিটকে বেরিয়ে যায়। ইঞ্জিনটি গিয়ে ধাক্কা দেয় পাহাড়ের গায়ে। পিছনের কামরার চাকাও তত ক্ষণে লাইনের বাইরে। ডান দিকে কাত হয়ে ঝুলছে সেটি। পুরো ঘটনাটাই খাদের অন্য দিকে হওয়ায় হাঁফ ছেড়ে বেঁচেছেন যাত্রীরা।

দার্জিলিং থেকে শিলিগুড়ি আসার পথে টয় ট্রেনের এই দুর্ঘটনায় জখম হয়েছেন ৪ যাত্রী। কিন্তু আতঙ্ক অনেক গভীরে ছড়িয়ে পড়েছে। এই ট্রেনের রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে অনেকবার প্রশ্ন উঠেছে। এ দিনের ঘটনায় আবারও সেই কথাই তুলেছেন যাত্রীরা। এক যাত্রী বলেন, ‘‘হঠাৎ বিকট শব্দের পরেই কামরাটি কাত হয়ে যায়। খাদের দিকে হলে হাজার ফুট গড়িয়ে পড়তাম।’’ দুর্ঘটনার খবর ছড়িয়ে পড়তে সক্রিয় হয়ে ওঠে জেলা প্রশাসন। দার্জিলিঙের জেলাশাসক অনুরাগ শ্রীবাস্তের নির্দেশে প্রশাসনের একটি দল ঘটনাস্থলে পৌঁছয়। পর্যটন মন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘মূলত পর্যটকরাই টয় ট্রেনে বেশি চড়েন। পর্যটকদের কাছে যাতে ভুল বার্তা না যায়, তা নিয়ে রেলকে সক্রিয় হতে হবে।’’

ট্রেনটি সোমবার এনজেপি থেকে দার্জিলিং গিয়েছিল। ইঞ্জিনের ব্রেক যথাযথ ভাবে কাজ করছিল না বলে তখনই রেল কর্তৃপক্ষের নজরে আনা হয়েছিল। সূত্রের খবর, ইঞ্জিনটির এক দফা মেরামতিও করা হয়েছে। এ দিন কার্শিয়াং ছাড়ার পরেই ইঞ্জিনের ব্রেকে ফের গোলমাল শুরু হয়। বৃষ্টি ভেজা লাইনে উতরাই পথে ট্রেনের গতিও কিছুটা বেড়ে গিয়েছিল। শেষ পর্যন্ত এই দুর্ঘটনা।

আহতদের কার্শিয়াং হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা করানো হয়েছে। জখম হয়েছে ইঞ্জিনের চালকও। রেলের তরফে দাবি, চালক পরে সুস্থ হয়েছেন।

এখন সপ্তাহে তিন দিন নিউ জলপাইগুড়ি (এনজেপি) থেকে দার্জিলিং টয়ট্রেন চলাচল করে। যাত্রীদের দাবি, এ দিন নির্ধারিত সময়সূচিতেই ট্রেন চলছিল। জানালা দিয়ে ক্যামেরা-মোবাইল বের করে বৃষ্টি-কুয়াশা ভেজা পাহাড়ি এলাকার ছবিও তুলছিলেন অনেকে। হঠাৎই বিকট শব্দের সঙ্গে তীব্র ঝাঁকুনিতে চমকে ওঠেন যাত্রীরা। কারও মাথা জানলায় ঠুকে যায়, কেউ বা উপুর হয়ে মেঝেতে পড়ে যান। এক মহিলা পড়ে কিছুটা ছেঁচড়ে যান। তাঁর মাথায় চোট লাগে। কারও হাত মচকে গিয়েছে, কারও বা কপাল ছড়ে গিয়ে রক্ত ঝড়েছে।

উত্তর পূর্ব সীমান্ত রেলের ডিআরএম উমাশঙ্কর সিংহ যাদব জানিয়েছেন, ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে। রক্ষণাবেক্ষণ নিয়ে কী ত্রুটি ছিল তা-ও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। রেল কর্তৃপক্ষের প্রাথমিক দাবি, লাইন ভেজা থাকার কারণেই দুর্ঘটনা ঘটেছে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Siliguri Toy Train
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE