বছরখানেক আগের বিধানসভা ভোটের ফল উল্টে দক্ষিণ কাঁথির উপনির্বাচনে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে বিজেপি। সে বার বামেরা যা ভোট পেয়েছিল, তার কাছাকাছি হারে ভোট এ বার পেয়েছে গেরুয়া শিবির। আর বিজেপি বিধানসভা নির্বাচনে যা ভোট পেয়েছিল, উপনির্বাচনে তা-ই জুটেছে বামেদের বাক্সে! এই পরিস্থিতিতে বিজেপি-র উত্থান মোকাবিলায় ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক শক্তির একজোট হওয়ার ডাক দিচ্ছে সিপিএম। একই মত কংগ্রেসের। অস্তিত্ব রক্ষায় আগামী মাসে ৭ পুরসভার ভোটেই এই কৌশলের প্রতিফলন ঘটাতে চাইছে দুই বিরোধী দল।
দক্ষিণ কাঁথির প্রাথমিক পরিসংখ্যান খতিয়ে দেখার পরে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র শুক্রবার বলেছেন, ‘‘কেবল বামপন্থীরা যথেষ্ট নয়। বাম, গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ সব শক্তিকে এগিয়ে আসতে হবে। মেরুকরণের রাজনীতি যারা করছে, তাদের বিপদ বলে যাঁরা মনে করেন, তাঁদের সকলকে একজোট হয়ে লড়তে হবে।’’ নাম না করলেও সূর্যবাবুর ইঙ্গিত স্পষ্টত কংগ্রেসের দিকেও। কয়েকটি পুরসভার আসন্ন ভোটে দলের স্থানীয় নেতৃত্ব যে এই পথেই এগোতে চাইবেন, সূর্যবাবুর বক্তব্যেই তা পরিষ্কার। তাঁর কথায়, ‘‘তৃণমূল-বিজেপি’কে হারানো মূল লক্ষ্য। যেখানে আমাদের শক্তি নেই, সেখানে যারা বিজেপি-তৃণমূলকে হারাতে পারবে, তারাই লড়বে।’’
রামনবমী উপলক্ষে কাঁথি শহরে ২০-২৫ হাজার লোকের মিছিল হয়েছিল বলে উল্লেখ করে সূর্যবাবুরা বারেবারেই বলছেন, রাজ্য রাজ্যনীতিতে বিজেপি-র উত্থান উদ্বেগজনক। তা হলে এখন রাজ্যে প্রধান শত্রু বলে তাঁরা কাদের মনে করছেন? সূর্যবাবুর জবাব, ‘‘এ রাজ্যে প্রধান বিপদ অবশ্যই তৃণমূল। তারাই বামপন্থী এবং অন্যান্য ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক শক্তিকে আক্রমণ করে করে সাম্প্রদায়িক শক্তির উত্থানের সুযোগ করে দিয়েছে। স্লোগান একই থাকছে— তৃণমূল হঠাও, বাংলা বাঁচাও। মোদী হঠাও, দেশ বাঁচাও!’’
একই সুর বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নানেরও। তাঁর যুক্তি, তৃণমূলের মোকাবিলা এবং বিজেপি-কে ঠেকানোর জন্যই বিধানসভা ভোটে বামেদের সঙ্গে সমঝোতা হয়েছিল। তিনি এ দিন বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মুখে যা-ই বলুন, তৃণমূলের কাজকর্মে সাম্প্রদায়িক শক্তি পরিষ্কার মদত পাচ্ছে। রাজ্যে মেরুকরণ প্রকট হচ্ছে। এই বিপদের মোকাবিলায় ধর্মনিরপেক্ষ, গণতান্ত্রিক সব শক্তিকে একজোট হয়েই লড়তে হবে।’’ পাশাপাশিই সূর্যবাবু বুঝিয়ে দিয়েছেন, রাস্তায় নেমে কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়াই জমি ধরে রাখার একমাত্র পথ। সেই লক্ষ্যেই ২২ মে-র নবান্ন অভিযানের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন তাঁরা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy