প্রতীকী ছবি।
এ রাজ্যে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মিশনের বরাদ্দ টাকায় কাজ কেমন হচ্ছে, তা দেখতে এসেছে কেন্দ্র সরকারের দল। মেদিনীপুরে এসে সেই দলের সদস্যরাই সটান প্রশ্ন করে বসলেন, ‘এখানে এত ডেঙ্গি কেন?’ যা শুনে অস্বস্তিতে পড়েন জেলার স্বাস্থ্যকর্তারা। আমতা আমতা করে তাঁদের জবাব, ‘কিছু এলাকায় অজানা জ্বর দেখা দিচ্ছে ঠিকই, তবে পরিস্থিতির দিকে সতর্ক নজর রাখা হয়েছে। অজানা জ্বর মোকাবিলায় সকলের সহযোগিতাও চাওয়া হয়েছে।’ প্রশাসনের এক সূত্রের খবর, এই জবাবে আদৌ সন্তুষ্ট নন কেন্দ্রীয় দলের সদস্যরা। তাঁরা বুঝিয়ে দেন, পরিস্থিতি মোকাবিলায় আরও আগে তত্পর হওয়া উচিত ছিল।
কেন্দ্রীয় মিশনের ‘কমন রিভিউ মিশন মনিটরিং টিম’ (সিআরএমএমটি)-এর ৮জন সদস্য মেদিনীপুরে আসেন রবিবার। ওই দিন মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল ও সোমবার তাঁরা খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতাল পরিদর্শনে যান। সোয়া আলি রিজভির নেতৃত্বে এই কেন্দ্রীয় দলের সঙ্গে ৮ সদস্যের রাজ্যের একটি দলও এসেছে। রবিবার পশ্চিম মেদিনীপুরের স্বাস্থ্য কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকও করে কেন্দ্রীয় দল। সেই বৈঠকেই ডেঙ্গি পরিস্থিতি নিয়ে খোঁজ নেন কেন্দ্রীয় দলের সদস্যরা। সে কথা মেনে জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক তথা জেলায় পতঙ্গবাহী রোগের নোডাল অফিসার রবীন্দ্রনাথ প্রধান বলেন, “কেন্দ্রীয় দলকে আমরা জানিয়েছি, কিছু এলাকায় জ্বর হচ্ছে ঠিকই। তবে পরিস্থিতি মোকাবিলায় সব পদক্ষেপ করা হচ্ছে। জ্বরে আক্রান্তদের রক্তের নমুনা পরীক্ষা করে দরকারি পদক্ষেপও করা হচ্ছে।’’
রাজ্যের নানা প্রান্তের সঙ্গে এ বার পশ্চিম মেদিনীপুরে কামড় বসিয়েছে ডেঙ্গি। জঙ্গলমহলের এই জেলায় এখনও পর্যন্ত ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা ৪০৮। এর মধ্যে রেলশহর খড়্গপুরেই আক্রান্ত ১৮১জন। জেলায় এখনও পর্যন্ত চার জন ডেঙ্গিতে মারা গিয়েছেন। জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তার জানান, এখনও পর্যন্ত কতজন ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়েছেন, কতজনের মৃত্যু হয়েছে, কেন মৃত্যু হয়েছে, এ সব প্রশ্নও করেন কেন্দ্রীয় দলের সদস্যরা। জেলার উপ-মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক রবীন্দ্রনাথবাবু বলছিলেন, “মৃত্যুর কারণ খতিয়ে দেখতে পর্যালোচনা হয়েছে। পর্যালোচনায় যে তথ্য উঠে এসেছে তাই আমরা কেন্দ্রীয় দলকে জানিয়েছি।’’
রাজ্যের সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালে প্রেসক্রিপশন বা মৃত্যুর শংসাপত্রে ডেঙ্গির উল্লেখ নিয়ে নানা বিতর্ক হচ্ছে। বহু ক্ষেত্রেই ডেঙ্গি হওয়া সত্ত্বেও তা লেখা হচ্ছে না বলে অভিযোগ। মাস খানেক হল ডেঙ্গিতে মৃত্যুর তথ্যও কেন্দ্রে পাঠাচ্ছে না রাজ্য। এই পরিস্থিতিতে জেলায় এসে কেন্দ্রীয় দলের ডেঙ্গি নিয়ে খোঁজখবর নেওয়া তাত্পর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে। জেলার এক স্বাস্থ্যকর্তা মানছেন, ‘‘কেন্দ্রীয় দলের সদস্যরা কয়েকটি দিক সম্পর্কে সবিস্তার জানতে চেয়েছেন। একটু অস্বস্তি তো হয়েছেই।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy