ছবি: সংগৃহীত।
সারা দেশে বিজেপির সংগঠন বিস্তারের ব্যর্থতার দায় যে কার্যত পশ্চিমবঙ্গের ঘাড়েই চাপছে, দলীয় বৈঠকে তা স্বীকার করে নিলেন এ রাজ্যের সভাপতি দিলীপ ঘোষ। সল্টলেকের পূর্বাঞ্চল সাংস্কৃতিক কেন্দ্র (ইজেডসিসি)-তে শনিবার বিজেপির রাজ্য কমিটির বৈঠকে দিলীপবাবু বলেন, ‘‘দেশের ৯ লক্ষ বুথের মধ্যে সাড়ে ৮ লক্ষ বুথে বিজেপি পৌঁছে গিয়েছে। কিন্তু এ রাজ্যের ৭৭ হাজার বুথের মধ্যে ৪৫ হাজার বুথে আমরা পৌঁছতে পেরেছি। অর্থাৎ, দেশের নিরিখে আমরাই সব চেয়ে বেশি পিছিয়ে আছি। এ ভাবে চললে আমাদের সঙ্কল্প বাস্তবায়িত হবে না।’’ দিলীপবাবুর দেওয়া হিসাব থেকে স্পষ্ট, দেশের যে ৫০ হাজার বুথে এখনও বিজেপির পতাকা ওড়েনি, তার মধ্যে ৩২ হাজারই এ রাজ্যের। এবং সেই কারণেই তিনি চিন্তিত। দিলীপবাবু অবশ্য জানান, তিনি দলের সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহকে জানিয়েছেন, এ রাজ্যে শাসক তৃণমূলের সন্ত্রাসের জন্যই বিস্তারক অভিযানে সব বুথে এখনও পৌঁছনো যায়নি। তবে সেই কাজ অবিলম্বে শেষ করা হবে।
আরও পড়ুন: বিজেপির অবস্থান নিয়ে প্রশ্ন দলেই
দিলীপবাবু এ দিন বৈঠকে নির্দেশ দিয়েছেন, প্রত্যেক কর্মীকে দু’টি করে বুথের দায়িত্ব নিতে হবে এবং ১৫ নভেম্বরের মধ্যে সব বুথ কমিটি গঠন সেরে ফেলতে হবে। তবে দলীয় সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের তরফে রাজ্যে দলের পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয়, সর্বভারতীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (সংগঠন) শিবপ্রকাশ এবং সহ পর্যবেক্ষক সুরেশ পূজারী সকলেই এ দিন পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি-র কাজের ধরনে কার্যত অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। কৈলাস বলেছেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে উৎখাত করে সরকার দখল করতে হলে হিম্মত (জোশ) লাগবে। তা এ রাজ্যের নেতা-কর্মীদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে না। তাঁরা হাততালিটুকুও এমন ভাবে দিচ্ছেন, যেন মনে হচ্ছে, ঘুমিয়ে পড়েছেন। কেরলে বিজেপির জনরক্ষা যাত্রার উদাহরণ দিয়ে কৈলাস আরও বলেন, ওই রাজ্যে ১০ হাজার কর্মী সুশৃঙ্খল ভাবে মিছিল করতে পারেন। কিন্তু এ রাজ্যে দলের মিছিলে ক্যামেরায় মুখ দেখানো এবং নিজস্বী তোলার হুড়োহুড়ির চোটে কেবল ধাক্কাধাক্কি হয়। সুরেশও বলেন, মহাভারতের যুদ্ধক্ষেত্রে অর্জুনের যে শরীরী ভাষা ছিল, সেটা ছাড়া এ রাজ্যে ক্ষমতা দখল সম্ভব নয়। শিবপ্রকাশ এ দিনের বৈঠকে বিদ্বজ্জনদের জেলায় জেলায় সংগঠিত করার নির্দেশ দেন। তাঁর বক্তব্য, এ রাজ্য শিল্পী-সাহিত্যিকদের ভূমি। তাঁদের ছাড়া এখানে সরকার পরিবর্তন করা কঠিন।
দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সরিয়ে রেখে ঐক্যবদ্ধ ভাবে কাজ করার নির্দেশ এ দিন ফের দিয়েছেন কৈলাস। তিনি বলেছেন, যে নেতাদের পারস্পরিক ঝগড়া আছে, তাঁরা যেন দীপাবলি উপলক্ষে পরস্পরের বাড়ি গিয়ে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy