Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

শীতের সকালে ভূকম্প আতঙ্ক উত্তরে

সবে সকাল হয়েছে।  প্রবল ঠান্ডা আর কুয়াশার দাপটে ভালভাবে ঘুম ভাঙেনি তখনও। হঠাৎই কম্পন। আর তাতেই যেন গা ঝাড়া দিয়ে উঠল উত্তরের জেলাগুলি। কনকনে ঠান্ডা অগ্রাহ্য করে আতঙ্কে বাড়ি ছেড়ে রাস্তায় নেমে পড়লেন বাসিন্দারা।

ঘরছাড়া: ভূমিকম্পের পরে রাস্তায় কোচবিহারের বাসিন্দারা। নিজস্ব চিত্র

ঘরছাড়া: ভূমিকম্পের পরে রাস্তায় কোচবিহারের বাসিন্দারা। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব প্রতিবেদন
শেষ আপডেট: ২১ জানুয়ারি ২০১৮ ০২:৫৭
Share: Save:

সবে সকাল হয়েছে। প্রবল ঠান্ডা আর কুয়াশার দাপটে ভালভাবে ঘুম ভাঙেনি তখনও। হঠাৎই কম্পন। আর তাতেই যেন গা ঝাড়া দিয়ে উঠল উত্তরের জেলাগুলি। কনকনে ঠান্ডা অগ্রাহ্য করে আতঙ্কে বাড়ি ছেড়ে রাস্তায় নেমে পড়লেন বাসিন্দারা।

শনিবার সকাল পৌনে সাতটা নাগাদ ভূমিকম্প অনুভূত হয় নামনি অসম ও উত্তরবঙ্গের বিস্তীর্ণ এলাকায়। কম্পনের উৎসস্থল ছিল অসমের কোকরাঝাড়। নামনি অসমতো বটেই, কোচবিহার থেকে উত্তরবঙ্গের অন্যপ্রান্ত মালদহ পর্যন্ত সর্বত্র কম্পন টের পেয়েছেন বাসিন্দারা। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, রিখটার স্কেলে কম্পনের মাত্রা ছিল ৫.২।

প্রায় পাঁচ সেকেন্ড ধরে কম্পন টের পাওয়া গিয়েছে ভোরের কোচবিহারে। আর তাতেই চেপে বসে আতঙ্ক। শুরু হয় হইচই। শহরের তিন নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক দীপ্তিমান সাহা বলেন, “তখন ঘুমিয়ে ছিলাম। কম্পনেই ঘুম ভেঙে যায়। বুঝতে পেরে দৌড়ে বাইরে আসি।” স্টেশন মোড়ের ব্যবসায়ী বিপ্লব পাল বলেন, “কম্পনের মাত্রা তীব্র ছিল। নিজেকে সামলে আত্মীয়দের ফোন করি। ক্ষয়ক্ষতি তেমন হয়নি। তবে প্রবল আতঙ্ক রয়েছে।”

প্রথমবার কম্পনের মিনিট পনেরো বাদে ফের আরও একটি কম্পন বা ‘আফটার শক’ হয়। মালদহের বিভিন্ন এলাকাতেও আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। দুপুরের মধ্যে জেলা প্রশাসনের কাছে ক্ষয়ক্ষতির প্রাথমিক রিপোর্টও জমা পড়ে। তবে তাতে উল্লেখযোগ্য কোনও ক্ষতির তথ্য মেলেনি। রায়গঞ্জের বীরনগর এলাকার বাসিন্দা ব্যবসায়ী কুণাল ঘোষ বলেন, ‘‘ঘুমের ঘোরে হঠাৎ খাট কেঁপে উঠল বলে মনে হয়েছিল। চমকে উঠেছিলাম। তবে তেমন বড় মাপের কিছু হয়নি। বিপদের হাত থেকে রক্ষা পেলাম।’’

কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, ভূগর্ভস্থ ভারতীয় এবং ইউরেশিয়ার প্লেটের সংঘর্ষই কম্পনের কারণ। দু’টি প্লেটের মধ্যে অসংখ্য চ্যুতি রয়েছে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের সিকিমের আধিকারিক গোপীনাথ রাহা বলেন, ‘‘সিকিমের কিছু এলাকাতেও কম্পন টের পাওয়া গিয়েছে। তবে ক্ষয়ক্ষতির খবর নেই।’’

কম্পন অনুভূত হওয়ার পর থেকেই সোশাল নেটওয়ার্কে শুরু হয়ে যায় ‘আপডেট’ দেওয়ার পর্ব। কারও লেখায় আতঙ্ক। কারও লেখায় সব ছাপিয়ে রসিকতা। ২০১১ সাল থেকে একাধিক বড় ভূমিকম্পের সাক্ষী উত্তরবঙ্গ। শিলিগুড়ির বেশ কিছু বহুতল ও সেতুতেও অতীতের কম্পনে ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। শনিবারের শীতের সকালে সেই আতঙ্কই ঘুরে আসে শিলিগুড়ি শহরে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Earthquake Magnitude
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE