গীতাঞ্জলির বোর্ড সরে (বাঁ দিকে) বসেছে পেরীবাল জেমসের বোর্ড। শিলিগুড়িতে। —নিজস্ব চিত্র।
রাত পোহাতেই ভোলবদল। রাতারাতি গীতাঞ্জলি জেমসের সাইনবোর্ড সরে গিয়েছে। তাই দশ বছর ধরে পরিচিত শোরুমের দিকে তাকিয়ে থমকে যাচ্ছিলেন অনেকেই। কারণ সেখানে এখন লেখা ‘পেরীবাল জেমস’। বুধবার সকালে শিলিগুড়ির বিধানরোডের শোরুমটির দিকে তাকিয়ে বাসিন্দারা দেখতে পান, রাতারাতি ঢেকে দেওয়া হয়েছে হিরের গয়নার পরিচিত ব্র্যান্ডের নামগুলিও।
সাত সকালে বাজারের পথে বাসিন্দাদের অনেকেই তখন বলছেন, ‘‘পিএনবি দুর্নীতির জেরে মামা-ভাগ্নের সংস্থার সঙ্গে কেউ আর নিজের নাম জুড়তে চাইছেন না। দেশ জুড়ে ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলিতে তল্লাশি শুরু হয়েছে। শিলিগুড়িতে গীতাঞ্জলির শোরুম বললে তো সবাই এই শোরুমকেই চিনত। তাই ভোলবদল।’’
এই শোরুমে ইডি তল্লাশি চালাতে পারে বলে মঙ্গলবারই খবর চাউর হয়েছিল। মালিকপক্ষ জানান, ২০১১ সালে আদত গীতাঞ্জলির সঙ্গে চুক্তি শেষ হয়েছে। বাইরের ভেন্ডারের থেকে ওই সংস্থার মালপত্র এনে বিক্রি করা হত। তাই সাইনবোর্ড রাখা ছিল। তা খুলে দেওয়া হবে। রাতেই তা বদলে ফেলা হয়। তাই শহরবাসীর প্রশ্ন তবে কেন এত দিন ওই সংস্থার নাম ব্যবহার করেই চলল গয়নার ব্যবসা।
পরিবর্তিত নাম
এ দিন শোরুমটি খোলা ছিল। গীতাঞ্জলি জুয়েলারির সাইনবোর্ডের উপরে পেরীবাল জেমস লেখা ফ্লেক্স ঝোলানো হয়েছে। ২৪ ঘণ্টা আগেও গ্রাহকদের পরপর শোরুমে আসতে দেখা গিয়েছিল। এ দিন দুপুরে হাতে গোনা গ্রাহককে আসতে দেখা গিয়েছে। পেরীবাল জেমসের অন্যতম মালিক নরেশ পেরীবাল বলেন, ‘‘আমরা ওদের গয়না বিক্রি করতাম বলে সাইনবোর্ড রেখেছিলাম। এখন যে সব কাণ্ড হচ্ছে, তাতে আর নাম রাখার প্রশ্নই নেই। শোরুমে ওদের ব্র্যান্ডের অনেক গয়নাও আছে। সমস্ত নথিপত্র রয়েছে, কোনও সংস্থা দেখতে চাইলে দেখিয়ে দেব।’’
নরেশবাবু এবং তাঁর পরিবারের কয়েক জন সদস্য মিলে ২০০৮ সালে ১৭ মে পেরীবাল জেমস নামে সংস্থাটি খোলেন। একটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে ঋণও নেওয়া হয়েছিল। সেই সময় তাঁরা গীতাঞ্জলি জুয়েলারির সঙ্গে চুক্তি করেন। গয়না কিনলে পেরীবাল জেমসের নামেই বিল কাটা হত।
এলাকায় দীর্ঘদিনের কাউন্সিলর ছিলেন তৃণমূলের নান্টু পাল। এখন তাঁর স্ত্রী মঞ্জুশ্রী পাল কাউন্সিলর। তাঁরা বলেন, ‘‘ওটা পেরীবাল পরিবারের দোকান বলেই জানি। শোরুমটিতে গীতাঞ্জলির ব্র্যান্ডেড গয়না বিক্রি হত। দেশ জুড়ে যা হচ্ছে, তাতে হয়তো ওরা বোর্ড বদল করেছে। কোনও সমস্যা থাকলে তদন্তকারী সংস্থা দেখবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy