Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

প্রচারে চাই লোকশিল্পী, নাম তুলতে হুড়োহুড়ি

নবান্ন সূত্রের খবর, কমবেশি এক মাসের মধ্যে এক লক্ষ ১০ হাজার লোকশিল্পীকে প্রকল্পের আওতায় আনতে পেরেছে মুখ্যমন্ত্রীর হাতে থাকা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর। এই লোকশিল্পীরা অন্যান্য কাজের পাশাপাশি পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সরকারের সাফল্য প্রচার করবেন।

ছবি সৌজন্যে ইউটিউব।

ছবি সৌজন্যে ইউটিউব।

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৯ মার্চ ২০১৮ ০৪:২২
Share: Save:

সামনেই পঞ্চায়েত নির্বাচন এবং লোকশিল্পীরা সেই ভোটে সরকারের প্রচারের অন্যতম মুখ।

তাই সরকারের ঘরে নাম তোলানোর হি়ড়িক পড়ে যায়। এক ধাক্কায় এক লক্ষ ১০ হাজার লোকশিল্পীকে নথিভুক্ত করতে পেরে স্বস্তির শ্বাস ফেলেছে তথ্য ও সংস্কৃতি দফতরও। কেননা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বেঁধে দেওয়া লক্ষ্য প্রায় পূরণ হয়ে গিয়েছে। ৮৪ হাজার লোকশিল্পীর নাম আগেই নথিভুক্ত করা হয়েছিল। সব মিলিয়ে এক লক্ষ ৯৪ হাজার লোকশিল্পীর নাম উঠে গিয়েছে সরকারের খাতায়।

মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ ছিল, যত দ্রুত সম্ভব অম্তত দু’লক্ষ লোকশিল্পীকে লোকপ্রসার প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসতে হবে। সেপ্টেম্বরে সেই কাজ শুরু করে দফতর। নবান্ন সূত্রের খবর, কমবেশি এক মাসের মধ্যে এক লক্ষ ১০ হাজার লোকশিল্পীকে প্রকল্পের আওতায় আনতে পেরেছে মুখ্যমন্ত্রীর হাতে থাকা তথ্য ও সংস্কৃতি দফতর। এই লোকশিল্পীরা অন্যান্য কাজের পাশাপাশি পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে সরকারের সাফল্য প্রচার করবেন।

পুরনো আবেদনপত্র থেকে প্রাথমিক ভাবে আবেদনকারী বাছাই করেছে সরকার। জেলায় জেলায় বিশেষ অডিশন ক্যাম্প করে অল্প সময়ের মধ্যে গোটা প্রক্রিয়া শেষ করা হয়েছে। এই যুদ্ধকালীন তৎপরতার কারণ কী? নবান্নের কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, পঞ্চায়েত নির্বাচনকে নজরে রেখেই এই উদ্যোগ শুরু হয়েছিল। এর কারণ প্রধানত দু’টি।

প্রথমত, সম্পূর্ণ ভাবে গ্রামনির্ভর এই প্রকল্পের আওতায় বেশি সংখ্যক মানুষকে আনার অর্থ, সংশ্লিষ্ট পরিবারের কাছে সরাসরি সরকারি সহযোগিতা পৌঁছে দেওয়া। ‘‘এক জন শিল্পী সরকারি স্বীকৃতি পেলে সামাজিক ভাবে তাঁর সম্মান বাড়ে। শিল্পীমনের ন্যূনতম এই চাহিদা মেটাতে গিয়ে সরকারের জনপ্রিয়তা বাড়লে অসুবিধা কোথায়,’’ বলছেন নবান্নের এক কর্তা। অসুবিধা যে কিছুই নেই এবং ভোটবাক্সে সেই জনপ্রিয়তার প্রতিফলন পড়াটাই যে স্বাভাবিক, ওই নবান্ন-কর্তা সেটা অস্বীকার করছেন না।

দ্বিতীয়ত, নবান্নের কর্তারা মনে করেন, সরকারের সাফল্য প্রচারে টিভি, রেডিও, হোর্ডিং-ফ্লেক্সের মতো মাধ্যমগুলি সকলের, বিশেষত গ্রামবাংলার সকলের চোখে পড়বেই, এমন নিশ্চয়তা নেই। তার চেয়ে লোকশিল্পীরা সরাসরি এলাকায় ঘুরে ঘুরে প্রচার করলে সাধারণ মানুষের মধ্যে তার প্রভাব বেশি হবে। সেই জন্য টাকা খরচের প্রশ্নে লোকশিল্পীদের মাধ্যমে প্রচারকেই এগিয়ে রাখতে চাইছেন প্রশাসনের অনেকে। তাঁরা জানান, যেখানে যে-লোকশিল্প প্রসিদ্ধ, সেখানে সেই শিল্পই প্রদর্শন করবেন শিল্পীরা।

নবান্ন সূত্রের খবর, পরিকল্পনা রূপায়ণে ২০১৭-’১৮ আর্থিক বছরের মাঝামাঝি প্রায় ৮০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। প্রকল্পের আওতায় থাকা ৬০ বছরের নীচের শিল্পীরা মাসে হাজার টাকা ভাতা পাবেন। বয়স ৬০ বছরের বেশি হলে শিল্পীরা মাসে এক হাজার টাকা পাবেন পেনশন হিসেবে। তা ছাড়া শিল্পীরা প্রতিটি অনুষ্ঠানের জন্য এক হাজার টাকা পাবেন। ‘‘এক জন শিল্পী মাসে ছ’সাত হাজার টাকা রোজগার করতে পারেন,’’ বলেন এক আধিকারিক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE