ফাইল চিত্র।
এই মুহূর্তে পাহাড়ে জিটিএ নির্বাচন হলে হারতে হবে বুঝেই গুরুঙ্গরা অশান্তির পথে হেঁটেছেন বলে কেন্দ্রকে রিপোর্ট দিল নবান্ন। পাহাড়ে উত্তর-পূর্বের জঙ্গি গোষ্ঠীগুলির প্রভাব বাড়ছে এবং তারাই অশান্তিতে কলকাঠি নাড়ছে বলেও ওই রিপোর্টে জানানো হয়েছে। নবান্নের এমন রিপোর্টের মধ্যেই শরিকি অঙ্ক মাথায় রেখে আজ সরব হয়েছেন দার্জিলিঙের বিজেপি সাংসদ সুরেন্দ্র সিংহ অহলুওয়ালিয়া। পাহাড়ে অশান্তিতে মৃতদের ক্ষতিপূরণ ও গুলি চালানোর তদন্ত দাবি করেছেন তিনি।
নবান্নের পাঠানো পাঁচ পাতার রিপোর্টে জিটিএ-র নির্বাচনকেই পাহাড়ের চলতি অশান্তির মূল কারণ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। রাজ্য বিশদ ব্যাখ্যা না দিলেও রাজনৈতিক সূত্র বলছে, পুরভোটে তৃণমূলের সাফল্যে গোর্খা নেতা বিমল গুরুঙ্গ বুঝতে পারেন পাহাড়ে জমি সরতে শুরু করেছে। মিরিক হাতছাড়া হয়েছে। পাহাড়ের চারটে পুরসভাতেও ফলাফলের বিচারে গোর্খা নেতৃত্বকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে তৃণমূল। মোর্চা বুঝতে পারে, দু’মাস পরে যদি পাহাড়ে নিয়মমাফিক জিটিএ নির্বাচন হয়, তা হলে ওই জনমতের প্রতিফলন সেই ভোটেও পড়বে। এমনকী ক্ষমতা হারানোর আশঙ্কাও তৈরি হয় মোর্চার অন্দরমহলে। তৃণমূলের অভিযোগ, সেই ভয় থেকেই পাহাড়ে হারানো জমি উদ্ধারে জঙ্গি আন্দোলনে নামতে বাধ্য হন গুরুঙ্গেরা।
আরও পড়ুন: বিদেশেও মমতার মন পড়ে পাহাড়ে
রাজ্যের রিপোর্টে পাহাড়ে অশান্তির পিছনে উত্তর-পূর্বের জঙ্গিদের প্রভাবের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। এ ছাড়া মোর্চার দলীয় দফতর থেকে অস্ত্রশস্ত্র ও হিসেব বর্হিভূত বিপুল অর্থ পাওয়ার প্রসঙ্গ টেনে সেগুলির উৎস নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। যদিও গোর্খা নেতাদের জঙ্গিযোগের অভিযোগ উড়িয়েছেন স্থানীয় সাংসদ অহলুওয়ালিয়া। তিনি বলেন, ‘‘দেশের জন্য গোর্খাদের যে বলিদান, তা নিশ্চয় তৃণমূল নেত্রী ভুলে যাননি। গোর্খাদের জাতীয়তাবাদ নিয়ে প্রশ্ন তোলা অর্থহীন।’’ একই সঙ্গে অহলুওয়ালিয়ার প্রশ্ন, ‘‘পাহাড়ে যদি অস্ত্র ঢুকেই থাকে, তা হলে রাজ্য প্রশাসন এত দিন কী করছিল? তারা কেন কেন্দ্রকে জানায়নি? মমতার অভিযোগ মেনে নিলে এখনই রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে কেন্দ্রের সঙ্গে বৈঠকে বসা উচিত।’’
রিপোর্টে রাজ্য সরকার জানিয়েছে, এ যাবৎ গণ্ডগোলে একজন মারা গিয়েছেন। কী ভাবে ওই মৃত্যু, তা অবশ্য রিপোর্টে খোলসা করা হয়নি। বিজেপি সাংসদের অভিযোগ, ‘‘পুলিশের গুলিতে তিন জনের মৃত্যুর উচ্চস্তরীয় তদন্তের পাশাপাশি প্রশাসনের উচিত ছিল মৃতদের পরিবারকে আর্থিক সাহায্য দেওয়া। তার বদলে মানবতাবিরোধী কাজ করে এখন মুখ্যমন্ত্রী বিদেশে গিয়েছেন রাষ্ট্রপুঞ্জের পুরস্কার নিতে!’’
গোর্খাল্যান্ডের দাবিকে সমর্থনের বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে অহলুওয়ালিয়া বলেন, ‘‘১১০ বছরের পুরনো সমস্যার সমাধান এক দিনে হয় না। তা ছাড়া জিটিএ চুক্তিতেই তো গোর্খাল্যান্ডের বিষয়টি রয়েছে। সব জেনেই তো ওই চুক্তিতে রাজি হয়েছিলেন মমতা।’’ এই মহূর্তে যোগ দিবস উপলক্ষে সিকিমের রাজধানী গ্যাংটকে রয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কিরেণ রিজেজু। তাঁর সঙ্গে দেখা করে পাহাড়ের পরিস্থিতি বিশদে ব্যাখ্যা করেছেন গোর্খা নেতারা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy