Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

ঘনাচ্ছে নিম্নচাপ, ভারী বৃষ্টির পূর্বাভাস

শুক্রবার বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণাবর্ত দানা বাধার পরেই আবহবিদেরা জানিয়েছিলেন, এই ‘অতিথি’র হাত ধরেই ঘুরে দাঁড়াতে পারে বর্ষা। এ দিন আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, ঘূর্ণাবর্তটি আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে শক্তি বাড়িয়ে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৭ ০৪:১৮
Share: Save:

গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে আসা ইস্তক ঝিমিয়েই ছিল বর্ষা। জুনের শেষ লগ্নে এসে ক্রমশ গা ঝাড়া দিচ্ছে সে! সৌজন্য বঙ্গোপসাগরের ঘূর্ণাবর্ত। আবহাওয়ার মতিগতি খতিয়ে দেখে হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস, আজ, রবিবার গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে বৃষ্টির দাপট বাড়তে পারে।

আবহবিদদের মতে, জুন মাসে রাজ্যে বর্ষা ঢুকলেও দক্ষিণবঙ্গ জু়ড়ে তেমন জোরালো বৃষ্টি মেলে না। তবে বঙ্গোপসাগরে যদি ঘূর্ণাবর্ত বা নিম্নচাপ দানা বাঁধে তা হলে জুন মাসে দক্ষিণবঙ্গ জুড়ে বৃষ্টি শুরু হয়। অর্থাৎ ওই ঘূর্ণাবর্ত বা নিম্নচাপই বর্ষাকে শক্তি জোগায়। এ বছর ১২ জুন গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গে বর্ষা ঢোকার পরেও বর্ষা ঝিমিয়েই ছিল। মাঝেমধ্যে বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টি হলেও তাতে বর্ষার চেনা চেহারার দেখা মিলছিল না। উল্টে ভ্যাপসা গরমে রীতিমতো নাজেহাল হচ্ছিলেন দক্ষিণবঙ্গের বাসিন্দারা। বর্ষা আদৌ ঢুকেছে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠেছিল।

শুক্রবার বঙ্গোপসাগরে ঘূর্ণাবর্ত দানা বাধার পরেই আবহবিদেরা জানিয়েছিলেন, এই ‘অতিথি’র হাত ধরেই ঘুরে দাঁড়াতে পারে বর্ষা। এ দিন আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানাচ্ছে, ঘূর্ণাবর্তটি আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে শক্তি বাড়িয়ে নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। তার ফলে আজ, রবিবার কলকাতা-সহ গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের সর্বত্রই বৃষ্টি হবে। কোথাও কোথাও ভারী ব়ৃষ্টির সম্ভাবনাও রয়েছে।

আবহাওয়া দফতরের অধিকর্তা গণেশকুমার দাসের কথায়, ‘‘নিম্নচাপটি পুরোপুরি তৈরি হয়ে গেলে তার বেশি প্রভাব পড়বে ওড়িশায়। তবে যত ক্ষণ না নিম্নচাপটি পুরোপুরি দানা বাধছে, তত ক্ষণ তার সুফল পাবে গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ।’’ শনিবার রাজ্যের উপকূলীয় এলাকাগুলিতে ভারী ব়ৃষ্টি হয়েছে বলে হাওয়া অফিসের খবর।

এই ঘূর্ণাবর্তের প্রভাবে শুক্রবারই ভারী বর্ষা হয়েছিল কলকাতা-সহ দক্ষিণবঙ্গের একাংশে। এ দিন ভোরেও আকাশ মেঘলা ছিল। তবে বেলা গড়াতেই চড়া রোদ উঠেছিল। আর্দ্রতা বেশি থাকায় শুরু হয়েছিল ঘামের অস্বস্তিও। দুপুরে ঘেমেনেয়ে হন্তদন্ত হয়ে অফিসে ঢুকে এক যুবকের মন্তব্য ছিল, ‘‘শুনলাম, বৃষ্টি হবে। তার দেখা তো পাচ্ছি না!’’ যদিও তার কিছু ক্ষণের মধ্যেই ঝমঝমিয়ে এক পশলা বৃষ্টি হয়েছে কলকাতায়। অস্বস্তিও অনেকটা কমেছিল। আলিপুর হাওয়া অফিসের খবর, শুক্রবারের ভারী বৃষ্টির জেরে রাতে তাপমাত্রা অনেকটাই নেমে গিয়েছিল। শনিবার ভোরে কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে ২ ডিগ্রি কম। রোদ উঠলেও তাই সর্বোচ্চ তাপমাত্রা (৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস) স্বাভাবিকের কোঠা পেরোয়নি।

বিকেল পর্যন্ত কলকাতায় ৩.৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে।

কিন্তু টানা বৃষ্টির জন্য হাপিত্যেশ করে বসে থাকা বাঙালির মনে প্রশ্ন উঠছে, বর্ষার এই জোর ক’দিন টিঁকবে?

হাওয়া অফিসের একটি সূত্রের মতে, নিম্নচাপটি দানা বাঁধলেও তার শক্তি খুব বেশি হবে না। শক্তিশালী নিম্নচাপ হলে টানা বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা থাকে। ফলে এ ক্ষেত্রে সেই আশা কম। তার উপরে নিম্নচাপটি দানা বাঁধার পরে ওড়িশার দিকে সরে যাবে। ফলে কাল, সোমবার থেকে তার ফলে দক্ষিণবঙ্গে বৃষ্টি কিছুটা কমতে পারে। সে ক্ষেত্রে আগামী সপ্তাহে ফের ভ্যাপসা গরম ফিরে আসার আশঙ্কাও কিন্তু উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE