Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

শুধু ফোঁস করলে হবে না, ডাক হাঁটা শেষে

একটু রাস্তা হেঁটে, আবার খানিকটা গাড়িতে পেরিয়ে পদযাত্রার সঙ্গে তাল রেখে গিয়েছেন শ্যামল চক্রবর্তী। এক বার কোচবিহার তো অন্য বার কাকদ্বীপ, ডায়মন্ড হারবারে গিয়ে হেঁটে এসেছেন সুজন চক্রবর্তী।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৪ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:০৪
Share: Save:

হাঁটতে হাঁটতে পায়ে ফোস্কা পড়ে গিয়েছিল। ফোস্কা গলিয়ে নিয়ে টোটকা প্রয়োগ করে হাঁটায় বিরাম দেননি বিমান বসু। হাঁটার চোটে চটি গিয়েছে ছিঁড়ে সূর্যকান্ত মিশ্রের। তবু দু’শো কিলোমিটারের বেশি রাস্তা পায়ে পায়েই পার করে দিয়েছেন তিনি। একটু রাস্তা হেঁটে, আবার খানিকটা গাড়িতে পেরিয়ে পদযাত্রার সঙ্গে তাল রেখে গিয়েছেন শ্যামল চক্রবর্তী। এক বার কোচবিহার তো অন্য বার কাকদ্বীপ, ডায়মন্ড হারবারে গিয়ে হেঁটে এসেছেন সুজন চক্রবর্তী।

কেউ বলবেন বৃদ্ধ ব্রিগে়ড! কেউ বলবেন চেনা মুখের সারি! কিন্তু ১১৭টি গণসংগঠনের যৌথ মঞ্চ বিপিএমও-র উদ্যোগে পদযাত্রার সামনে হেঁটে কর্মী বাহিনীকে উদ্দীপ্ত করার চেষ্টা চালালেন সিপিএমের রাজ্য নেতৃত্বই। জেলায় জেলায় ২২ অক্টোবর শুরু হয়ে বহু পথ ঘুরে শুক্রবার কলকাতায় শেষ হল সেই পদযাত্রার কর্মসূচি। আপাতত হাঁটায় বিরাম হলেও সামনে পঞ্চায়েত ভোট। তাই পদযাত্রার টানে ঘরের বাইরে বেরোনো মানুষকে ধরে রাখা এবং প্রতিবাদে রুখে দাঁড়ানোর ডাক দিলেন বাম নেতৃত্ব।

উত্তরবঙ্গের পদযাত্রা শেষ হয়েছিল দু’দিন আগেই। দক্ষিণবঙ্গের পদযাত্রার শেষ পর্বে এ দিন মহামিছিল হল শহরের রাজপথে। রানি রাসমণি অ্যাভিনিউ থেকে মহাজাতি সদন পর্যন্ত বাম মিছিলে ভিড় হয়েছিল ভালই। মিছিলের জেরেই দুপুরে গোটা মধ্য কলকাতার রাস্তাঘাট প্রায় লন্ডভণ্ড হয়ে গেল! মহাজাতি সদনের কাছে পৌঁছে লাগোয়া গলিতে বাম নেতারা যখন সংক্ষিপ্ত সভা শুরু করে দিয়েছেন, তখনও মিছিলের ল্যাজ ছিল ধর্মতলায়। সিপিআইয়ের প্রবোধ পণ্ডা, আরএসপি-র ক্ষিতি গোস্বামী, অশোক ঘোষ, ফরওয়ার্ড ব্লকের নরেন চট্টোপাধ্যায় বা পি়ডিএসের সুভাষ বসুরা সব ধরনের বাম সংগঠনের কর্মীদের রাস্তায় নামার আগ্রহ দেখে খুশি।

মিছিল শেষে আত্মসমালোচনা এবং হুঁশিয়ারির সুরেই বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমানবাবু বলেছেন, ‘‘যত দাবি নিয়ে পদযাত্রা শুরু হয়েছিল, সব দাবি কি রাজ্যের ৪০ হাজার গ্রামের মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া গিয়েছে? যে কাজ শুরু হয়েছে, তাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। মানুষের সঙ্গে জীবন্ত সম্পর্ক গড়ে তুলে লড়াই চালাতে হবে।’’ পদযাত্রার কর্মসূচির সময়সীমার মধ্যে ৪০ হাজার গ্রামে পৌঁছতে না পারার কথা যেমন বিমানবাবু মেনে নিয়েছেন, তেমনই তাঁর আহ্বান, ‘‘গণতন্ত্রের উপরে আক্রমণ হলে আর শুধু ফোঁস করলে হবে না! প্রতিরোধ করতে হবে। প্রতিবাদে হবে না। প্রশাসনের কাছে দাবিপত্র, ধর্না অনেক দিয়েছি।’’

পদযাত্রীদের অভিনন্দন জানিয়েই বিপিএমও-র আহ্বায়ক শ্যামলবাবু বলেন, ‘‘ভয়কে জয় করে যে মানুষ রাস্তায় নেমেছেন, তাঁরা যেন হারিয়ে না যান। এটা আমাদের দেখতে হবে।’’ বিজেপি ও তৃণমূল যে একই মুদ্রার দুই পিঠ, সে কথাও বারবার বলেছেন বাম নেতারা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

cpm Left March সিপিএম
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE