বন্দি অবস্থায় এসএসকেএম হাসপাতালে থাকাকালীন সিবিআইয়ের জেরার মুখে পড়েছিলেন প্রাক্তন মন্ত্রী মদন মিত্র। এ বার শঙ্কুদেব পণ্ডার বয়ান ও নথি যাচাইয়ের জন্য জেলে গিয়ে মদনবাবুকে জেরা করবে সিবিআই। ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে জেরা করার নির্দেশ দিয়েছে আলিপুর আদালত।
সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারিতে অভিযুক্ত, জেলবন্দি রমেশ গাঁধী, মনোরঞ্জনা সিংহ এবং শান্তনু ঘোষকেও জেরা করবে সিবিআই। তার অনুমতি চেয়ে সোমবার আলিপুর আদালতে অতিরিক্ত মুখ্য বিচার বিভাগীয় বিচারকের এজলাসে আবেদন জানায় ওই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। সিবিআইয়ের আইনজীবী পার্থসারথি দত্ত বলেন, ‘‘মদনবাবুকে ফের জিজ্ঞাসাবাদ করার জন্য আবেদন জানানো হয়েছিল। আদালত সেই আবেদন মঞ্জুর করেছে।’’ মদনবাবুর আইনজীবী বৈশ্বানর চট্টোপাধ্যায় জানান, জেলে সিবিআইয়ের জেরার সময়ে তাঁর মক্কেলের এক আইনজীবী যাতে হাজির থাকতে পারেন, এ দিন সেই আর্জিও জানানো হয়েছিল। আদালত তা মঞ্জুর করেছে।
সেপ্টেম্বরে আদালতের অনুমতি নিয়ে এসএসকেএম হাসপাতালে গিয়ে প্রাক্তন মন্ত্রী মদনবাবুকে দু’দিন ধরে জেরা করেছিল সিবিআই। দ্বিতীয় দিনে অবশ্য ওই অভিযুক্ত অসুস্থ হয়ে পড়ায় জেরা বন্ধ করে দিতে হয় সিবিআইয়ের তদন্তকারীদের।
ওই প্রাক্তন মন্ত্রীকে ফের জেরা করার প্রয়োজন হচ্ছে কেন?
সিবিআই সূত্রের দাবি, সারদা কেলেঙ্কারির তদন্তে নেমে সম্প্রতি শঙ্কুদেব পণ্ডাকে দু’দিন জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। শঙ্কুদেব যে-সব তথ্য দিয়েছেন, তা যাচাই করার জন্যই মদনবাবু এবং অন্য অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদ করা প্রয়োজন বলে মনে করছেন তদন্তকারী অফিসারেরা।
সিবিআইয়ের এক পদস্থ কর্তা এ দিন জানান, শুধু সারদা বা রোজ ভ্যালি নয়, সম্প্রতি অ্যাঞ্জেল এগ্রিটেক ও অ্যাসদা নামে দু’টি অর্থ লগ্নি সংস্থায় তল্লাশি অভিযান চালিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ নথি আটক করা হয়েছে। ওই দুই সংস্থার একাধিক কর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদও করেছেন তদন্তকারীরা। সেখানেও মদনবাবুর নাম উঠে এসেছে বলে তদন্তকারীদের দাবি। তাই শঙ্কুর দেওয়া তথ্য যাচাই করার সঙ্গে সঙ্গে ওই দুই সংস্থা নিয়েও প্রশ্ন করা হবে মদনবাবুকে।
সারদার টাকায় কোন কোন প্রভাবশালী ব্যক্তি কতটা লাভবান হয়েছেন, তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার সময় সিবাআই-কে সেটাও দেখতে বলেছিল সুপ্রিম কোর্ট। মদনবাবুকে দফায় দফায় জেরা করার পাশাপাশি তিনি কতটা প্রভাবশালী, তার তথ্য সংগ্রহের কাজেও নামছে সিবিআই। আর্থিক কেলেঙ্কারিতে গ্রেফতার হয়েও জেলে না-থেকে কী করে তিনি মাসের পর মাস সরকারি হাসপাতালে থেকে গেলেন এবং জামিন পাওয়ার পরে রাতারাতি তাঁকে সুস্থ ঘোষণা করে বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়া হল কী ভাবে— তা জানতে এ বার এসএসকেএমের অধ্যক্ষ মঞ্জু বন্দ্যোপাধ্যায়কে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। সিবিআই সূত্রের খবর, মন্ত্রীর চিকিৎসা নিয়ে বিভ্রান্তি রয়েছে। তা দূর করতেই অধ্যক্ষকে জিজ্ঞাসাবাদ করা দরকার। এ ব্যাপারে মঞ্জুদেবীকে প্রশ্ন করা হলে তিনি অবশ্য কোনও মন্তব্য করতে রাজি হননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy