—ফাইল চিত্র।
সপ্তাহখানেক আগেই হাসপাতালে তাণ্ডবের সাক্ষী হয়েছে কলকাতা। ঘটনার পরই প্রকাশ্যে এর তীব্র নিন্দা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। পাশাপাশি, বেসরকারি হাসপাতালগুলির একাংশের বিরুদ্ধে চিকিৎসার অতিরিক্ত খরচের অভিযোগও রয়েছে। এ সব অভিযোগ নিয়ে বুধবার টাউন হলে একটি বৈঠকে বেসরকারি হাসপাতাল ও তাদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী।
বৈঠকে কী বললেন মুখ্যমন্ত্রী:
• প্রতি মাসে সব হাসপাতালের রিপোর্ট চাই।
• চিকিৎসকেরা বেশি কমিশন নেওয়া বন্ধ করুন।
• ইমার্জেন্সি কেস প্রত্যাখ্যান করা চলবে না।
• বেসরকারি হাসপাতালে নজরদারি চলবে।
• আগামী বিধানসভা অভিবেশনে শীঘ্রই এ নিয়ে বিল আনা হবে।
• হেলথ রেগুলেটরি কমিশন গঠন করা হবে।
• রক্ত ঠিক মতো সংরক্ষণ করতে হবে। সংক্রমণ যেন না ছড়ায়।
• কাউকে ডেঙ্গি, কাউকে ম্যালেরিয়া বলে দেওয়া হচ্ছে। নজরদারি বাড়াতে হবে।
বৈঠকে জিডি হাসপাতাল, বিএম বিড়লা, রুবি, মেডিকা-সহ বিভিন্ন বেসরকারি হাসপাতালের প্রতিনিধিরা ছিলেন।
• (মেডিকা-র উদ্দেশে) এত টাকা নেন কেন? কিডনি চক্র বন্ধ হয়েছে?
• ই-প্রেসক্রিপশন, ই-রেকর্ড সকলকে দিতেই হবে।
সিএমআরআই কর্তৃপক্ষ বলেন:
• যে কেউ এসে আমাদের নথি অডিট করে দেখতে পারেন। সোশ্যাল সার্ভিস করি আমরা।
• ইমার্জেন্সি এবং ওপিডি-তে আমরা বহু দিন ধরে ফ্রি সার্ভিস দিই।
• বিলে স্বচ্ছতা আনার চেষ্টা করব। এই বিষয়ে কাজ করার চেষ্টা করব।
• সরকারের কাছে সে দিনের ঘটনায় অনেক সমর্থন পেয়েছি।
• বিল প্রচন্ড বেশি হচ্ছে। কী সমস্যা?
সিএমআরআই কর্তৃপক্ষ বলতে উঠলেন:
• হাসপাতালে যাঁদের কিছু ইনফেকশন রয়েছে সেন্ট্রাল এসি থাকায় তা ছড়িয়ে পড়ছে।
• নার্স কোথায় যাবে না যাবে তা কি সরকার দেখবে? ভাল করে মাইনে দিন!
বেলভিউ কর্তৃপক্ষ বলেন:
• আমি মানছি, সার্ভিস একটু খারাপ হয়েছে। অনেক নার্স কাজ ছেড়ে চলে গিয়েছে। এর জন্য মান কমেছে।
• মিস্টার ট্যান্ডন, কেন সার্ভিসের মান কমছে? কেন বিল বাড়ছে?
বেলভিউ কর্তৃপক্ষ বলতে উঠলেন
• মেশিন কিনেছেন, ভাল কথা, কিন্তু তার জন্য কত দিন বিল বেশি নিতে হয়!
• সোনার হাঁসটা তো প্রথম দিনেই কেটে ফেললে হয় না।
অ্যাপোলো হাসপাতালে সিইও রানা দাশগুপ্ত বলেন:
• তবে আমরা খরচ কমানোর চেষ্টা করব।
• অনেক সময় শেষ মুহূর্তে চিকিৎসা পরিষেবা দিতে গিয়ে বিল বেড়ে যায়। ক্রিটিক্যাল কেয়ার দিতে হয়।
• অনেক সময় ইমার্জেন্সি থাকলে রোগীকে বিনামূল্যেও চিকিৎসা দিয়েছি আমরা।
• ইমার্জেন্সি থেকে আমরা কাউকে ফেরত পাঠাই না।
• আমাদের অনেক প্রোটোকল থাকায় অনেক সময় হয়তো বিল বেড়ে যায়।
• আমরা দামি যন্ত্রাংশ ব্যবহার করি। সবচেয়ে ভাল পরিষেবা দেওয়ার চেষ্টা করি।
• আমরা চেষ্টা করব, প্রাথমিক চিকিৎসাটা সকলকে দিতে।
• অ্যাপোলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ সবচেয়ে বেশি। একটা ফাইভ স্টার হোটেলেও এত খরচ হয় না।
অ্যাপোলো হাসপাতালে সিইও রানা দাশগুপ্ত বলতে উঠলেন
• নার্সিংহোমেও ফেয়ারপ্রাইস শপ করা উচিত।
• পেট খারাপ হলে মাথা থেকে পায়ের নখ পর্যন্ত টেস্ট করানো হয়।
• স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের আওতায় অনেকেই আসতে চাইছেন না। কেন?
• জায়গার অভাব থাকলে মেঝেতেও জায়গা করে প্রাথমিক চিকিৎসা দিতে হবে।
• সরকার সাহায্য করলেও গরিবরা সেই সুযোগ পাচ্ছেন না।
• প্যাকেজে অস্ত্রোপচার করিয়েও ফের বড় অঙ্কের টাকার বিল ধরানো হচ্ছে।
• মানুষ তো চিকিৎসা করার আগেই মরে যাচ্ছেন।
• সহমর্মিতার পরিবর্তে মানসিক চাপ তৈরি করা হচ্ছে। চিকি়ৎসার খরতচ মেটাতে ঘটিবাটি বিক্রি করে দিতে হচ্ছে।
• অনেক সময় চিকিৎসকদের বাধ্য করা হচ্ছে, বেশি বিল ধরানোর জন্য।
• মৃতদেহ আটকে রাখা হচ্ছে।
• এক ওষুধ বার বার দেওয়া হচ্ছে।
• অপ্রয়োজনে আইসিইউ, ভেন্টিলেশন করে বিল বাড়ানো হয়েছে।
• সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, বিলবাড়ানো হয়েছে।
• রাজ্যে জীবনযাপনের মান খুব উঁচু নয়। এখানে দিল্লি-মুম্বইয়ের মতো এখানে চার্জ নেওয়া যায় না।
• এর মধ্যে ৩৩টি প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স বাতিল করা হয়েছে।
• বহু দিন থেকেই অভিযোগ পাচ্ছি। ৯৪২টা নার্সিং হোমে সমীক্ষা করা হয়েছে। এর মধ্যে ৯০টিকে শোকজ করা হয়েছে।
• বিল না দেওয়ায় মৃতদেহ আটকে রাখা হচ্ছে।
বেসরকারি হাসপাতালগুলির প্রতিনিধিদের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী —নিজস্ব চিত্র।
• লাভ করুন, তবে তা মাত্রাতিরিক্ত ভাবে নয়। না হলে এটা জল্লাদের জায়গা হয়ে যাবে।
• কে কোথায় চিকিৎসা করবে সেটা তাঁর স্বাধীনতা।
• জীবন বাঁচানোর জন্য ইন্ডাস্ট্রি এটা। ইট-কাঠ পাথরের নয়।
• সেবা বিক্রি হয় না। সেবা দিতে হয়।
• দেশের বাইরে থেকেও নেপাল, বাংলাদেশ থেকে অনেকে এখানে চিকিৎসার জন্য আসতেন। কিন্তু, এখন এখানে আসতে চাইছেন না। ভেলোরে চলে যাচ্ছেন।
• মাদার-চাইল্ড হাব করা হয়েছে। সরকারি হাসপাতালে বেড না পেলে অনেকেই বেসরকারি হাসপাতালে যান।
• কোথাও কোথাও ভিড় বেশি হচ্ছে। চিকিৎসা শেষে বিল না মেটানোয় চাপ দেওয়া হচ্ছে।
• উপস্থিত ছিলেন বেসরকারি হাসপাতালের প্রতিনিধিরা।
• বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল কাউন্সিলের প্রতিনিধিরা।
• বেসরকারি হাসপাতালের বিরুদ্ধে ক্ষোভ থাকতেই পারে। তবে আইন হাতে তুলে নেওয়া উচিত নয়।
• বেসরকারি হাসপাতালের ভূমিতা গুরুত্বপূর্ণ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy