কঠোর: প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার ব্যারাকপুরে। ছবি: প্রদীপ আদক
বীরভূম, হাওড়ায় দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব নিয়ে সুর চড়িয়ে নেতাদের ধমকেছিলেন। আর মঙ্গলবারে উত্তর ২৪ পরগনার প্রশাসনিক বৈঠকে ‘উপদল’ করা নেতা-নেত্রীদের রীতিমতো দাঁড় করিয়ে সতর্ক করে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
জেলায় জেলায় তৃণমূলের বিভিন্ন স্তরের নেতাদের খেয়োখেয়ি এবং তাকে ঘিরে অশান্তি বারেবারে বিড়ম্বনায় ফেলেছে তৃণমূল নেত্রীকে। কিন্তু তিনি যে আর এ সব চলতে দেবেন না, মঙ্গলবার ব্যারাকপুরে তা স্পষ্ট বুঝিয়ে দিলেন মমতা।
এর আগে প্রশাসনিক বৈঠকে গিয়ে বীরভূমে শাহনওয়াজ শেখ, অনুব্রত মণ্ডল বা হাওড়ায় গুলশন মল্লিক, শীতল সর্দারের মতো নেতাকে সমঝে দিয়েছিলেন। কিন্তু ব্যারাকপুরে মমতা-দাওয়াই কিছুটা ব্যতিক্রমী বলেই মনে করছেন তৃণমূল নেতৃত্ব। দলের একাংশের মতে, উত্তর ২৪ পরগনায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব সবচেয়ে বেশি। তাই এখানে অন্য দাওয়াই। প্রশ্ন, প্রশাসনিক বৈঠকে কেন দলের ঝগড়া বার বার টেনে আনছেন মুখ্যমন্ত্রী?
তৃণমূলের এক নেতার মতে, দল এখন ক্ষমতায়। গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব প্রভাব ফেলছে সরকারের কাজে। অফিসারদের সামনে দলীয় নেতাদের বকাবকি করে মমতা স্পষ্ট করে দিতে চান যে, প্রশাসন পরিচালনায় দলাদলির কোনও স্থান নেই।
আরও পড়ুন: জেদের জোরেই প্রথম অর্চিষ্মান
এ দিনও বৈঠকের মাঝে নেতা-বিধায়কদের দাঁড় করিয়ে শৃঙ্খলার পাঠ পড়িয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। যেমন পরশ দত্তকে তিনি প্রশ্ন করেন, ‘‘এখনও অর্জুন সিংহের সঙ্গে ঝগড়া করছেন?’’ পরশবাবু জানান, তাঁর সঙ্গে ভাটপাড়ার বিধায়কের কোনও ঝগড়া ছিল না, আজও নেই। অর্জুনবাবুও জানান, কোনও সমস্যা নেই।
বিধাননগর পুরসভার মেয়র সব্যসাচী দত্ত, চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তী ও ডেপুটি মেয়র তাপস চট্টোপাধ্যায়ের কাছে মুখ্যমন্ত্রীর প্রশ্ন ছিল, সব ঠিক চলছে কি না। মেয়র জানান, ‘অল ইজ ওয়েল’। মুখ্যমন্ত্রী প্রশ্ন করেন, কী রে কৃষ্ণা? চেয়ারপার্সন বলে ওঠেন, ‘‘হ্যাঁ দিদি, ডাকলে যাই।’’ ঝাঁঝিয়ে ওঠেন মুখ্যমন্ত্রী। আজকের দিনে কে কবে ডাকবে, তার জন্য বসে থাকলে চলবে না। তখন কৃষ্ণাদেবী বলেন, ‘‘আসলে আমি পুরসভার চেয়ারপার্সন, তাই না ডাকলে যেতে পারি না।’’ এর পরেই মমতা তাকান ডেপুটি মেয়রের দিকে। তাপসবাবু বলেন, ‘‘পুর এলাকায় বেশ কিছু পিছিয়ে পড়া ওয়ার্ড রয়েছে। সেখানকার জন্য বাড়তি নজর জরুরি।’’ মুখ্যমন্ত্রী বুঝে যান, সব ঠিক নেই। তিনি বলেন, ‘‘সবাইকে নিয়ে কাজ করুন। ঝগড়া করবেন না।’’
টিটাগড় ওয়াগন কারখানার গোলমালের বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী শীলভদ্র দত্ত আর অর্জুন সিংহকে সাবধান করেছেন। বসিরহাটে গরু পাচার সিন্ডিকেটের কারবারে যে তিনি বীতশ্রদ্ধ, তা-ও বুঝিয়ে দেন। সেখানের দুই নেতা নারায়ণ গোস্বামী, দীপেন্দু বিশ্বাসকে ‘ঠিক’ থাকতে বলেছেন। বসিরহাটের সাংসদ ইদ্রিশ আলিকে ধমকেছেন। বারাসত কলেজে গোলমালের জন্য পুর চেয়ারম্যান সুনীল মুখোপাধ্যায় এবং রথীন ঘোষকে সতর্ক করেছেন দলনেত্রী।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy