স্পর্শ: মুখ্যমন্ত্রীর হাত ছুঁতে হুড়োহুড়ি বাগডোগরায়। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
কোনও কাজ হয়েছে। কোনওটা আবার হয়নি। কোথাও জমি জটে থমকে রয়েছে প্রকল্প, কোথাও বা রাজনৈতিক চাপানউতোরে। সেই সব হিসেবই দেখবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, উত্তরবঙ্গের তিন সীমান্তবর্তী জেলার আধিকারিকদের নিয়ে প্রশাসনিক বৈঠকে। সরকারি ভাবে এই সভাকে ‘রুটিন’ বলে দাবি করা হলেও বিরোধীরা বলছেন, এ আসলে পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতি।
এই দাবির পিছনে যথেষ্ট কারণও রয়েছে। যে তিন জেলাকে নিয়ে কাল, বুধবার বৈঠক করবেন মমতা, সেগুলি হল— আলিপুরদুয়ার, কোচবিহার ও জলপাইগুড়ি। এর মধ্যে বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী জেলা কোচবিহারে শক্তি বাড়াতে শুরু করেছে বিজেপি। বছরখানেক আগে কোচবিহার লোকসভা কেন্দ্র থেকে উপনির্বাচনে জিতেছিলেন তৃণমূলের পার্থপ্রতিম রায়। কিন্তু লক্ষ্যণীয় ভাবে বামেদের পিছনে ফেলে দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছিলেন বিজেপির হেমচন্দ্র বর্মণ। এর পরে ছিটমহল আন্দোলনের নেতা দীপ্তিমান সেনগুপ্তও যোগ দেন গেরুয়া শিবিরে। বিজেপি রাজ্য নেতারাও ঘনঘন আসছেন এই জেলায়। আলিপুরদুয়ার, জলপাইগুড়ির চা বলয়েও প্রভাব বাড়ছে বিজেপির। মাদারিহাট বিধানসভাও তাদের।
সরকারি সূত্রের খবর, কোচবিহার ও জলপাইগুড়িতে এর মধ্যেই একাধিক গোষ্ঠী সংঘর্ষের ঘটনায় উন্নয়নের কাজ থমকেছে। একাধিক মামলাও হয়েছে। জলপাইগুড়ি ও আলিপুরদুয়ারের চা বলয়ে আদিবাসী, নেপালিভাষীদের একাংশকে সামনে রেখেও নানা গোলমালের ছক কষার অভিযোগও রয়েছে পুলিশ-প্রশাসন-পঞ্চায়েতের কাছে। তিন সীমান্ত জেলাকে একযোগে প্রশাসনিক বৈঠকে হাজির করে কড়া বার্তা দিতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী।
বুধবার উত্তরকন্যার বৈঠকে পুলিশ-প্রশাসনের জেলার প্রথম সারির সব অফিসার থেকে আইসি-ওসি, বিডিও, বিএলআরওদের হাজির থাকতে বলা হয়েছে। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিদের ও জেলা পরিষদের সদস্যকেও ডাকা হয়েছে।
বিরোধীরা মনে করছেন, পঞ্চায়েত ভোটের প্রস্তুতিই এই ভাবে শুরু করে দিচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। জলপাইগুড়ির জেলা কংগ্রেস সভাপতি নির্মল ঘোষদস্তিদার কিংবা আলিপুরদুয়ারের কংগ্রেস সভাপতি বিশ্বরঞ্জন সরকার মনে করেন, বৈঠকে জেলা পরিষদ ও পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতিদের ডাকা হয়েছে। কিন্তু, সমিতি ও জেলা পরিষদ স্তরে বিরোধী জনপ্রতিনিধিদের আনুষ্ঠানিক ভাবে ডাকা হয়নি।
যদিও মন্ত্রী বীন্দ্রনাথ ঘোষ দাবি করেছেন, ‘‘সব জেলা পরিষদ ও পঞ্চায়েত সমিতির মাধ্যমেই আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। অবান্তর সমালোচনাকে তাই গুরুত্ব দিচ্ছি না।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy