Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

বিদ্যুৎ থেকে বিজ্ঞাপনী কর, ‘মমতা’ সর্বত্রই

দুর্গাপুজো উদ্যোক্তাদের প্রতি আরও একটু দরাজ হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শহরের বড় পুজোগুলির জন্য এ বারও বিজ্ঞাপন বাবদ পুরসভাকে কোনও কর দিতে হবে না বলে জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। বিদ্যুৎ বিলে ছাড়ও ১৫ থেকে বাড়িয়ে ১৮ শতাংশ করা হয়েছে।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ৩১ অগস্ট ২০১৬ ০০:৩৭
Share: Save:

দুর্গাপুজো উদ্যোক্তাদের প্রতি আরও একটু দরাজ হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শহরের বড় পুজোগুলির জন্য এ বারও বিজ্ঞাপন বাবদ পুরসভাকে কোনও কর দিতে হবে না বলে জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। বিদ্যুৎ বিলে ছাড়ও ১৫ থেকে বাড়িয়ে ১৮ শতাংশ করা হয়েছে। আর ছোটখাটো পুজো কমিটি যাতে অর্থাভাবে না পড়ে, সে জন্য শহরের বড় বড় পুজো কমিটিকে এ বারও তাদের সাহায্য করার নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে কলকাতা ছাড়াও এ বার থেকে গ্রামবাংলার মহিলা পরিচালিত পুজো ও কম পুঁজির পুজোগুলিকে সাহায্য করতে নির্দেশ দেন জেলা প্রশাসনকে। এ দিনের সভা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সব জেলার পুলিশ ও প্রশাসনের কাছেও পৌঁছে যায়।

মহালয়ার ঠিক এক মাস আগে মঙ্গলবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে প্রতি বারের মতো শহরের পুজো কমিটির প্রতিনিধিদের নিয়ে প্রশাসনিক এবং সমন্বয় বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। শুধু দুর্গাপুজো কমিটি নয়, সভায় ছিলেন হিন্দু, মুসলিম, শিখ, জৈন এবং বৌদ্ধ ধর্মের প্রতিনিধিরাও। ছিলেন তাঁর মন্ত্রীসভার বেশ কয়েকজন সদস্য, যাঁরা আবার কলকাতার বিভিন্ন বড় পুজো কমিটির মূল উদ্যোক্তা। শুরুতেই কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমার জানিয়ে দেন, মুখ্যমন্ত্রী চান পুজোর অনুমতি দান পর্ব আরও সরল হোক। সেই মতো চালু হচ্ছে ‘আসান’ নামে একটি ওয়েব পোর্টাল। ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে ওই পোর্টালে পুজো উদ্যোক্তারা আবেদন করতে পারবেন। সব কিছু ঠিক থাকলে অনুমতিও মিলবে ওই পোর্টাল থেকে। এ জন্য কাউকে লালবাজার যেতে হবে না। একই ভাবে রাজ্যের অন্য জেলাগুলিতেও পুজো অনুমতির আবেদন সরল করার কথা জানান। এ দিন সভায় হাজির ছিলেন রাজ্য পুলিশের ডিজি সুরজিৎ কর পুরকায়স্থও।

পুলিশ কমিশনারের বক্তব্যের জের টেনে মুখ্যমন্ত্রী জানান, দুর্গাপুজোর সঙ্গেই রয়েছে মহরম। তাঁর কথায়, ‘‘মানুষকে ভালবাসতে জানতে হয়। এ সব অনুষ্ঠান শুধু প্রশাসন দিয়ে হয় না। স্থানীয় ক্লাব, ইমাম এবং সংবাদমাধ্যমেরও সাহায্য দরকার হয়।’’ কলকাতার পুজো সর্বত্র সমাদৃত হলেও এখন গ্রামবাংলার পুজোও অনেক ভাল হচ্ছে বলে জানান মমতা। তাই গ্রামবাংলার পুজোগুলিকেও পুরস্কৃত করার কথা জানান। প্রতি জেলায় ২৫টি করে কম পুঁজির এবং ২৫টি করে মহিলা পরিচালিত পুজোকে ১০ হাজার টাকা করে সাহায্য করার নির্দেশ দেন।

তবে পুজোয় যাতে কোনও গোলমাল না হয়, সে জন্য প্রতিটি পুজো কমিটিকে সজাগ থাকার নির্দেশ দিয়েছেন মমতা। এ প্রসঙ্গে তিনি গত বছর দেশপ্রিয় পার্কের ঘটনা তুলে বলেন, ‘‘আমাকে জানায়নি। রাস্তা আটকে গিয়েছিল। মানুষের চরম ভোগান্তি হয়েছিল। বেরোবার রাস্তা ছিল না।’’ এ বার তাঁর নির্দেশ ‘‘যে সমস্ত পুজো পুরসভার পার্কের মধ্যে হয়, তাদের পার্কের প্রতিটি গেট খুলে রাখতে হবে। এটা বাধ্যতামূলক। পুলিশ সব দেখে নেবে।’’ পুজোর মধ্যে মহরমের মিছিল বার হলে তার জন্য ব্যারিকেড করে আলাদা রাস্তা করে দেবে পুলিশ। যাতে কোনও অশান্তি না হয়, সম্প্রীতি বজায় থাকে।

এর পরেই মঞ্চে হাজির মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়, ফিরহাদ হাকিম, অরূপ বিশ্বাস, শোভন চট্টোপাধ্যায় ও জাভেদ খান এবং মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমার-সহ একাধিক বড় পুজোর উদ্যোক্তাদের আলাদা করে শহরের ছোট পুজোগুলিকে সাহায্য করার কথা বলেন। কেউ ২০টি, কেউ ১০টি কেউ বা ৫টি ছোট পুজো কমিটিকে সাহায্য করার প্রতিশ্রুতি দেন।

ঠিক সেই সময়ে সন্তোযপুরে এক মহিলা মাইক নিয়ে বলতে থাকেন ‘‘দিদি, আমাদের পুজো মহিলা পরিচালিত। আজ কাগজে (আনন্দবাজারে প্রকাশিত) দেখলাম আমাদের পুজো কমিটির নামে ১০ হাজার টাকা ছিল। কিন্তু আমরা জানতামই না। তাই পাইনি।’’ তা শুনেই মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘চেকের সময় তো তিন মাস পেরিয়ে গিয়েছে। এমন আরও ৯০টিরও বেশি ক্লাব চেক নেয়নি। পরে কাননের (কলকাতার মেয়র) সঙ্গে যোগাযোগ করে নেবেন।’’ মুখ্যমন্ত্রীকে একই অভিযোগ জানান রাজডাঙার এক মহিলাও। তিনি জানান কাগজ পড়েই জেনেছি। আগে কেউ খবর দেয়নি।

পরে মুখ্যমন্ত্রী কলকাতা পুলিশকে এ বারে জন্য ২৫টি মহিলা পুজো এবং ২৫টি কম পুঁজির পুজো কমিটিকে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়ার নির্দেশ দেন। কলকাতা পুরসভার ক্ষেত্রে কোটা প্রতিক্ষেত্রে ১০০টি করে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Mamata Banerjee Durgapuja Advertisement
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE