উত্তরের ৭ জেলায় ফের ছয়েই আপাতত আটকে থাকল মমতা-মন্ত্রিসভার ‘স্কোর।’
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তৃণমূল নেত্রী মন্ত্রিসভায় যে তালিকা ঘোষণা করেছেন, তাতে উত্তরবঙ্গ থেকে মন্ত্রীর সংখ্যা প্রথম দফায় ৬ জনই। বাম আমলে যেমন মন্ত্রিসভায় উত্তরের জেলাভিত্তিক প্রতিনিধিত্ব রাখা হতো, তৃণমূল জমানাতেও তার ব্যতিক্রম হয়নি। ২০১১ সালে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে তৃণমূল ১৫টি আসন জেতার পরে উত্তর থেকে ৬ জন মন্ত্রিসভায় ঠাঁই পেয়েছিলেন। সে সময়ে ৬টি জেলা ছিল উত্তরে। সেখানে সব জেলারই প্রতিনিধিত্ব ছিল। সে যাত্রায় গৌতম দেবকে একযোগে শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়ির প্রতিনিধি হিসেবেই সামনে রেখেছিল তৃণমূল। এ বার একক ভাবে লড়ে তৃণমূলের ঝুলিতে রয়েছে ২৪টি আসন। মালদহ ও দুই দিনাজপুর মিলিয়ে ৪ জন মন্ত্রী হেরেছেন। সেই জায়গায় উত্তরবঙ্গের নতুন ৫ জনকে মন্ত্রিসভায় জায়গা দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। সঙ্গে পুরনো দু’জন মানে গৌতম দেব ও বিনয় বর্মনও রয়েছেন। ফলে, তৃণমূলের যে শিবির আশা করেছিল, আসন সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় মন্ত্রীও বাড়তে পারে, তাঁদের অনেকেই কিছুটা নিরাশ।
দল সূত্রের খবর, বাম আমলে যেমন মন্ত্রিসভায় উত্তরবঙ্গের সব জেলার প্রতিনিধি রাখার রেওয়াজ দেখা যেত, সেই বিষয়টিকে সামনে রেখে বিরোধীরা আওয়াজ তুলতে পারে বলে তৃণমূলের অনেকে প্রদেশ নেতৃত্বকে জানিয়েছেন। তা মাথায় রাখতে হয়েছে খোদ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। মন্ত্রিসভার তালিকা ঘোষণার সময়ে তৃণমূল নেত্রীকে বলতে শোনা গিয়েছে, মালদহ থেকে কেউ না জেতায় কাউকে মন্ত্রিসভায় রাখা গেল না। তেমনই হল দার্জিলিং জেলা। যেখানে তৃণমূলের একজনও জিততে পারেননি। শিলিগুড়ির বাসিন্দা গৌতম দেব মন্ত্রী হলেও তিনি আদতে জলপাইগুড়ির ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির বিধায়ক। এর পরেই তৃণমূলের অন্দরে যে আলোচনা শুরু হয়েছে, বাম আমলে সাধারণত মন্ত্রীদের একই দফতরে বছরের পর বছর রাখাই রেওয়াজ হয়ে গিয়েছিল। তৃণমূল জমানাতেও সেই রীতি বজায় রাখা হবে কি না, সেটাই এখন দলের মধ্যে চর্চার অন্যতম বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। এমনকী, জেলা ভিত্তিক প্রতিনিধিত্ব নিয়েও উত্তরবঙ্গের ৭ জেলায় চলছে নানা আলোচনা, উঠছে নানাবিধ প্রশ্নও।
সাতে ছয়। উত্তরের জন্য আপাতত এটাই মমতা-মন্ত্রিসভার স্কোরলাইন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় রাজভবন থেকে বেরিয়ে এসে তৃণমূল নেত্রী মন্ত্রিসভার যে তালিকা ঘোষণা করেন, তাতে উত্তরবঙ্গের বরাতে সেই ছ’জনই। ২০১১ সালে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে ১৫টি আসনে জেতে তৃণমূল। সে বার গৌতম দেবকে একযোগে শিলিগুড়ি ও জলপাইগুড়ির প্রতিনিধি হিসেবেই সামনে রেখেছিল তৃণমূল। এ বার একা লড়ে ২৪টিতে। তবু আপাতত মন্ত্রীর সংখ্যা বাড়ল না। মালদহ ও দুই দিনাজপুর মিলিয়ে ৪ জন মন্ত্রী হেরেছেন। সেই জায়গায় উত্তরবঙ্গের নতুন ৪ জনকে মন্ত্রিসভায় জায়গা দিয়েছেন তৃণমূল নেত্রী। সঙ্গে পুরানো দুই, অর্থাৎ গৌতম দেব ও বিনয় বর্মন। ফলে, তৃণমূলের যে শিবির আশা করেছিল, আসন সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় মন্ত্রীও বাড়তে পারে, তাঁদের অনেকেই কিছুটা নিরাশ।
দল সূত্রের খবর, বাম আমলে মন্ত্রিসভায় উত্তরবঙ্গের সব জেলার প্রতিনিধি রাখার রেওয়াজ দেখা যেত। এই বিষয়টিকে সামনে রেখে বিরোধীরা আওয়াজ তুলতে পারে, এমন আশঙ্কার কথা তৃণমূলের অনেকেই শীর্ষ নেতৃত্বকে জানিয়েছিলেন। তা মাথায় রাখতে হয়েছে খোদ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও। মন্ত্রিসভার তালিকা ঘোষণার সময় তাঁকে বলতে শোনা গিয়েছে, মালদহ থেকে কেউ না জিতলে আমি কী করব! একই দশা দার্জিলিং জেলায়। সেখান থেকেও তৃণমূলের ঘরে শূন্য। শিলিগুড়ির বাসিন্দা গৌতম দেব মন্ত্রী হলেও তিনি আদতে জলপাইগুড়ির ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ির বিধায়ক। এর পরেই তৃণমূলের অন্দরে যে আলোচনা শুরু হয়েছে, বাম আমলে সাধারণত মন্ত্রীদের একই দফতরে বছরের পর বছর রেখে দেওয়াই রেওয়াজ ছিল। তৃণমূল জমানাতেও সেই রীতি বজায় রাখা হবে? এমনকী, কে কোন দফতর পেতে পারেন, তা নিয়েও জল্পনা তুঙ্গে। একনজরে সাত জেলার হাল-হকিকত খতিয়ে দেখলেন কিশোর সাহা।
উদ্বেগে দার্জিলিং
৬ আসনের মধ্যে পাহাড়ে ৩টি মোর্চা জিতেছে। সমতলে ১টি সিপিএম ও ২টি কংগ্রেস। খাতা খুলতে না পেরে তৃণমূলের জেলা নেতৃত্ব এখন লাগাতার ভর্ৎসনার মুখে পড়েছেন। শিলিগুড়ির পুরসভা, মহকুমা পরিষদ আগেই হাতছাড়া হয়েছে। এখন আর কোনও মন্ত্রীও রইল না। এই জেলায় দলের ভবিষ্যৎ আগামী দিনে কোন দিকে গড়াবে, উন্নয়নের গতি কত বাড়বে, তা নিয়ে তৃণমূল শিবিরও উদ্বেগে। বিরোধীদের আশঙ্কা, নানা কৌশলে পুরসভা, মহকুমা পরিষদ দখলের জন্য মরিয়া
হবে তৃণমূল।
কৌতূহলী মালদহ
এখানেও খাতা খুলতে পারেনি তৃণমূল। দুজন মন্ত্রী হেরেছেন। খোদ মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, ওখানে কেউ জেতেনি তো কী করব! এমতাবস্থায় কৃষ্ণেন্দু চৌধুরী, সাবিত্রী মিত্র, আবু নাসের খানরা কী ভাবে ঘুরে দাঁড়াতে পারেন, তা নিয়েই সরগরম মালদহ। এক জন মন্ত্রী না থাকায় জেলার উন্নয়ন কী ভাবে, কতটা হবে সেটা নিয়েও হাজারো কৌতূহল।
উচ্ছ্বাসিত কোচবিহার
৯টি আসনের মধ্যে ৮টি জিতেছে তৃণমূল। রবীন্দ্রনাথ ঘোষের এখন দুই হাতেই লাড্ডু। মন্ত্রিসভায় জায়গায় পেয়েছেন। আগের বনমন্ত্রী বিনয় বর্মনও থাকছেন। দল সূত্রেই জানা যাচ্ছে, সব ঠিক থাকলে প্রতিমন্ত্রীর সমমর্যাদা সম্পন্ন কোনও পদ পাওয়ার সম্ভাবনা উদয়ন গুহেরও। কোনও রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংস্থার চেয়ারম্যান হতে পারেন মিহির গোস্বামীও। ফলে, কোচবিহারকে আগামী দিনে ঠেকাবে কে— এমন উল্লাস দেখা যাচ্ছে সেখানকার তৃণমূল শিবিরেই।
দীপার তালুকে
ইসলামপুরের মন্ত্রী আব্দুল করিম চৌধুরী হেরেছেন। তাতে কী! ওই জেলায় দীপা দাশমুন্সির খাসতালুক মানে যেখান থেকে তিনি একদা বিধায়ক হয়েছিলেন, সেই গোয়ালপোখরের বিধায়ক গোলাম রব্বানিকে মন্ত্রী করেছেন তৃণমূল নেত্রী। আগামী দিনে রব্বানিকে সামনে রেখেই উত্তর দিনাজপুরে ঘর গোছানোর কৌশল ছকা হতে পারে, এমনই ভাবছেন তৃণমূলের অনেকে। দলের একাংশই মনে করছেন, প্রতিমন্ত্রীর সমমর্যাদা সম্পন্ন কোনও পদ মিলতে পারে অমল আচার্যের।
কোন্দল চিন্তায়
পূর্তমন্ত্রী শঙ্কর চক্রবর্তী হেরেছেন। বিপ্লব মিত্র, সত্যেন রায়ও পরাজিত হয়েছেন। কিন্তু, মন্ত্রিসভায় দক্ষিণ দিনাজপুরের তপনের বিধায়ক বাচ্চু হাঁসদা জায়গা পেয়েছেন। প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের চেয়ারম্যান বাচ্চুবাবু পেশায় শিক্ষক। তাঁকে হয়তো পর্ষদের পদ ছাড়তে হবে। সেই জায়গায় কে আসবেন, সেটা নিয়ে দক্ষিণ দিনাজপুরে ফের কতটা দলীয় কোন্দল হতে পারে, তাও চর্চার বিষয়।
জেমস মন্ত্রী, তবুও...
অনেকে ভেবেছিলেন, জেলা সভাপতি সৌরভ চক্রবর্তী মন্ত্রী হবেন। কিন্তু, অতিরিক্ত পুলিশ সুপারের পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে কুমারগ্রাম থেকে ভোটে জিতে আসা জেমস কুজুর মন্ত্রী হচ্ছেন। ফলে, সৌরভ অনুগামীদের অনেকেই হতাশ। কিন্তু, এখনও দুটি মন্ত্রীর পদ ফাঁকা রয়েছে। তাই তাঁরা এখনই আশা ছাড়তে রাজি নন।
সেই গৌতম-ভরসা
আগের তুলনায় জলপাইগুড়ি জেলার ফল ভাল হওয়ায় তৃণমূল শিবিরের অনেকেই আশায় বুক বেঁধেছিলেন। ভেবেছিলেন, মালবাজার, ময়নাগুড়ি কিংবা নাগরাকাটা থেকে কেউ ঠাঁই পেতে পারেন মন্ত্রিসভায়। কেউ পাননি। জলপাইগুড়ির প্রতিনিধিত্ব বলতে সেই গৌতম দেব। যিনি শিলিগুড়ি শহরের বাসিন্দা। কিন্তু, ভোটে দাঁড়ান জলপাইগুড়ির ডাবগ্রাম-ফুলবাড়ি থেকে। তৃণমূল শিবিরের অনেকের আক্ষেপ করে বলছেন, চা বলয়ে প্রভাব বাড়াতে তো বামেরা মন্ত্রিসভায় জলপাইগুড়ির প্রতিনিধিত্ব রাখতেন। তা হলে তৃণমূলের কেন থাকবে না? তাঁদের অনেকের আশা, তৃণমূল নেত্রী নিশ্চয়ই পরে তা বিবেচনা করবেন। কিন্তু আপাতত গৌতম দেবই ভরসা।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy