শাসক দল তৃণমূল এবং বিরোধী বিজেপি-র সংঘর্ষে বেশ কিছু দিন ধরেই উত্তপ্ত বীরভূমের পাড়ুই। সেখানে শান্তি ফেরানোর কথা বলতে গিয়ে সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের প্রসঙ্গ উঠে এল মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথায়। বোলপুরে মঙ্গলবার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মমতার হুঁশিয়ারি, নন্দীগ্রামের মতো গ্রাম দখলের অভিযান তিনি আর করতে দেবেন না। তাঁর এই মন্তব্য থেকেই ফের দেখা দিয়েছে নতুন বিতর্ক। নন্দীগ্রাম-কাণ্ডের সময়ে এমন কথাই শোনা যেত তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের কণ্ঠে! বিরোধীদের দাবি, এমন মন্তব্য করে আসলে নিজের অতীত আন্দোলনকেই নস্যাৎ করেছেন তৃণমূল নেত্রী। আর মমতার ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতৃত্বের ব্যাখ্যা, তাঁদের দলনেত্রীর ইঙ্গিত ছিল নন্দীগ্রামে সিপিএমের নেতৃত্বে ‘অপারেশন সূর্যোদয়ে’র দিকে।
শাসক দল হলেও পাড়ুইয়ে তৃণমূলের অনেক সমর্থক এখন ঘরছাড়া। তাঁদের ঘরে ফেরা ঘিরে সংঘর্ষ সংক্রান্ত একটি প্রশ্নের জবাবে মুখ্যমন্ত্রী এ দিন বলেন, ‘‘কোনও ভাড়াটিয়া গুন্ডার মস্তানি আমরা সহ্য করব না। আমি চাই, বীরভূমে শান্তি থাকুক। আরও একটা সিঙ্গুর-নন্দীগ্রাম অভিযানের মতো দখল করে গ্রাম অভিযান করতে দেব না!’’ তিনি জানান, পাড়ুইয়ে ঘরছাড়াদের ফেরানোর ব্যবস্থা প্রশাসন করবে।
মমতার মুখে সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের পুনরাবৃত্তি আটকানোর কথা শুনেই সরব হয়েছে বিরোধীরা। সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিমের মন্তব্য, ‘‘সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামে কী হয়েছিল, উনি ভালই জানেন! তাই এখন মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে সে সব না হতে দেওয়ার কথা বলছেন। কিন্তু এটা বলে উনি নিজের ‘ব্র্যান্ড’কে নিজেই অস্বীকার করলেন!’’ সিপিএম নেতারা বরাবরই অভিযোগ করে এসেছেন, জমি নেওয়া হবে না বলে ঘোষণার পরেও রামধনু জোট গড়ে এবং মাওবাদীদের সাহায্য নিয়ে নন্দীগ্রামে এলাকা দখল করতে চেয়েছিল তৃণমূল। তাই তাঁদের দাবি, ‘নন্দীগ্রামের মতো গ্রাম দখল করতে দেব না’ বললে তৃণমূলের অতীতের দিকেই আঙুল ওঠে! প্রদেশ কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নানও কটাক্ষ করেছেন, ‘‘সিঙ্গুর-নন্দীগ্রামের সেই রক্তঝরা দিনের খলনায়কেরা আজ ওঁর সব চেয়ে প্রিয়পাত্র! প্রায় সবাই মুখ্যমন্ত্রীর বদান্যতায় পুরস্কৃত।’’ তৃণমূলের এক প্রথম সারির নেতা অবশ্য পাল্টা বলছেন, ‘‘ঘরছা়ড়াদের ফেরানোর নামে নন্দীগ্রামে সিপিএমের তাণ্ডবের কথাই বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy