বিধাননগরের ভোটে দাপিয়ে বেড়ালো বহিরাগতরা।
এমন ভোট বিধাননগরে দেখিনি। সাংবাদিকতার তাগিদে শুধু নয়, শনিবার সকালে বিধাননগরের ভোট কেন্দ্রে যেতে হল ভোট দেওয়ার তাগিদেও। বহু বছর ধরে সল্টলেকের আইএ ব্লকের বাসিন্দা আমি। ছোট, বড় বিভিন্ন ভোটের সাক্ষী থেকেছি। পুর নির্বাচন ঘিরে এ দিন সকাল থেকে যা শুরু হয়েছে, তা নজিরবিহীন। সল্টলেক বহিরাগতদের দখলে চলে গিয়েছে। পুলিশ নেই বললেই চলে। তৃণমূলের প্রার্থীরা বৈধ ভোটারদেরই বহিরাগত আখ্যা দিয়ে বুথ থেকে তাড়ানোর চেষ্টায় মত্ত।
কোনও বুথে সকাল ৭টা থেকে, কোথাও তারও আগে থেকে বহিরাগতদের দাপাদাপি শুরু হয়েছে। যাঁদের বুথে দেখছি, তাঁদের আমি কোনওদিন দেখিনি। আমার পাড়ায় তো নয়ই, অন্যত্রও নয়। তাঁরা কেন বুথে এসেছেন, কোথা থেকে এসেছেন, সবই ধোঁয়াশা। আমি এক জনকে জিজ্ঞাসা করলাম, নাম কী, কোথা থেকে এসেছেন? তিনি বললেন, নাম রাজু দাস। ঠিকানা এসডি ব্লক। সল্টলেকে এই নামে কোনও ব্লকই নেই।
ভেঙে দেওয়া হয়েছে ইভিএম।—নিজস্ব চিত্র।
বড় বড় গাড়িতে করে সকাল থেকে সল্টলেকের সর্বত্র দাপিয়ে বেড়াচ্ছে বহিরাগত দুষ্কৃতীরা। গাড়িগুলিতে ঠেসে ঠেসে ১০-১২ জন করে লোক। বিভিন্ন বুথে হাজির হচ্ছে, গাড়ি থেকে নেমে বুথে ঢুকে পড়ছে, কেউ বাধা দেওয়ার নেই। বেশ কিছু নতুন অটো আমদানি হয়েছে দেখলাম। একদম নতুন অটো। নাম্বার প্লেট নেই, রুট নাম্বার নেই। সেই সব অটোতে করে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে দুষ্কৃতীরা। এবি-এসি, কেবি-কেসি, বিদ্যা ভবন, সুকান্তনগর, দত্তাবাদের একটা অংশ— সর্বত্র সকাল থেক এই দাপাদাপির ছবি। একটা পরিবেশ তৈরি করার চেষ্টা চলছে— সন্ত্রাসের পরিবেশ। সল্টলেকের মানুষ শান্তিপ্রিয়। সকাল থেকে যদি ভয়ের আবহ তৈরি করে দেওয়া যায়, তা হলে বৈধ ভোটারদের অনেকেই আর বুথমুখো হবেন না। সেই লক্ষ্যেই এই দাপাদাপি।
বিধাননগরের ভোটে পুলিশের ভূমিকা নীরব দর্শকের
অচেনা যুবক দেখিয়ে দিল কোথায় ভোট দিতে হবে
প্রার্থী না প্রতীক, কাকে বাছলেন তাপস ঘরণী গোপা?
সাংবাদিকদের বেধড়ক পেটাল তৃণমূলের গুন্ডারা
বহিরাগত তাণ্ডব, অবাধে ভোট লুঠল শাসক দল
বিরোধী দলগুলি এককাট্টা। সকলে মিলে বহিরাগতদের বুথে ঢোকার প্রতিবাদ করছেন। কিন্তু, পুলিশ নীরব। সশস্ত্র পুলিশ কোথাও নেই। লাঠি হাতে এক জন বা দু’জনকে বুথের সামনে দেখা যাচ্ছে। তাঁদের থাকা বা না থাকায় তেমন ফারাক নেই। আমার ওয়ার্ডের তৃণমূল প্রার্থী মিনু চক্রবর্তী হঠাৎ তৎপর হয়ে উঠলেন। দেখলাম কয়েকজনের দিকে তেড়ে যাচ্ছেন আর বলছেন, তাঁরা বহিরাগত। মিনু চক্রবর্তী যাঁদের দিকে তেড়ে গেলেন, তাঁরা সবাই বৈধ কার্ড সঙ্গে এনেছেন। কার্ড দেখালেনও। একই ঘটনা দেখলাম ৩৩ নম্বর ওয়ার্ডের এফডি ব্লকের বুথেও। সিপিএমের রমলা চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে এখানে তৃণমূলের প্রার্থী নীলাঞ্জনা মান্না। বুথে এসেই নীলাঞ্জনা কয়েক জনকে বহিরাগত আখ্যা দিয়ে তেড়ে গেলেন। দেখা গেল তাঁরাও সবাই বৈধ ভোটার। কিন্তু বিরোধীরা যাঁদের বহিরাগত বলে চিহ্নিত করছেন, পুলিশ তাঁদের পরিচয়পত্র দেখতে চাইছেই না। অতএব বুথে বুথে দাপট দেখাতে কোনও সমস্যা নেই।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy