নরেন্দ্র মোদীর জমানায় মাত্র ৫২.৫ কিলোমিটার সড়ক তৈরি করা সম্ভব হয়েছে পশ্চিমবঙ্গে। রাজ্যসভায় এক প্রশ্নের উত্তরে জাতীয় সড়ক ও সড়ক পরিবহণ মন্ত্রী নিতিন গড়কড়ী আজ এ কথা জানিয়েছেন। তাঁর মন্ত্রকের হিসেব বলছে, রাজ্যওয়াড়ি তালিকায় গুজরাত, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, এমনকী, অরুণাচলপ্রদেশও বাংলার চেয়ে অনেক এগিয়ে। সাড়ে তিন বছরে গুজরাতে রাস্তা হয়েছে ১ হাজার ৪৬৩ কিলোমিটার। মহারাষ্ট্র তালিকার সবচেয়ে উপরে, ১১ হাজার ৪৪৫.৩ কিলোমিটার।
অতীতে বারবারই অভিযোগ উঠেছে যে, জবরদখল হওয়া জমি উদ্ধার করতে না পারা, মামলার জট, ঠিকাদার সংস্থার কাজ ছেড়ে চলে যাওয়া— এমন বিভিন্ন কারণে পশ্চিমবঙ্গে এক দশক ধরে আটকে রয়েছে জাতীয় সড়ক সম্প্রসারণের কাজ। যদিও নবান্নের দাবি, এখন আর কোথাও জমির সমস্যা নেই। তবু পদে-পদে আসছে বিভিন্ন বাধা।
রাজ্যসভায় তৃণমূলের সাংসদ মানস ভুঁইয়া এ দিন জানতে চান, পশ্চিমবঙ্গে নতুন হাইওয়ে তৈরির কাজ কতটা এগিয়েছে? অন্যান্য রাজ্যেই বা কতটা অগ্রগতি কেমন। জবাবে ২৯টি রাজ্যের তালিকা দিয়েছে নিতিনের মন্ত্রক। তাতেই স্পষ্ট, পশ্চিমবঙ্গের অবস্থান প্রায় একেবারে নীচের দিকে। মানসের মতে, ‘‘এটা বঞ্চনার চূড়ান্ত।’’ তাঁর বক্তব্য, ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কে সমস্যা ছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তার অনেকটাই মিটিয়ে এনেছেন। কিন্তু কোলাঘাটে ৪১ নম্বর ও উত্তরবঙ্গে ৩১ ও ৩৫ নম্বর জাতীয় সড়কের কাজ কেন এগোচ্ছে না? রেলের ক্ষেত্রেও বঞ্চনা করা হচ্ছে। মেট্রোয় বরাদ্দ উল্টে কমছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নিজের রাজ্যে অকাতরে টাকা ঢালছেন, সড়ক উন্নয়নে পাশে থাকছেন গুজরাতের।
সরকারি তথ্যে দেখা যাচ্ছে ২০১৪-’১৫ এবং ২০১৬-’১৭— এই দুই আর্থিক বছরে কোনও সড়কই তৈরি হয়নি বাংলায়। ২০১৫-’১৬ সালে হয়েছে ৪৬ কিলোমিটার। চলতি আর্থিক বছরে এ পর্যন্ত নির্মাণ হয়েছে ৬.৫ কিলোমিটার।
কেন্দ্র এবং রাজ্য উভয় সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়ে থাকে, সড়ক পথে কলকাতা থেকে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে পৌঁছতে ৩৪ নম্বর জাতীয় সড়কই একমাত্র অবলম্বন। তাই এই রাস্তার উপরে চাপও বেশি। সেই কারণে যানজটের ফাঁসে পড়ে কোথাও পৌঁছতে দ্বিগুণ সময় লেগে যায়। সমস্যা সমাধানে এই রাস্তাকে চার লেন করার প্রস্তাব উঠেছিল বাম আমলে। জমির অভাবে তখন কাজ এগোয়নি। রাজ্যে পালাবদলের পরে নতুন করে তৎপরতা শুরু হয়। কিন্তু তাতেও সড়ক-সমস্যা কাটছে না রাজ্যের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy