নৃশংস ভাবে গলার নলি কাটা অবস্থায় গত বৃহস্পতিবার রাতে মিলেছিল দুই বোনের দেহ। নড়েচড়ে উঠেছিল বীরভূমের মহম্মদবাজার এলাকা। খুনের কিনারা করতে নেমে পুলিশের সন্দেহভাজনদের তালিকায় সামনের সারিতে যিনি, তিনি খুন হওয়া সুস্মিতা (১৫) আর পুষ্পিতার (১৩) জন্মদাত্রী মা।
নিজের সন্তানদের খুনের পিছনে কি মায়ের হাত খাকতে পারে! এই প্রশ্নে হতবাক ছিল মহম্মদবাজার এলাকার মানুষজন।
কিন্তু তদন্তের গতি-প্রকৃতি যে দিকে গড়াচ্ছে তাতে পুলিশের সন্দেহের তালিকার একেবারে শীর্ষেই রয়েছে মৃতা দুই বোনের মা অপর্ণা সাঁধুর নাম। শুক্রবার রাত থেকেই দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে তাঁকে। জেরা করা হচ্ছে মা অপর্ণা সাঁধুর এক পুরুষবন্ধু চণ্ডীচরণ লাহা এবং সবিতা মাহারা নামে এক গুরুমাকেও।
যদিও অপর্ণাদেবীর দাবি, সম্পত্তি নিয়ে বিবাদের জেরেই তাঁর দেওর ও জা মিলে তাঁর দুই মেয়েকে খুন করেছেন। কিন্তু জেরায় অপর্ণাদেবীর বয়ানে বেশ কিছু অসঙ্গতি রয়েছে। সেই কারণে অপর্ণাদেবীর কথায় সম্পূর্ণ ভাবে ভরসা করতে পারছে না পুলিশ। যদিও তদন্তের স্বার্থে মৃত সুস্মিতা ও পুষ্পিতার কাকা ও কাকিমাকে থানাতেই রাখা হয়েছে।
আরও পড়ুন:মাজদিয়া কলেজে অভিযুক্ত টিএমসিপি, শিক্ষক পেটানোর ট্র্যাডিশন চলছেই
একে অপরকে দোষারোপের জেরে তদন্ত ক্রমশই জটিল হয়ে উঠছে। তদন্তের সুবিধার্থে এ দিন সকালে দু’জন সিআইডি অফিসার সিউড়ি থানায় পৌঁছান। অপর্ণা সাঁধুর পুরুষবন্ধু এবং গুরু মা’কে জিজ্ঞাসাবাদ করেন তাঁরা।
পুলিশ সূত্রে খবর, অপর্ণাদেবীর এক বান্ধবী জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছেন, মাঝে মাঝেই অর্পণা বীরভূমের কুলিয়ার রাধাগোবিন্দ মন্দিরে এক গুরু মায়ের কাছে যেতেন। ঘটনার দিনও ওই গুরু মায়ের কাছ থেকে বাড়ি ফেরার পথে মোবাইলে তিনজন পুরুষের সঙ্গে কথা বলেন অপর্ণা। তাঁদের পরিচয় জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। মোবাইলের কল লিস্ট চেক করে তাঁদেরও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে পুলিশ।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বীরভূমের মহম্মদবাজার এলাকার বাড়ি থেকে উদ্ধার হয় দুই বোনের গলা কাটা দেহ। খুনের পিছনে কী কারণ সে সম্পর্কে কিছুই জানেন না বলে দাবি নিহত দুই বোনের বাবা দেবাশিস সাঁধুর। কিন্তু কাকা-কাকিমার অভিযোগ, বেশ কিছু দিন ধরেই অপর্ণাদেবীর সঙ্গে চণ্ডীচরণ লাহা নামে একজনের প্রণয়ের সম্পর্ক রয়েছে। সেই কথা দুই মেয়ে জেনে যাওয়াতেই এই খুন।প্রথমে আটক করা হলেও ছেড়ে দেওয়া হয়েছে ঠাকুমা, খুড়তুতো ভাই, গৃহশিক্ষক ও সুস্মিতার প্রেমিককে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy