Advertisement
১৯ মে ২০২৪

ঘরে ফিরলেন না সুভাষ, হাসপাতালে লড়াই সুনীতার

উদ্বেগ বদলে গিয়েছিল আশঙ্কায়। আশঙ্কা একটা সময়ে স্বস্তির চেহারা নেয়। সেই স্বস্তিও একটা সময় কেড়ে নিল পাহাড়। সোমবার সকালেই স্পষ্ট হয়ে গেল, এভারেস্ট অভিযানে গিয়ে আর ফিরে আসবেন না বাঁকুড়ার সুভাষ পাল।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৩ মে ২০১৬ ১২:১১
Share: Save:

উদ্বেগ বদলে গিয়েছিল আশঙ্কায়। আশঙ্কা একটা সময়ে স্বস্তির চেহারা নেয়। সেই স্বস্তিও একটা সময় কেড়ে নিল পাহাড়। সোমবার সকালেই স্পষ্ট হয়ে গেল, এভারেস্ট অভিযানে গিয়ে আর ফিরে আসবেন না বাঁকুড়ার সুভাষ পাল।

তুষারধস আর ভূমিকম্পে পর পর দু’বছর ধাক্কা খাওয়ার পর এভারেস্ট অভিযানের রুট খুলেছিল এই বছরই। গত শুক্রবার চার নম্বর ক্যাম্প থেকে এভারেস্ট শৃঙ্গের পথে চূড়ান্ত আরোহণ শুরু করেছিলেন তিনি। তার পর থেকে নিখোঁজ তালিকাতেই ঘুরে বেড়াচ্ছিল সুভাষের নাম। কোনও যোগাযোগ করা যাচ্ছিল না। একা সুভাষ নন, ব্যারাকপুরের গৌতম ঘোষ, দুর্গাপুরের পরেশ নাথ, বারাসতের অভিযাত্রী সুনীতা হাজরারও কোনও খোঁজ মিলছিল না। কিন্তু, এ দিন সকালে সুনীতাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়েছে কাঠমান্ডুতে। নর্বিক হাসপাতালে গুরুতর জখম অবস্থায় সুনীতা জানিয়েছেন, ক্যাম্প ফোর থেকে থ্রি-তে পৌঁছনোর আগেই স্তব্ধ হয়েগিয়েছিলেন সুভাষ। অথচ তখনও ক্যাম্প থ্রি পেরিয়ে ক্যাম্প টু-তে পৌঁছনো বাকি। এই ক্যাম্প টু পর্যন্তই হেলিকপ্টার যায়। সুনীতার ডান হাত তুষার ক্ষতে (ফ্রস্ট বাইট) ভয়ানক ভাবে আক্রান্ত। তবে এ দিন বিকেলে চিকিত্সকেরা জানিয়েছেন, সুনীতা আপাতত বিপন্মুক্ত।

এভারেস্ট বেসক্যাম্প থেকে ‘হিমালয়ান রেসকিউ অ্যাসোসিয়েশন’ (এইচআরএ) এর আগে দাবি করেছিল, সুনীতা ও সুভাষকে ক্যাম্প ফোর থেকে নামানোর চেষ্টা করছেন শেরপারা। তাঁদের শারীরিক অবস্থা বেশ খারাপ। তুষার ক্ষতে (ফ্রস্ট বাইট) আক্রান্ত হয়েছেন তাঁরা। একই ভাবে আক্রান্ত তাঁদের সঙ্গী শেরপাও। ফলে স্বাভাবিক ভাবেই খুব শ্লথ গতিতে নীচে নামার চেষ্টা করছেন তাঁরা। সেই নামার পথেই ক্যাম্প থ্রি, টু পেরিয়ে সুনীতা এখন কাঠমান্ডুর হাসপাতালে। পথে প্রকৃতির সঙ্গে যুঝতে যুঝতে শেষ পর্যন্ত আর নামতে পারলেন না সুভাষ। আট হাজার মিটার উচ্চতায় যতই সময় গড়ায়, ততই ভয় বাড়ে। তুষার ক্ষত এড়ানো অসম্ভব হয়ে পড়ে। উচ্চতা-জনিত অসুস্থতাতেও আক্রান্ত হন অভিযাত্রীরা।

আরও পড়ুন
উৎকণ্ঠা বাড়িয়ে এখনও নিখোঁজ দুই

ছন্দা গায়েন, রাজীব ভট্টাচার্যদের পর এ বার সুভাষ পাল। তালিকায় জুড়ে যেতে পারে আরও দু’টি নাম। আর মৃত্যুর এই মিছিল প্রশ্ন তুলে দিচ্ছে অনেকগুলো। তার মধ্যে অন্যতম, যাঁরা এই সব অভিযানে যাচ্ছেন তাঁরা নিজেদের শারীরিক সক্ষমতা নিয়ে সচেতন তো? প্রতিকূল পরিস্থিতি সহ্য করার মতো মানসিক দৃঢ়তা আছে তো তাঁদের? অভিজ্ঞ পর্বতারোহীদের অনেকেই জানাচ্ছেন, ইদানীং অভিযাত্রীরা অভিযানের খরচ জোগাড় করতে গিয়েই নিজেদের শারীরিক যত্ন তেমন ভাবে নিতে পারেন না। অভিযাত্রীদের নিজেদেরই সে ব্যাপারে আরও সচেতন থাকা উচিত। পাহাড় কোনও খামখেয়ালিপনা পছন্দ করে না, কথাটা আবার মনে করিয়ে দিচ্ছেন তাঁরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE