প্রায় আড়াই যুগ আগে একটি তদন্ত কমিশন গড়া হয়েছিল। সেটি অবৈধ ঘোষিত না-হওয়া সত্ত্বেও বিজন সেতুতে আনন্দমার্গীদের পুড়িয়ে মারার তদন্তে ২০১২-য় নতুন কমিশন বসায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার।
একই ঘটনায় এ ভাবে দ্বিতীয় বার কমিশন বসানোর এক্তিয়ার রাজ্য সরকারের আছে কি না, সেই প্রশ্ন তুলে সোমবার কলকাতা হাইকোর্টে একটি মামলা দায়ের করেছেন রাজ্যের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা সিপিএম নেতা কান্তি গঙ্গোপাধ্যায়।
কান্তিবাবুর আইনজীবী অরুণাভ ঘোষ ও জয়ন্তনারায়ণ চট্টোপাধ্যায় জানান, আনন্দমার্গীদের পুড়িয়ে মারার ঘটনা ঘটে ১৯৮২ সালে। সেই সময় পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত ভাবে মামলা দায়ের করে তদন্ত শুরু করে। পরে তদন্তে নামে সিআইডি-ও। সেই ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবি তুলে বেশ কিছু দিন কংগ্রেসের বিধায়কেরা বিধানসভা বয়কট করায় তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী জ্যোতি বসু হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি সমরেন্দ্রচন্দ্র দেবকে চেয়ারম্যান করে একটি কমিশন গঠন করেছিলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার ওই একই ঘটনার তদন্তের জন্য কমিশন গঠন করে ২০১২ সালের অক্টোবরে বিজ্ঞপ্তি জারি করে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, দেব কমিশন তদন্ত করে কী রিপোর্ট দিয়েছিল, সেটা সরকারের জানা নেই। তাই ফের কমিশন গড়া হচ্ছে। নতুন কমিশনের চেয়ারম্যান করা হয় কলকাতা হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি অমিতাভ লালাকে। লালা কমিশন গত জানুয়ারিতে কান্তিবাবুর কাছে সমন পাঠায়। কান্তিবাবু কমিশনে হাজিরও হন।
এ দিন মামলার আবেদনে কান্তিবাবুর আইনজীবীরা মূলত তিনটি বক্তব্য তুলে ধরেন।
• এই ধরনের ঘটনায় এক বার কমিশন গড়া হলে সেটিকে অবৈধ ঘোষণা না-করা পর্যন্ত দ্বিতীয় কোনও কমিশন গঠন করা যায় না। এ ক্ষেত্রে জ্যোতি বসুর আমলের দেব কমিশনকে অবৈধ ঘোষণা করা হয়নি।
• সিআইডি ওই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত শেষ করে আদালতে চার্জশিট পেশ করেছিল। নিম্ন আদালতে সাজাও হয়েছিল কয়েক জন অভিযুক্তের। সিআইডি নিম্ন আদালতের রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে উচ্চ আদালতে আপিল করেনি। আপিল করা হয়নি আনন্দমার্গীদের পক্ষ থেকেও।
• এই অবস্থায় নতুন তদন্ত কমিশনে ডেকে তাঁদের মক্কেলকে সিআইডি বা আনন্দমার্গীদের তরফে জেরা করার কোনও আইনি অধিকার নেই বলে দাবি করেন কান্তিবাবুর আইনজীবীরা। তাঁদের অভিযোগ, কান্তিবাবু নতুন কমিশনে যান। কিন্তু কমিশনের চেয়ারম্যানের বদলে তাঁকে জেরা করেন সিআইডি এবং আনন্দমার্গীদের আইনজীবীরা। এটা আইনবিরুদ্ধ।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy