সম্মেলন: উত্তরবঙ্গের শিল্প সম্মেলনে মঞ্চে হাজির মন্ত্রীরা। কিন্তু এ বার বিনিয়োগের সুনির্দিষ্ট প্রস্তাব এল না। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক।
শিল্প-ও এল না শিল্পমন্ত্রীও এলেন না। গত দু’বছরে উত্তরবঙ্গে দু’টি শিল্প সম্মেলনে একবার ১৩০০ কোটি এবং একবার ১৭০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের বিভিন্ন প্রস্তাব এসেছিল। তবে এ বছর সুনির্দিষ্ট কোনও প্রস্তাবই কেউ দিলেন না। মঙ্গলবার শিলিগুড়ির মাল্লাগুড়িতে একটি অভিজাত হোটেলে ‘নর্থবেঙ্গল কনক্লেভ’ নামে ওই শিল্প সম্মেলন হয়। অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের আসার কথা থাকলেও তিনি অসুস্থার কারণে আসতে পারেননি বলে জানানো হয়।
উপস্থিত ছিলেন পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব এবং উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। হাজির ছিলেন বাংলাদেশের ২০ এবং ভূটানের ৫ জন প্রতিনিধি। এমএসএমই এবং রাজ্য শিল্প পরিকাঠামো উন্নয়ন নিগমের আধিকারিক, উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলাগুলো থেকে শিল্পোদ্যোগী একাংশ। বাংলাদেশ থেকে আসা প্রতিনিধি দল দার্জিলিংয়ের চা রফতানি নিয়ে উৎসাহী। তাঁরা উত্তরবঙ্গে বিনিয়োগও করতে চান বলে জানান বাংলাদেশের রংপুর চেম্বার অব কমার্সের সচিব মোস্তাফা সোহরব চৌধুরী। তবে কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমোদন বা সেই ব্যবস্থা না-থাকলে তা সম্ভব নয়। কেন্দ্রীয় সরকারের কোনও দফতরের প্রতিনিধিও এ দিন ছিলেন না।
মঞ্চে জনা তিনেক শিল্পোদ্যোগীর দুই জন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তৈরির ক্ষেত্রে এবং এক জন কর্ম সংস্থানমূলক প্রশিক্ষণের জন্য কেন্দ্র গড়তে বিনিয়োগের কথা জানান। তবে সামগ্রিক ভাবে এ দিন সম্মেলনে শিল্প কারখানা গড়ার ক্ষেত্রে সেই অর্থে কোনও বিনিয়োগের প্রস্তাব আসেনি। অর্থমন্ত্রীর না থাকা এবং বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে যোগাযোগের অভাবের জন্য তা ঘটেছে বলে সংগঠকদের অন্যতম কনফেডারেশন অব ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রিজের কর্মকর্তাদের একাংশ মনে করছেন।
পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গের পরিকাঠামো উন্নয়নে জোর দিয়েছেন। শেষ শিল্প সম্মেলনে ১৭০০ কোটি টাকা বিনিয়োগের কথা ঘোষণা হয়েছিল। আমরা নজর রাখছি বস্তবে কতটা হল। উদ্যোগীদের একাংশ বিনিয়োগ করেননি কেন? শিল্পোদ্যোগীদের কোথায় সমস্যা হচ্ছে জেনে তা দূর করতে সচেষ্ট হব।’’ পর্যটনমন্ত্রী জানান, অর্থ এবং শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্রের আসার কথা থাকলেও শারীরিক অসুস্থতার কারণে আসতে পারেননি। তবে এ দিন ফোনে তাঁর সঙ্গে কথা হয়েছে। পর্যটনমন্ত্রী বলেন, ‘‘বিষয়টি তিনি দেখতে বলেছেন। যাঁরা বিনিয়োগ করবেন বলেছিলেন তাদের নিয়ে আলাদা করে বৈঠক করার কথা জানিয়েছেন। সেখানে উদ্যোগীদের সমস্যার কথা শোনা হবে।’’
রাজ্য সরকার তথা শিল্প পরিকাঠামো উন্নয়ন নিগম এবং সিআইআই-এর উদ্যোগে এদিনের শিল্প সম্মেলন। সিআইআই-এর উত্তরবঙ্গ আঞ্চলিক শাখার চেয়ারম্যান রাজীব লোচন বলেন, ‘‘কোনও প্রস্তাব এ দিন সে ভাবে নথিভুক্ত হয়নি। তবে বিনিয়োগ টানতে এই সম্মেলন প্রস্তুতির কাজ করবে।’’ তার দাবি আগে দু’টি শিল্প সম্মেলনে যে চার হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছিল তার মধ্যে কমবেশি এক হাজার কোটি বিনিয়োগ হয়েছে। উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী জানান, বাংলাদেশ-বাগডোগরা বিমান যোগাযোগের জন্য চেষ্টা হচ্ছে। হলদিবাড়ি-চিলাহাটি, ভারত-বাংলাদেশের রেল যোগাযোগও পুনরায় চালুর চেষ্টা হচ্ছে বলে জানান মন্ত্রী। পর্যটনে প্রসারে এই রাজ্যের সঙ্গে যৌথভাবে কিছু করতে চান বলে বাংলাদেশ এবং ভূটানের প্রতিনিধিরা এদিন তাঁদের ইচ্ছের কথা জানিয়েছেন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy