Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

সুচ বার করতে অস্ত্রোপচার

সম্প্রতি পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে জ্বর, সর্দি, কাশির উপসর্গ নিয়ে ভর্তি করানো হয় সাড়ে তিন বছরের মেয়েটিকে। তাকে পরীক্ষা করতে গিয়ে ডাক্তারেরা দেখেন একরত্তি শরীরে অনেক ক্ষত।

অস্ত্রোপচারের আগে দেহে বিঁধে থাকা সূচ। —ফাইল চিত্র।

অস্ত্রোপচারের আগে দেহে বিঁধে থাকা সূচ। —ফাইল চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা ও পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৭ ০২:৩২
Share: Save:

পুরুলিয়ার নির্যাতিত শিশুকন্যার শরীরে বিঁধে থাকা সুচ বার করতে অস্ত্রোপচার হতে পারে আজ, মঙ্গলবার। তবে সোমবার বিশেষ ভাল ছিল না মেয়েটি। এসএসকেএম হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, হিমোগ্লোবিন কম থাকায় তাকে রক্ত দেওয়া হচ্ছে। হাসপাতালের সুপার মণিময় বন্দ্যোপাধ্যায় সোমবার বলেন, ‘‘শিশুটির শরীর থেকে সুচগুলো কত তাড়াতাড়ি, কী উপায়ে বার করা যায়— ডাক্তারেরা দেখছেন।’’

সম্প্রতি পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে জ্বর, সর্দি, কাশির উপসর্গ নিয়ে ভর্তি করানো হয় সাড়ে তিন বছরের মেয়েটিকে। তাকে পরীক্ষা করতে গিয়ে ডাক্তারেরা দেখেন একরত্তি শরীরে অনেক ক্ষত। পুরুলিয়া সদর হাসপাতালের সুপার শিবাশিস দাস বলেন, ‘‘শিশুটির ‘ব্যাটার্ড বেবি সিনড্রোম’ ছিল। নির্যাতন করা না হলে ওই ধরনের ক্ষত হওয়ার কথা নয়।’’ মেয়েটির মা এই ব্যাপারে মুখ না খোলায় গড়া হয় মেডিক্যাল বোর্ড। এক্স-রে প্লেটে ডাক্তারেরা দেখেন, বাচ্চাটির কিডনি, লিভার, খাদ্যনালীতে বিঁধে রয়েছে সাতটি ইঞ্চি চারেকের সুচ!

সেই সুচ কী ভাবে বার করা হবে, তা নিয়ে আলোচনা করতে এ দিন সকালে এসএসকেএম হাসপাতালের সব ক’টি বিভাগের প্রধানেরা একটি বৈঠক করেন। তাতেই অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত হয়। মেয়েটির সঙ্গে শুধু তার মা-কে থাকার অনুমতি দিয়েছেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

পুরুলিয়া মফস্সল থানার নদিয়াড়া গ্রামের বছর বাষট্টির সনাতন গোস্বামীর (ঠাকুর) বাড়িতে মেয়েকে নিয়ে থেকে মাসখানেক ধরে পরিচারিকার কাজ করছিলেন ওই শিশুর মা। স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই বৃদ্ধ নাম সংকীর্তন করত। এলাকায় দাবি করত, সে ‘ঝাড়ফুঁক, বশীকরণ’ জানে। সে-ই ওই শিশুর উপরে অত্যাচার করেছে বলে চাইল্ডলাইনের কর্মীদের কাছে মেয়েটির মা অভিযোগ করেন।

সনাতন এখনও অধরা। তার বাড়ির লোক, পড়শি ও পরিচিতদের সঙ্গে কথা বলে পুলিশ মনে করছে, সনাতন ঝাড়খণ্ডেই গা ঢাকা দিয়ে থাকতে পারে। সেই সূত্রে ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন থানা এলাকায় তল্লাশি চালানো হচ্ছে। পুরুলিয়ার পুলিশ সুপার জয় বিশ্বাস বলেন, ‘‘সব রকম চেষ্টা চলছে। অভিযুক্ত ধরা পড়বেই।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE