অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার দাবি স্পিকার মানতে রাজি না হওয়ায় বিধানসভার অধিবেশন বয়কটের সিদ্ধান্ত নিল বিরোধী বাম ও কংগ্রেস। পরিবর্তে তারা আজ, শুক্রবার থেকে কক্ষের বাইরে বিধানসভা চত্বরে নকল অধিবেশন বসাবে।
সরকারের বিরুদ্ধে যৌথ ভাবেই অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিলেন কংগ্রেস ও বাম বিধায়কেরা। প্রশ্নোত্তর-পর্বের পরে এ দিন বিরোধীরা অনাস্থার প্রসঙ্গ তুলতেই তা নাকচ করে দেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। হইচই করতে করতে ওয়েলে নেমে পড়েন দুই বিরোধী দলের বিধায়কেরা। অধিবেশন মুলতবি করে দেন স্পিকার। তখন বাইরে বেরিয়ে বিক্ষোভ দেখান বিরোধীরা। বিরোধী দলনেতা জানিয়ে দেন, সরকার পক্ষের এই স্বৈরাচারী মনোভাবের প্রতিবাদে তাঁরা চলতি অধিবেশন বয়কট করবেন। নির্ধারিত কার্য উপদেষ্টা (বিএ) কমিটির বৈঠক এ দিন বাতিল হয়ে যাওয়ায় চলতি অধিবেশনের আর বাকি আছে দু’দিন। সেই সময়ে তাঁরা বাইরে নকল অধিবেশন করে প্রতিবাদ চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন বাম পরিষদীয় নেতা সুজন চক্রবর্তী।
স্পিকার অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আলোচনার দাবি খারিজ করে দেওয়ায় বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান বলতে থাকেন, ‘‘বলা হচ্ছে, ছ’মাসের মধ্যে দু’বার অনাস্থা প্রস্তাব আনা যাবে না। কিন্তু অতীতে ২০০২ সালে বর্তমান সরকারের বিদ্যুৎমন্ত্রী ছ’মাসের মধ্যে দু’বার অনাস্থা প্রস্তাব এনেছিলেন। এখন ক্ষমতায় বসে তাঁরাই প্রস্তাব আটকাচ্ছেন। বিদ্যুৎমন্ত্রীকে প্রশ্ন করছি, সে দিনের ঘটনা সত্য কি না জানান!’’ বিরোধী দলনেতাকে থামতে বলে অধ্যক্ষ বলেন, ‘‘সাবমিশন টাইম হাতে নেই। তাই স্থগিত (উইথহেল্ড) করছি।’’
পরে বিরোধী দলনেতা বলেন, ‘‘আমাদের আনা অনাস্থায় ওদের সরকার তো পড়ে যেত না। তবুও প্রস্তাবে যে অভিযোগ তোলা হত, তা খণ্ডন করতে পারবে না বলেই ভয় পেয়ে তা বাতিল করা হল। আসলে পরোক্ষে ওরা নৈতিক পরাজয় স্বীকার করে নিল!’’ বিধানসভার কার্যবিধি খুলে বিরোধী দলনেতা দেখিয়েছেন, অনাস্থা প্রস্তাব উত্থাপনের ১০ দিনের মধ্যে তা নিয়ে আলোচনা করা যায়। স্পিকার চাইলে এ দিনই বা আজও আলোচনা করতে দিতে পারতেন। এ বারের অধিবেশনে এমনিতেই তেমন কোনও কার্যসূচি নেই। একটা-দু’টো করে বিল পাশ করিয়ে বেলা আড়াইটে-তিনটের মধ্যে অধিবেশন শেষ হয়ে যাচ্ছে। যেমন, আজ কার্যসূচিতে রয়েছে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে একটি বিলের উপরে এক ঘণ্টার আলোচনা। বিরোধীদের প্রশ্ন, অনাস্থা নিয়ে আলোচনা করতে দিলে কী ক্ষতি হতো? প্রতিবাদ জানানোর জন্য নকল অধিবেশনে মুখ্যমন্ত্রীর ভূমিকায় দেখা যাবে সিপিএম বিধায়ক জাহানারা খানকে। স্পিকার সাজবেন প্রাক্তন মন্ত্রী বিশ্বনাথ চৌধুরী। অর্থমন্ত্রী কংগ্রেসের ফিরোজা বেগম। ‘নারদ-মন্ত্রী’ হিসাবেও থাকবেন কংগ্রেসের জনাকয়েক বিধায়ক!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy