মাসখানেক আগেই রাজ্য সরকার হাইকোর্টে জানিয়ে দিয়েছিল, আগামী ১৪ মে মুর্শিদাবাদের ডোমকল-সহ সাতটি পুরসভায় ভোট হবে।
এ নিয়ে ইতিমধ্যে সর্বদল বৈঠক হয়ে গিয়েছে। শুরু হয়ে গিয়েছে ভোট গ্রহণের খুঁটিনাটি প্রস্তুতিও। মু্খ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সেই ডোমকলে গিয়ে বুধবার প্রশাসনিক সভা করায় রাজ্য নির্বাচন কমিশনের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন বিরোধীরা। তাঁদের দাবি, মমতা যাতে সরকারি দান-খয়রাতি দিয়ে ভোটারদের মন জয় করতে পারেন, সেই সুযোগই করে দিয়েছে নির্বাচন কমিশন।
এ দিনই রাজ্য নির্বাচনের কমিশনে গিয়ে কমিশনারের সঙ্গে দেখা করেন সিপিএমের রবীন দেব। তাঁর বক্তব্য, ভোটের অন্তত ৩৫ দিন আগে বিজ্ঞপ্তি জারি করতে হয়, যা এ ক্ষেত্রে করা হয়নি। বস্তুত, গত ১৪ মার্চ হাইকোর্টে পুরভোটের দিনক্ষণ জানিয়ে রাজ্য সরকার বলেছিল, ১৭ এপ্রিল বিজ্ঞপ্তি জারি হবে। রবীনবাবুর দাবি, ‘‘এটাই বেনিয়ম। সোমবার সর্বদল বৈঠকের পরেই তো বিজ্ঞপ্তি জারি করে দেওয়া যেত। নির্বাচন কমিশনার জানান, মুখ্যসচিব তাঁকে ১৩ তারিখের আগে বিজ্ঞপ্তি দিতে নিষেধ করেছেন।’’
কংগ্রেস নেতা আব্দুল মান্নানের টিপ্পনী, ‘‘সকলে মীরা পান্ডে হন না! কিন্তু নির্বাচন কমিশনকে এমন জো-হুজুর হতে আগে দেখিনি।’’ তাঁর দাবি, রাজ্য সরকার যেহেতু হাইকোর্টে ভোটের দিন জানিয়ে দিয়েছে, কার্যত ভোট ঘোষণা হয়ে গিয়েছে। নির্বাচনী কার্যবিধি বলবৎ হয়ে যাওয়ার কথা। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘নির্বাচন যদি ঘোষণা না হয়েই থাকে তো গত সোমবার সর্বদল বৈঠক হল কী করে? পরিদর্শকদের প্রশিক্ষণই বা শুরু হল কী করে? মুখ্যমন্ত্রী সরকারি টাকায় ভোট প্রচার করবেন বলে সব চেপে যাওয়া হল?’’
আরও পড়ুন: হেফাজতে নিয়েই কি নারদ তদন্ত
প্রশাসনিক সভা হলেও মমতার বক্তৃতায় এ দিন বারবার ভোটের কথা এসেছে। মঞ্চ থেকেই তিনি বলেছেন, ‘‘ডোমকলের মানুষ, নতুন করে যখন নির্বাচন হবে, উন্নয়নের জন্য ভোট দেবেন। ধর্মনিরপেক্ষতার জন্য ভোট দেবেন।’’ মুসলিম অধ্যুষিত ডোমকল কেন্দ্রে গত বিধানসভা ভোটে কংগ্রেস-সিপিএমের অঘোষিত রফার সামনে পরাস্ত হয়েছিলেন তৃণমূলের সৌমিক হোসেন। সে প্রসঙ্গ তুলে মমতা বলেন, ‘‘বিধানসভা ভোটের সময়ে আমি এসেছিলাম, সৌমিককে জেতাতে পারিনি। কিন্তু তার পরেও ডোমকলে উন্নয়ন হয়েছে।’’
বিধানসভা ভোটের পর থেকেই মুর্শিদাবাদে ক্রমশ প্রতিপত্তি বাড়িয়ে চলেছে তৃণমূল। মমতা বলেন, ‘‘এই জেলায় মাত্র চার জন ভোটে জিতে আমাদের জনপ্রতিনিধি হয়েছেন। তার পরেও একের পর এক উন্নয়ন হয়েছে। আমরা ভোটের জন্য উন্নয়ন করি না, মানুষের জন্য করি।’’
রবীনবাবুর কটাক্ষ, ‘‘ঠিক সময়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হলে মুখ্যমন্ত্রী মানুষকে লোভ দেখানোর এই সুযোগ পেতেন কী করে?’’ প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীও বলেন, ‘‘লোভ দেখিয়েই দলে লোক টানতে চাইছেন তৃণমূল নেত্রী। ডোমকলে সেটাই বেআব্রু হয়ে গেল!’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy