তাঁর পিতৃপুরুষের বাড়ি সাতক্ষীরা, মামার বাড়ি খুলনায়। জানালেন, বাংলাদেশের মাটিতে পা দিলেই তাই অনুভব করেন নাড়ির টান। ঘড়ির কাঁটা ধরে ৫৫ ঘণ্টার ঝোড়ো সফরে ঢাকায় এসেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। শেখ হাসিনার দল আওয়ামি লিগের জাতীয় সম্মেলনে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতিনিধি হয়ে। ভারত থেকে এসেছিলেন বিজেপি, কংগ্রেস, সিপিএম, অগপ মিলিয়ে নানা দলেন মোট ২৬ জন প্রতিনিধি। ভিন্নমতের এতগুলি রাজনৈতিক দল এ ভাবে সাড়া দেওয়ায় আপ্লুত আওয়ামি লিগের তরফে বিদেশি অতিথিদের দেখভালের দায়িত্বে থাকা প্রাক্তন বিদেশমন্ত্রী দীপু মণি। কিন্তু পার্থবাবুর মতো দলের গুরুত্বপূর্ণ নেতাকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঢাকা পাঠানোয় একটু যেন বেশি উজ্জ্বল তাঁর চোখমুখ। বাংলাদেশ নিয়ে কি মনোভাব বদলাচ্ছে? তিস্তা নিয়ে কি নরম হচ্ছে রাজ্য সরকার? পার্থবাবু অবশ্য কেন্দ্রের কোর্টে বল ঠেলে এ প্রশ্ন এড়িয়ে গেলেন। বললেন, ‘‘এ সব দিল্লি ও ঢাকার ব্যাপার। তারাই আলোচনা করে সামাধান বার করবে।’’ তবে শুক্রবার রাতে নিজের বাড়িতে নৈশভোজে ডেকে শেখ হাসিনা যে ভাবে পাত পেড়ে খাইয়েছেন, অভিভূত পার্থবাবু। ইলিশের কত যে পদ ছিল! সঙ্গে ছোট মাছ, চিকেন-মটন, দই-মিষ্টি, ফলমূল। ইলিশ রফতানি ফের শুরু করার কথা কি বলা গেল শেখ হাসিনাকে? হাসলেন পার্থবাবু। বললেন— নেমন্তন্ন খেতে গিয়ে কি এ সব কথা বলা যায়! পার্থবাবু সব চেয়ে অভিভূত ‘ঢাকার উত্তমকুমার’ নামে পরিচিত অভিনেতা রাজ্জাকের সঙ্গে আলাপ করে। বললেন, ‘‘কত কথা যে হল আমাদের। আজ এক ফাঁকে তাঁর বাড়িও ঘুরে এলাম।’’ পার্থবাবু জানালেন, রাজ্জাক তাঁর মামার ঘনিষ্ঠ বন্ধু। এক সময়ে এক পাড়ায় থাকতেন। বললেন, ‘‘ছোটবেলা থেকেই রাজ্জাককে দেখেছি। আমাদের বাড়িতেও আসতেন। খুব স্মার্ট।’’ হোটেলের লনে সিপিএম নেতা বিমান বসুকে দেখে এগিয়ে গেলেন নিজেই। বিমানবাবু উঠে এসে হাত ধরলেন। হাসি মুখে কিছু সৌজন্যের আলাপ। তা দেখে বুঝি দীর্ঘশ্বাস ফেললেন আওয়ামি লিগের কর্মীরা! তাঁদের দেশের প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলির নেতারা কবে যে এ ভাবে হাসিমুখে নিজেদের মধ্যে কথাবার্তা বলবেন? তা হলে হয়তো অনেক সমস্যা মিটে যেত বাংলাদেশের।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy