বার্তা: জিন্দল কারখানামুখী রাস্তায় রয়েছে এমনই বোর্ড। নিজস্ব চিত্র
৬০ নম্বর জাতীয় সড়কের গাইঘাটা থেকে স্পষ্ট দেখা যায় জিন্দল কারখানার চিমনি। জাতীয় সড়কের ওই মোড়ে পড়তেই নজরে এল মস্ত বোর্ড— ‘বেটার লেট দ্যান নেভার’। জিন্দলদের প্রকল্প এলাকা পর্যন্ত ইংরাজিতে এমন বার্তা দিয়ে বেশ কয়েকটা বোর্ড লাগিয়েছে পূর্ত দফতর। শালবনির আনাচ-কানাচে কান পাতলেও সেই এক সুর— দেরিতে হলেও হল তো। আর সেই সূত্রেই এখনও ইস্পাত কারখানার স্বপ্ন দেখছে শালবনি।
কাল, সোমবার শালবনিতে জিন্দলদের সিমেন্ট কারখানার উদ্বোধন করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ, রবিবারই শালবনিতে আসছেন জিন্দল কর্তারা। গোটা এলাকায় শনিবার থেকেই সাজ সাজ রব। প্রকল্প এলাকায় ঢোকার মুখে মাথা তুলেছে মস্ত তোরণ, মঞ্চ তৈরির কাজও প্রায় শেষ। সেখানে দাঁড়িয়েই জিন্দল প্রকল্পের জন্য জমিদাতা সংগঠনের নেতা পরিষ্কার মাহাতো বললেন, “দেরিতে হলেও একটা কারখানা চালু হওয়ায় আমরা খুশি। ইস্পাত হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু এখন সিমেন্ট হচ্ছে। আপাতত, সেটাই হোক।’’ পরক্ষণেই তাঁর সংযোজন, ‘‘তবে শালবনির মানুষ ইস্পাত কারখানার জন্য জমি দিয়েছিলেন। আশা করব, একটু দেরি হলেও ইস্পাত কারখানাটা হবে।”
শালবনিতে ৪,৩৩৪ একর জমি নিয়েছিল জিন্দল গোষ্ঠী। শুরুতে ঠিক ছিল এখানে ইস্পাত কারখানা হবে। পরে সেই সিদ্ধান্ত স্থগিত রেখে ৮০০ কোটি টাকা লগ্নি করে সিমেন্ট কারখানা তৈরি হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে বছরে ২৪ লক্ষ টন সিমেন্ট উত্পাদন হওয়ার কথা। কারখানা পুরোদমে চালু হলে উত্পাদন ক্ষমতা দ্বিগুণ করার কাজ শুরু হওয়ার কথা। পরে বিদ্যুৎ উত্পাদন কেন্দ্র এবং রং কারখানা গড়ারও পরিকল্পনা রয়েছে।
প্রায় এক দশক আগে শালবনি অবশ্য প্রথম শিল্প-স্বপ্ন দেখতে শুরু করেছিল জিন্দলদের প্রস্তাবিত ইস্পাত প্রকল্প ঘিরেই। আশায় বুক বেঁধেছিলেন শয়ে শয়ে বেকার যুবক-যুবতী। ২০০৮ সালের ২ নভেম্বর ইস্পাত প্রকল্পের আনুষ্ঠানিক শিলান্যাসের সময় জিন্দলদের ঘোষণা ছিল, ২০১৩ সালের মধ্যে প্রথম পর্যায়ের উত্পাদন শুরু হবে। তা হয়নি। ইস্পাত কারখানা না হওয়ায় হতাশাও রয়েছে। প্রকল্প এলাকার সামনে চায়ের দোকান দেওয়া জমিদাতা পরিবারের সদস্য চিরঞ্জীব মাহাতো বলছিলেন, “কারখানার জন্যই জমি দিয়েছে পরিবার। ইস্পাত কারখানা হলে হয়তো একটা কাজ পেতাম।”
জমিদাতা সব পরিবারের একজনের কারখানায় কাজের দাবিতে সরব জমিদাতা সংগঠনও। পরিষ্কারবাবুর কথায়, “জমিদাতাদের কেউই স্থায়ী কাজ পাননি। ঠিকাদারের অধীনে কয়েকজন অস্থায়ী কাজ পেয়েছে। জমিদাতা সব পরিবারের একজনকে যাতে কারখানায় কাজ দেওয়া হয় মুখ্যমন্ত্রীর কাছে ফের লিখিত ভাবে দাবি জানাব।” জমিদাতা পরিবারের সদস্য দীপক মাহাতো, দিলীপ চালকরাও বলছিলেন, “২০০৮ থেকে কাজের আশায় দিন গুনছি। এখন ২০১৮। মুখ্যমন্ত্রী নিশ্চয়ই আমাদের কথা ভাববেন।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy