যানবাহন, সাধারণ মানুষের কাছ থেকে পুলিশের ঘুষ নেওয়ার অপবাদ-অভিযোগ নতুন নয়। কিন্তু পুলিশ যে এ ব্যাপারে বিচারপতিদেরও ছাড়ে না, সোমবার কলকাতা হাইকোর্টই তা জানিয়ে দিল। উচ্চ আদালতের মন্তব্য, পাসপোর্টের জন্য ইতিবাচক ‘পুলিশ ভেরিফিকেশন সার্টিফিকেট’ বা যাচাই-শংসাপত্র দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়ে ঘুষ চাওয়া হয় বিচারপতিদের কাছেও!
রিজেন্ট পার্ক এলাকার বাসিন্দা, ৭২ বছর বয়সি রথীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে মেক্সিকো যাবেন বলে পাসপোর্টের আবেদন জানিয়েছিলেন। পাসপোর্ট পেতে পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্ট জরুরি। ওই সার্টিফিকেট দিতে তাঁর কাছে পুলিশ ২০০ টাকা ঘুষ চেয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। আরও অভিযোগ, ঘুষ দিতে রাজি না-হওয়ায় পুলিশ তাঁর সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করে রিপোর্ট দিয়েছে। সেই ঘটনার কথা জানিয়ে হাইকোর্টে মামলা করেন রথীনবাবু।
এ দিন সেই মামলার শুনানি ছিল বিচারপতি দীপঙ্কর দত্তের আদালতে। পুলিশের বিরুদ্ধে ঘুষ চাওয়ার অভিযোগ প্রসঙ্গে রাজ্যের জিপি (গভর্নমেন্ট প্লিডার) অশোক বন্দ্যোপাধ্যায়ের বক্তব্য জানতে চান বিচারপতি। জিপি প্রথমে অভিযোগ অস্বীকারের চেষ্টা করলে বিচারপতি দত্ত মন্তব্য করেন, ইতিবাচক পুলিশ ভেরিফিকেশন রিপোর্ট দিতে বিচারপতিদের কাছেও ঘুষ চাওয়া হয়। তার নজিরও রয়েছে। তবে ওই নজিরের বিষয়ে বিচারপতি বিশদ ভাবে কিছু জানাননি।
বিচারপতি বলেন, মামলার আবেদনকারী জানিয়েছেন, ১৯৫০ সালে তিনি বাংলাদেশ থেকে এ দেশে এসেছেন। তখন তাঁর বয়স ছিল ৭-৮ বছর। এখন ৭২। তিনি পেশায় ইঞ্জিনিয়ার ছিলেন। সরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করতেন। মেয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাবেন বলেই তিনি পাসপোর্টের আবেদন করেছেন। পুলিশ তাঁর কাছে ২০০ টাকা ঘুষ চেয়েছিল। তা দেননি বলে পুলিশ তাঁর বিরুদ্ধে মন্তব্য করেছে, তিনি এ দেশের নাগরিকই নন!
পাসপোর্ট-কর্তৃপক্ষকেও এই মামলায় যুক্ত করা হয়েছে বলে জানান রথীনবাবুর আইনজীবী। বিচারপতি জিপি-কে নির্দেশ দিয়েছেন, অবিলম্বে নতুন করে ওই ব্যক্তির পুলিশি ভেরিফিকেশন করাতে হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy