Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

অসুস্থ বলে সুদীপকে জামিন ভুবনেশ্বর হাইকোর্টের

রোজ ভ্যালি কাণ্ডে গ্রেফতার হওয়ার ১৩৬ দিন পরে জামিন পেলেন তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। শরীর খারাপ, এই যুক্তিতে শুক্রবার ভুবনেশ্বর হাইকোর্ট জামিন দিয়েছে তাঁকে।

স্বস্তি: সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, এখন। —নিজস্ব চিত্র।

স্বস্তি: সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, এখন। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২০ মে ২০১৭ ০৩:৪৫
Share: Save:

রোজ ভ্যালি কাণ্ডে গ্রেফতার হওয়ার ১৩৬ দিন পরে জামিন পেলেন তৃণমূল সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়। শরীর খারাপ, এই যুক্তিতে শুক্রবার ভুবনেশ্বর হাইকোর্ট জামিন দিয়েছে তাঁকে। সুদীপের জামিনের খবর পেয়ে এ দিন কলকাতায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘ক’মাসে সুদীপদার ওজন ২০-২৫ কিলোগ্রাম কমে গিয়েছে। এখন ফিরে এসে তিনি কিছু দিন বিশ্রাম নেবেন।’’

রোজ ভ্যালি কাণ্ডে ধৃত আর এক তৃণমূল সাংসদ তাপস পালও সুদীপের মতো ভুবনেশ্বরের অ্যাপোলো হাসপাতালে ভর্তি। ইতিমধ্যে ৩ বার নিম্ন আদালতে ও এক বার ভুবনেশ্বর হাইকোর্টে তাপসের জামিনের আর্জি খারিজ হয়েছে। সুদীপ জামিন পাওয়ার পরে এ বার তাপসও জামিন পাবেন বলে তাঁর ঘনিষ্ঠরা আশাবাদী।

ভুবনেশ্বর হাইকোর্টের এই রায়ে ক্ষুব্ধ সিবিআই জামিন খারিজ চেয়ে সোমবার সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছে। সিবিআইয়ের অভিযোগ— যতটা বলা হচ্ছে, সুদীপ ততটা অসুস্থ নন। একটি বেসরকারি হাসপাতালের রিপোর্টের ভিত্তিতে কী করে হাইকোর্ট তাঁকে জামিন দিল, সে প্রশ্নও সুপ্রিম কোর্টের অবসরকালীন বেঞ্চে তুলবে সিবিআই। সরকারি হাসপাতালের চিকিৎসকদের দিয়ে সুদীপের শারীরিক পরীক্ষা করার আবেদনও জানানো হবে।

আরও পড়ুন: খুশি, তবু আরও নেতা গ্রেফতারের আশঙ্কা মমতার

সুদীপের স্ত্রী বিধায়ক নয়না বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, সুদীপের কোথায় কী চিকিৎসা হবে, এ বার সে সিদ্ধান্ত তিনিই নেবেন। নয়না বলেন, ‘‘ভুবনেশ্বরে পৌঁছে ডাক্তারদের সঙ্গে কথা বলব। তাঁরা যদি বলেন সেখানে রেখে চিকিৎসা করাটা ভাল হবে, সেটাই করা হবে। কলকাতায় আনার কথা বললে, তার বন্দোবস্তও হবে।’’ ভুবনেশ্বর শহর লাগোয়া জয়দেবনগরে বাড়ি ভাড়া নিয়ে গত দু’মাস ধরে থাকছেন নয়না। ক’দিন কলকাতায় কাটিয়ে শুক্রবার বিকেলে ভুবনেশ্বর রওনা হলেও বিমান বিভ্রাটে রাত পর্যন্ত আটকে থাকেন তিনি।

জানুয়ারির ৩ তারিখে কলকাতায় সিজিও কমপ্লেক্সে জেরার পর সুদীপকে গ্রেফতার করেছিল সিবিআই। সে দিন রাতেই তাঁকে ভুবনেশ্বরে নিয়ে যাওয়া হয়। কিছু দিন সিবিআই হেফাজতে থাকার পরে জেলে যান তিনি। সেখানে অসুস্থ হয়ে প্রথমে জেল হাসপাতাল ও পরে অ্যাপোলোয় ভর্তি হন। মাঝে মুখ্যমন্ত্রী মমতা তাঁকে দেখতে ভুবনেশ্বরে যান। সিবিআই আদালতে বলে, সুদীপ এতটাই প্রভাবশালী যে তাঁকে দেখতে খোদ মুখ্যমন্ত্রী উড়ে আসেন।

তবে জামিন পেলেও রবিবারের আগে সুদীপের কলকাতায় ফেরা সম্ভব নয় বলে জানাচ্ছেন আইনজীবীরা। হাইকোর্টের নির্দেশ হাতে পেতে শুক্রবার সন্ধ্যা গড়িয়ে যাবে। সেই নির্দেশ ভুবনেশ্বরের সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতে শনিবার জমা দেওয়া হবে। তার ভিত্তিতে নিম্ন আদালত যে নির্দেশ দেবে, সেটি পাঠাতে হবে জেলে। জেল থেকে হাসপাতালে সবুজ সঙ্কেত পাঠানোর পরে সুদীপকে জেলে ফিরতে হবে। সেখান থেকেই তিনি ছাড়া পাবেন।

শুক্রবার হাইকোর্ট তিনটি শর্তে জামিন দিয়েছে সুদীপকে। এক, দু’জন ব্যক্তি মিলিয়ে ২৫ লক্ষ টাকার জামিনদার লাগবে। দুই, পাসপোর্ট জমা দিতে হবে এবং কলকাতার বাইরে যেতে পারবেন না সুদীপ। তিন, তিনি মামলার সাক্ষীদের প্রভাবিত করতে পারবেন না।

সুদীপের আইনজীবী বিশ্বজিত দেব এ দিন বলেন, ‘‘প্রাথমিক ভাবে সিবিআই সুদীপবাবুর বিরুদ্ধে কোনও মামলাই দাঁড় করাতে পারেনি। চার্জশিটের তথ্য-প্রমাণে সারবত্তা থাকলে জামিন হতো না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE