এ বারও পঞ্চায়েত ভোটের দিনক্ষণ এবং কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের সিদ্ধান্ত কি আদালতেই চূড়ান্ত হতে চলেছে? গত কয়েক দিনে বিভিন্ন জেলায় খুনোখুনির ঘটনা সামনে আসার পর বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলি সেই প্রস্তুতিই নিচ্ছে বলে খবর। তাদের দাবি, যে ভাবে ভোটের ছ’মাস আগে থেকেই যেভাবে আইন-শৃঙ্খলা ভেঙে পড়ার উপক্রম হয়েছে, তাতে পর্যাপ্ত কেন্দ্রীয় বাহিনী ছাড়া ভোট সম্ভব নয়। শাসক দল অবশ্য পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী না চাওয়ার পক্ষে। দলের মতে, সবং, নোয়াপাড়া, উলুবেড়িয়ার উপনির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী এসেছিল। কিন্তু ফলাফল কী হয়েছে, তা সবাই দেখেছে। এর পরে পঞ্চায়েতে দিল্লির বাহিনী রাখার প্রয়োজন নেই।
বাহিনী রাখার প্রসঙ্গে নবান্নের কর্তারা এখনই কোনও মন্তব্যে নারাজ। গত সপ্তাহে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার অমরেন্দ্রকুমার সিংহ প়ঞ্চায়েত দফতরে চিঠি লিখে ভোটের দিনক্ষণ ও দফা জানাতে অনুরোধ করেছেন। দফতর সেই চিঠি নবান্নে পাঠালেও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোনও সিদ্ধান্ত এখনও জানাননি। নবান্নে কান পাতলে অবশ্য শোনা যাচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রী এক দিনে রাজ্য পুলিশ দিয়ে ভোট করার পক্ষপাতী। নবান্নের কর্তাদের একাংশ যদিও পুলিশ দিয়ে দু’তিন দফায় ভোটের কথা ইতিউতি বলেছেন। যদিও মুখ্যমন্ত্রীর সামনে সে কথা বলার সাহস কোনও আমলার নেই বলেই পঞ্চায়েত দফতরের খবর। আর এখানেই পঞ্চায়েত ভোটের ফয়সালা আদালতেই হওয়ার পথ তৈরি হচ্ছে।
বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্যের অভিযোগ,‘‘এখন থেকেই শাসক দলের হুমকি, মারধর শুরু হয়ে গিয়েছে। নিজেদের মধ্যে মারামারি করেও খুন হচ্ছেন তাঁরা। ফলে শান্তিপূর্ণভাবে ভোট করাতে হলে কেন্দ্রীয় বাহিনী লাগবেই। রাজ্য সরকার বিরোধীদের দাবি না মেনে একইদিনে পুলিশ দিয়ে রাজ্যে ভোট করাতে গেলে আমাদের আদালতে যাওয়া ছাড়া অন্য কোনও পথ নেই।’’
তবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক কি এত সংখ্যক কেন্দ্রীয় বাহিনী দিতে পারবে? উঠছে সেই প্রশ্নও। নিয়ম অনুযায়ী, লোকসভা, বিধানসভা ভোটের নিরাপত্তায় কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। কিন্তু পঞ্চায়েত-পুরভোটে তার নজির সাধারণভাবে নেই। মীরা পাণ্ডে নির্বাচন কমিশনার থাকাকালীন ২০১৩ সালের পঞ্চায়েত ভোটেও প্রথমে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক কেন্দ্রীয় বাহিনী দিতে চায়নি। পরে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বাহিনী দিতে বাধ্য হয় দিল্লি। এ বারও মামলা হলে সেই উদাহরণই বিরোধীরা সামনে আনবে বলে জানা যাচ্ছে। ভেঙে পড়া আইন-শৃঙ্খলার বিষয় তো থাকবেই। যা শুনে রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়ের কটাক্ষ,‘‘ভোটের আগেই তো এঁরা হেরে বসে আছেন। পঞ্চায়েতের সব আসনে বিরোধীদের প্রার্থী দেওয়ার ক্ষমতা হবে না। নির্বাচন আর কি লড়বে?’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy