Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪
State News

তৃণমূল পার্টি অফিসে ঢুকে গুলি করে খুন খড়্গপুরের রেলমাফিয়া শ্রীনুকে

নিজের চেনা গণ্ডিতেই ঘটে গেল দুর্ঘটনা। ভরদুপুরে গুলি করে খুন করা হল দাপুটে রেলমাফিয়া শ্রীনু নায়ডুকে। বুধবার দুপুর ৩টে নাগাদ ঘটনাটি ঘটে রেলশহর খড়্গপুরের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল পার্টি অফিসে।

রেলমাফিয়া শ্রীনু নায়ডু।

রেলমাফিয়া শ্রীনু নায়ডু।

নিজস্ব সংবাদদাতা
খড়্গপুর শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০১৭ ২০:১১
Share: Save:

নিজের চেনা গণ্ডিতেই ঘটে গেল দুর্ঘটনা। ভরদুপুরে গুলি করে খুন করা হল দাপুটে রেলমাফিয়া শ্রীনু নায়ডুকে। বুধবার দুপুর ৩টে নাগাদ ঘটনাটি ঘটে রেলশহর খড়্গপুরের ১৮ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল পার্টি অফিসে। শ্রীনুর স্ত্রী পুজা নায়ডু বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে যোগ দেওয়ার পর থেকে স্ত্রী-র এই কার্যালয় থেকেই কার্যত নিজের রাজ্যপাট পরিচালনা করতেন শ্রীনু।

সূত্রের খবর, এ দিন এই পার্টি অফিসেই ধর্মা রাও, শ্রীশ্রীনু, এম গোবিন্দ এবং বি গোবিন্দ নামে চার অনুগামীর সঙ্গে বসেছিলেন শ্রীনু। আচমকাই বোমা এবং বেশ কয়েক বার গুলি ছোড়ার শব্দ পান স্থানীয়েরা। সঙ্গে সঙ্গেই ছুটে আসেন তাঁরা। দেখা যায়, গুলিবিদ্ধ অবস্থায় পড়ে রয়েছেন পাঁচ জন। কিন্তু, দুষ্কৃতীরা তত ক্ষণে বেপাত্তা হয়ে গিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গেই চার আহতকে নিয়ে যাওয়া হয় খড়্গপুর মহকুমা হাসপাতালে। পেশায় রেলকর্মী শ্রীনুকে খড়্গপুর রেল হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এর পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে কলকাতার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে আসা হলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা।

কিন্তু, আচমকা শ্রীনুকে লক্ষ্য করে গুলি চালালো কেন দুষ্কৃতিরা?

দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থল। নিজস্ব চিত্র

স্থানীয়দের মতে, এ জন্য কিছুটা হলেও দায়ী শ্রীনুর অতীত। রেলের ঠিকাদারি ব্যবসার ‘সুবাদে’ বহু দিন ধরেই এলাকায় সন্ত্রাসের মাথা হয়ে উঠেছিলেন ২৬ বছর বয়সী এই তেলুগু যুবক। এই উত্থানের শুরু ২০০১ সালের পরবর্তী সময়ে। তার আগে পর্যন্ত এই রাজ্যপাট ছিল বাসব রামবাবুর দখলে। রেলের ছাঁট লোহার কারবারের সঙ্গে ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে ছিল রামবাবুর নাম। বহু বার পুলিশের ডায়েরিতেও লাল কালির দাগ পড়েছে তাঁর নামে। এর পর ১৯৯৯ এবং ২০০১-এ মাত্র দু’বছরের ব্যবধানে খুন হন খড়্গপুরের সিপিআই নেতা নারায়ণ চৌবের দুই ছেলে মানস এবং গৌতম চৌবে। এই মামলাতেই যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয় রামবাবুর। তবে ২০১০ সালে সুপ্রিম কোর্টের শর্তাধীন জামিন পেয়ে বাড়িতে ফিরে আসেন তিনি।

রামবাবুর অবর্তমানে রেল শহরে ধীরে ধীরে উত্থান হয় শ্রীনুর। ব্যবসায় ক্রমেই একচেটিয়া দখল নিতে শুরু করেন তিনি। খুন, রাহাজানি, ছিনতাই, গুলি চালানোর মতো ঘটনায় নাম জড়ায় শ্রীনুর। ২০১৫ সালে শ্রীনুর স্ত্রী পূজা নায়ডু বিজেপির প্রার্থী হওয়ার পরে গ্রেফতারও হয়েছিলেন তিনি। তাঁর বিরুদ্ধে খড়্গপুরের খড়িদায় ব্যপক বোমাবাজির অভিযোগ উঠেছিল। তবে পূজা বিজেপি ছেড়ে শাসক দলে যোগ দেওয়ার পর জামিনে মুক্তি পান শ্রীনু। এর আগেও ২০১৬-র সেপ্টেম্বর মাস নাগাদ একবার হামলার মুখে পড়তে হয়েছিল তাঁকে। সে বারও তাঁর গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালিয়েছিল দুষ্কৃতীরা।

তবে এ বার আর শেষ রক্ষা হল না। দুষ্কৃতীদের গুলি লাগে তাঁর মস্তিষ্ক ও হৃদপিণ্ডে।

ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকেই কী এই খুন? খতিয়ে দেখছে পুলিশ।

আরও পড়ুন: গ্রেফতার শ্রীনু, ষড়যন্ত্রের নালিশ বিজেপির

আরও পড়ুন: ভোটের শহরে নজরে শ্রীনু

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Shrinu Naidu Miscreant Kharagpur Shot Dead
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE