Advertisement
২৭ এপ্রিল ২০২৪

পুর-পাওনা নিয়ে সুর চড়া অশোকের

আন্তঃরাজ্য পরিষদের বৈঠকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রীর তোলা ব়ঞ্চনার অভিযোগ সামনে রেখেই এ বার পুরসভার পাওনাগন্ডা নিয়ে রাজ্যের বিরুদ্ধে সরব হলেন শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্য।

সাংবাদিক বৈঠকে অশোক ভট্টাচার্য। —নিজস্ব চিত্র।

সাংবাদিক বৈঠকে অশোক ভট্টাচার্য। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ১৯ জুলাই ২০১৬ ০২:০০
Share: Save:

আন্তঃরাজ্য পরিষদের বৈঠকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রীর তোলা ব়ঞ্চনার অভিযোগ সামনে রেখেই এ বার পুরসভার পাওনাগন্ডা নিয়ে রাজ্যের বিরুদ্ধে সরব হলেন শিলিগুড়ির মেয়র অশোক ভট্টাচার্য।

সোমবার পুরসভায় সাংবাদিক বৈঠক ডেকে মেয়র জানান, আন্তঃরাজ্য পরিষদের সভায় মুখ্যমন্ত্রী কেন্দ্রের বঞ্চনা নিয়ে যথার্থই প্রশ্ন তুলেছেন। কেন্দ্রের তরফে রাজ্যকে প্রাপ্য অর্থ দিতে হবে। তা না পেলে রাজ্যের সরকারের চালান কঠিন। ঠিক তেমনি পুরসভা, জেলা পরিষদগুলি রাজ্যের তরফে প্রাপ্য অর্থ না পেলে চলতে পারবে না। অথচ বারবার রাজ্যের কাছে আবেদন নিবেদেন করলেও শিলিগুড়ি পুরসভা তার প্রাপ্য অর্থ প্রায় পাচ্ছে না। বিশেষ করে বিরোধী দলের অধীনে থাকা পুরসভা, জেলা পরিষদগুলিকে রাজ্য সরকার অর্থ বরাদ্দ দিচ্ছে না বলে মেয়রের অভিযোগ। তিনি বলেন, ‘‘কেন্দ্রের তরফে রাজ্যের পাওনাগন্ডার বিষয়টি দেখতে মুখ্যমন্ত্রী যেমন প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে কমিটি গড়ার কথা বলেছেন। আমরাও চাই রাজ্য সরকারের বরাদ্দ পুরসভা, জেলা পরিষদ, মহকুমা পরিষদগুলি যথাযথ ভাবে পাচ্ছে কি না সেটা দেখার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে সভাপতি করে কমিটি হোক। বিরোধী দলের মেয়র সভাধিপতিদের রাখা হোক। মুখ্যমন্ত্রী যেমন দয়ার দান চাইছেন না। তেমনি আমরাও কোনও দয়ার দান চাইছি না।’’

কেন্দ্রের বঞ্চনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যেমন আন্দোলনের কথা বলেছেন, তেমনই পুরসভা, মহকুমা পরিষদগুলিকে রাজ্যের তরফে বঞ্চনা করা হলে প্রতিবাদে বামফ্রন্টগত ভাবে আন্দোলন করার কথা জানিয়েছেন মেয়র। আগামী ৩০ জুলাই দার্জিলিং জেলা বামফ্রন্টের বৈঠকে আন্দোলনের বিষয়ে আলোচনা হবে।

মেয়রের বক্তব্য প্রসঙ্গে পর্যটন মন্ত্রী তথা তৃণমূলের দার্জিলিং জেলা সভাপতি গৌতম দেবের প্রতিক্রিয়া, আন্তঃরাজ্য পরিষদ সাংবিধানিক সর্বোচ্চ কমিটি। তা নিয়ে একজন মেয়র সমর্থন করছেন না বিরোধিতা করছে তা অপ্রাসঙ্গিক। রাজ্য কেন্দ্রের সম্পর্ক একটা বিষয়। আর রাজ্যের সঙ্গে পুরসভা, পঞ্চায়েতগুলির সম্পর্ক আরেকটা আলাদা বিষয়। সংবিধান মেনেই সেটা হয়। পর্যটন মন্ত্রী বলেন, ‘‘পাঁচ বছর আগেও বাম জমানায় অশোকবাবুরা পুরসভাকে ১৪ লক্ষ টাকা ফিক্সড গ্র্যান্ট দিতেন। আর অশোকবাবু যখন মেয়র তখন রাজ্যের তরফে তিনি ৫০ লক্ষ টাকা করে প্রতিমাসে পাচ্ছেন। তা ছাড়া উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর এবং এসজেডিএ’র তরফে সব মিলিয়ে হিসাব করলে ২০০ কোটি টাকার মতো কাজ করে দেওয়া হয়েছে। আসলে অশোকবাবু কোনও কাজ করছেন না। প্রচারে থাকতে চাইছেন। সপ্তাহে ৩ দিন স্ট্যান্ডিং কমিটির মিটিংয়ে এবং দুই দিন পার্টির কাজে কলকাতায় থাকেন।’’

মেয়রের অভিযোগ, বিভিন্ন খাতে রাজ্যের তরফে পুরসভার প্রায় ৯৫ কোটি টাকা পাওনা রয়েছে। নতুন প্রকল্পও মিলছে না। বাম জমানায় পুরসভা, জেলা পরিষদগুলিকে নিয়ে বৈঠক করা হত। এখন মেয়র, সভাধিপতিদের নিয়ে বৈঠক হয় না। তাঁদের বলার জায়গা নেই। গত ১৪ জুলাই পুর এবং নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমকে তিনি ফের চিঠি দিয়ে জানিয়েছেন, পুরসভার প্রাপ্য অর্থ পেতে কয়েকবার আলোচনার পরও সে বিষয়ে কোনও অগ্রগতি না হওয়া দুর্ভাগ্যজনক।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

Siliguri fund
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE