Advertisement
২৬ এপ্রিল ২০২৪

মাইকের দাপট অব্যাহত উত্তরে

বারাসতের কলোনি মোড়ে রয়েছে একাধিক নার্সিংহোম। স্থানীয় এক চিকিৎসক ধীমান চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মাইকের আওয়াজে কথাই বলা যায় না।

ঝালাপালা: বারাসত ও বাগুইআটিতে রাস্তার মোড়ে লাগানো রয়েছে মাইক। নিজস্ব চিত্র

ঝালাপালা: বারাসত ও বাগুইআটিতে রাস্তার মোড়ে লাগানো রয়েছে মাইক। নিজস্ব চিত্র

অরুণাক্ষ ভট্টাচার্য
শেষ আপডেট: ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৮ ০২:৫৯
Share: Save:

হরিনাম সঙ্কীর্তন শেষ হয়ে গিয়েছে। কিন্তু বারাসতের চাঁপাডালি মোড়ে সে জন্য লাগানো মাইক খোলা হয়নি। যশোর রোড ধরে দমদম ছাড়িয়ে এয়ারপোর্ট, বিরাটি, মধ্যমগ্রাম, বারাসতের দিকে যেতে গেলে চোখে পড়বে এমনই দৃশ্য। শুধু রক্তদান শিবির, মেলা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান বা রাজনৈতিক দলের প্রচারই নয়, রাত এগারোটায় এলাকা কাঁপিয়ে মাইকে বাজে বিয়ে বাড়ির সানাইও। সামনেই মাধ্যমিক, উচ্চ মাধ্যমিক। সোমবার থেকে শুরু হচ্ছে আইসিএসই পরীক্ষাও। কিন্তু পরীক্ষার্থীদের রেহাই নেই শব্দ দানবের হাত থেকে।

স্থানীয়দের অভিযোগ, যে কোনও অনুষ্ঠানের নির্ধারিত দিনের আগে থেকেই রাস্তার মোড়ে মোড়ে, বাতিস্তম্ভে মাইক বেঁধে তারস্বরে চলে প্রচার। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই শব্দবিধি বা প্রশাসনের অনুমতির বালাই নেই। অনেক ক্ষেত্রে বাতিস্তম্ভ থেকেই হুকিং করে বিদ্যুৎ নিয়ে চলে মাইক। অথচ যে কোনও অনুষ্ঠানে মাইক বাজাতে গেলে প্রশাসনের অনুমতি নিতে হয়। উত্তর ২৪ পরগনার জেলাশাসক অন্তরা আচার্য বলেন, ‘‘অনুমতি নিলেও শব্দমাত্রা নির্দিষ্ট রাখতে হয়। নিয়মভঙ্গের অভিযোগ পেলে ব্যবস্থাও নেওয়া হয়।’’

বারাসতের কলোনি মোড়ে রয়েছে একাধিক নার্সিংহোম। স্থানীয় এক চিকিৎসক ধীমান চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মাইকের আওয়াজে কথাই বলা যায় না। রোগী, শিশুরা বেশি অসুস্থ বোধ করে। প্রতি দিনই মাইকের আওয়াজ কমাতে বলি, কিন্তু হয় কোথায়?’’

বারাসতের মহকুমাশাসক পীযূষকান্তি দাস অবশ্য জানিয়েছেন, বেশির ভাগ ক্ষেত্রে অনুমতি না নিয়েই এমন ভাবে মাইক বাজানো হয়। তিনি বলেন, “প্রকাশ্যে বা রাস্তায় মাইক বাজানোর অনুমতি আমরা দিই না। কোনও অনুষ্ঠানে অনুমতি দিলেও সেখানে ঘেরা জায়গায় সাউন্ড বক্স বাজাতে বলা হয়।’’

তা হলে মাইকের দাপট কী ভাবে চলছে? পীযূষবাবু বলেন, ‘‘নিয়ম-বিধি মানেন না অনেকেই। কোথায় নিয়ম ভাঙা হচ্ছে সেই নজরদারি পুলিশই চালায়। মাইক, মেশিন বাজেয়াপ্ত করাও হয়।’’

উত্তর ২৪ পরগনা জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার অভিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মাইক বাজানোর অনুমতি না থাকলে ব্যবস্থা নেওয়া হয়। আমরাও স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা করি।’’

কিন্তু স্থানীয়দের দাবি, দমদম রোড ও তার দু’পাশের যে কোনও গলিতেই প্রায় সব অনুষ্ঠানে সাউন্ড বক্স বাজানো কার্যত ‘প্রথা’য় পরিণত হয়েছে। পুজো বা মেলা হলে মাইক বাজে রাত পর্যন্ত। এক দোকানদার বলেন, ‘‘শব্দের চোটে অস্থির লাগে। কিন্তু পুলিশ এসে সব দেখে চুপচাপ চলে যায়।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

অন্য বিষয়গুলি:

High Volume Speakers Amplifiers
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE