এ ছাড়া আর উপায় ছিল না। মদের দোকান ও অন শপগুলি খোলা রাখতে রাজ্য সড়কের তকমা হারাল রাস্তার বেশ কিছু অংশ। সুপ্রিম কোর্টের পর্যবেক্ষণ জানার পরে রাজ্যের মদের দোকানগুলি থেকে আসা রাজস্ব বাঁচানোই ছিল নবান্নের অগ্রাধিকার। তাই উল্টো পথে হেঁটে বেশ কিছু রাজ্য সড়ককে পুরসভার রাস্তা বলে ঘোষণা করল সরকার। নবান্নের এক কর্তা রসিকতা করে বলেন, ‘‘সাধারণত পঞ্চায়েত ও পুরসভার রাস্তাকে রাজ্য এবং জাতীয় সড়কে উন্নীত করা হয়। এ বার উলটপুরাণ হল!’’
রাজ্যের অবশ্য যুক্তি, রাস্তার চরিত্র ও এক্তিয়ার ঠিক করার দায়িত্ব পূর্ত দফতরের। সেই নীতি মেনেই রাজ্য সড়কের তকমা থেকে বেশ কিছু রাস্তাকে বাদ দেওয়া হয়েছে। এর সঙ্গে সুপ্রিম কোর্টের রায়ের কোনও সম্পর্ক নেই। কারণ, সুপ্রিম কোর্টের চূড়ান্ত রায় ঘোষণার আগে, ১৬ মার্চ নতুন বিজ্ঞপ্তিটি জারি করেছে পূর্ত দফতর।
আরও পড়ুন: দোকান সরালে ফি মকুব
সরকারি সূত্রে জানা গিয়েছে, সর্বোচ্চ আদালতের চূড়ান্ত রায় ঘোষণার আগেই রাজ্য সড়কের কোন কোন অংশে মদের দোকান ও অন শপ রয়েছে— তা চিহ্নিত করার কাজ শুরু করে আবগারি দফতর। সেই মতো পূর্ত দফতরকে জানিয়ে দেওয়া হয় কোন অংশের রাস্তা ‘রাজ্য সড়ক’ থেকে বাদ দিতে হবে। সেই নির্দেশ অনুযায়ী স্থানীয় পুরসভা অথবা জেলা সড়ক হিসেবে তাদের নামকরণ করা হয়েছে। নবান্নের এক কর্তার কথায়, ‘‘রাস্তার চরিত্র না বদলালে তো দোকানগুলো বাঁচানো যেত না।’’
গত ১৫ ডিসেম্বর সুপ্রিম কোর্ট প্রথম দফা রায় দেওয়ার ঠিক পরেই নগরোন্নয়ন দফতরের অধীনে থাকা ইএম বাইপাসকে রাজ্য সড়কের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া হয়। কারণ এই রাস্তার ধারে অবস্থিত পাঁচতারা হোটেলগুলি রাজ্য সরকারকে জানিয়ে দেয়, বার না থাকলে তাদের ব্যবসা লাটে উঠবে। সেই আর্জিতে সাড়া দেয় সরকার। তার পরেই ইএম বাইপাস রাজ্য সড়কের মর্যাদা হারায়। এর পরেই ছোট মদ ব্যবসায়ীরা পঞ্চায়েত-পুর এলাকায় একই পদ্ধতি অনুসরণের দাবি তোলেন। পূর্ত দফতর ১৬ মার্চ এই সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করলেও এত দিন চুপ ছিল আবগারি দফতর।
মঙ্গলবার জেলায় জেলায় জানিয়ে দেওয়া হয়, কোন কোন রাস্তা আর রাজ্য সড়ক নেই। দেখা যাচ্ছে, ঠিক যেখানে যেখানে মদের দোকান, ঠিক সেখানেই রাস্তা আর রাজ্য সড়ক নেই। পরিণত হয়েছে পুরসভা বা পঞ্চায়েতের নিয়ন্ত্রণাধীন সড়কে। ফলে মদের দোকানদারেরা এখন খুশি। আর নবান্নের এক কর্তার যুক্তি— যে ক’টা দোকান বাঁচে। তাতে কিছু রাজস্ব তো কোষাগারে আসবে!
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy