—ফাইল চিত্র।
গত ৩ মাসের পাহাড়ের আন্দোলনে পুড়ে যাওয়া, ভাঙাচোরা সরকারি দফতরগুলিকে আপাতত মেরামত করবে না দার্জিলিং জেলা প্রশাসন। বদলে দফতরের কাজকর্ম হবে পাহাড়ের বিভিন্ন ব্লকে থাকা কমিউনিটি হলে ও স্থানীয় নেতা-নেত্রীদের বাড়িতে। লক্ষ্মীপুজোর পরেই রাজ্য সরকারি দফতর খুলবে। তার আগে নেতাদের বাড়ি দেখা হয়েছে। একই সঙ্গে জেলা প্রশাসন দফতরের দাবি, মোট ১৭ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। সেই সংক্রান্ত রিপোর্টটি কলকাতায় পাঠানো হয়েছে বলেও জানান জেলাশাসক জয়সী দাশগুপ্ত।
প্রশাসনের কয়েক জন অফিসার জানান, আশির দশকে সুবাস ঘিসিঙ্গের নেতৃত্বে পাহাড়ে আন্দোলন শুরু হওয়ার পরে দফতরে আগুন দেওয়া বা সরকারি গাড়ি পোড়ানোর প্রবণতা শুরু হয়। তার পর থেকে বহুবার পাহাড়ে এমন ঘটনা ঘটেছে। প্রতিবারই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ার পরে লক্ষ লক্ষ টাকা খরচ করে দফতরগুলি সংস্কারও করা হয়েছে। দেখা গিয়েছে, পরের বার আন্দোলনেই আবার সেই বাড়িটিতে ভাঙচুর চালানো হয়েছে।
ওই অফিসারদের বক্তব্য, সরকারি টাকা খরচ করে সংস্কার করা নিয়ে সমস্যা নেই। কিন্তু এটা তো অপচয়। তা ছাড়া ওই দফতরগুলি থেকে যে পরিষেবা দেওয়া হয়, সমস্যা দেখা দেয় তা নিয়েও। এ বার যেমন পাহাড়ে গত তিন মাসে বিভিন্ন টিকাকরণ কর্মসূচি হয়নি। কাজ হয়নি রেশন কার্ড, ভোটার কার্ড, বিভিন্ন শংসাপত্র নিয়েও। জিটিএ এলাকায় আশা কর্মী নিয়োগ না হওয়ায় মা ও সদ্যোজাতদের পরিসংখ্যানও প্রশাসনের হাতে নেই। রাস্তা, নালা-ঝোরা সংস্কারও হয়নি। এ ছাড়াও বহু গুরুত্বপূর্ণ সরকারি নথিও নষ্ট হয়েছে।
এই অবস্থায় শুধু ক্ষয়ক্ষতির হিসেব করে আর সেই সংক্রান্ত রিপোর্ট কলকাতায় পাঠিয়েই বসে থাকছে না জেলা প্রশাসন, একই সঙ্গে কমিউনিটি হল বা স্থানীয় নেতানেত্রীদের বাড়িতে দফতরের কাজ শুরু করতে চলেছে। প্রশাসনের কেউ কেউ বলছেন, ক্ষতিগ্রস্ত দফতরগুলির বেশ কিছুতে বসে কাজ করার উপায় নেই। তাই প্রথমে কমিউনিটি হলগুলিতে বসার ব্যবস্থা করা হবে। তা সম্ভব না হলে স্থানীয় নেতাদের বাড়িতে অস্থায়ী ভাবে দফতর চলবে।
জেলাশাসক জয়সী দাশগুপ্ত বলেন, ‘‘আন্দোলন করতে নেমে সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করলে কী সমস্যা হতে পারে, তা বাসিন্দাদের দেখা দরকার।’’ সে জন্যই যে তাঁরা অসুবিধা সত্ত্বেও সংস্কারের কাজ শুরু করবেন না, তা-ও জানান তিনি। গত ৮ জুন রাজভবনে মন্ত্রিসভার বৈঠকের সময় ভানুভবন থেকে বিক্ষোভ মিছিল বার হয়। তাকে ঘিরেই পাহাড়ে গোলমালের সূত্রপাত। পরবর্তী তিন মাসে পঞ্চায়েত, ভূমি সংস্কার, তথ্য-সংস্কৃতি থেকে শুরু করে একাধিক সরকারি দফতর, পুলিশ ব্যারাক, বাংলো, সার্কিট হাউস, জল বিদ্যুৎ প্রকল্প— সবই আক্রান্ত হয়েছে। আগুন ধরানো হয়েছে কার্শিয়াঙের রাজরাজেশ্বরী হল এবং সোনাদা স্টেশনের মতো হেরিটেজ স্টেশনেও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy