সবিস্তার নিয়মাবলি-সহ স্থায়ী নির্দেশিকা আছে। তা সত্ত্বেও বহু স্কুলশিক্ষক যথাযথ তথ্য না-দিয়ে, অনেক ক্ষেত্রে জাল তথ্য দাখিল করে কিংবা তথ্য গোপন করে এইচআরএ বা বাড়িভাড়া ভাতা নিয়ে চলেছেন বলে অভিযোগ। কারচুপির এই প্রবণতা রুখতে এ বার কঠোর ব্যবস্থা নিচ্ছে রাজ্যের স্কুলশিক্ষা দফতর।
সম্প্রতি স্কুলশিক্ষা দফতরের তরফে ডিআই বা জেলা স্কুল পরিদর্শকদের কাছে চিঠি পাঠিয়ে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যে-সব শিক্ষক বা শিক্ষিকা নির্দিষ্ট তথ্য দেবেন না বা তথ্যে কারচুপি করবেন, তাঁদের বাড়িভাড়া বন্ধ করে দিতে হবে অবিলম্বে। শুধু তা-ই নয়, এত দিন বাড়িভাড়া বাবদ তাঁরা অতিরিক্ত যে-টাকা নিয়েছেন, তা ফেরতের ব্যবস্থা করতে হবে। এ ব্যাপারে কী ব্যবস্থা নেওয়া হল, ২৯ ডিসেম্বরের মধ্যে তার রিপোর্ট দিতে হবে স্কুলশিক্ষা দফতরের কমিশনারের কাছে।
স্কুলশিক্ষা দফতরের চিঠিতে ডিআই-দের বলা হয়েছে, শিক্ষকেরা সরকার নির্ধারিত ৬০০০ টাকার বেশি বাড়িভাড়া পাচ্ছেন কি না, তা খতিয়ে দেখতে হবে। জাল বা ভুল তথ্য দিয়ে কোনও শিক্ষক বাড়িভাড়া তুলছেন কি না, যাচাই করতে হবে তা-ও।
সাধারণ ভাবে বাড়িভাড়ার নথি বছরে দু’বার (জানুয়ারি ও জুলাই) জমা দিতে হয় শিক্ষকদের। নতুন নির্দেশে বলা হয়েছে, চলতি বছরের শেষে একই নথি আরও এক বার দাখিল করতে হবে। সেখানে মূলত তিনটি বিষয় জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ১) সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের স্বামী বা স্ত্রীর বেতন শংসাপত্র চাই। ২) স্বামী বা স্ত্রী ব্যবসায় যুক্ত থাকলে নিয়ম মেনে তাঁর কর সংক্রান্ত শংসাপত্র বা ট্রেড লাইসেন্সের প্রতিলিপি জমা দিতে হবে। ৩) যদি শিক্ষকের স্বামী বা স্ত্রী চাকরি না-করেন, তা হলেও সেই সংক্রান্ত শংসাপত্র লাগবে।
নতুন নির্দেশিকা জারির পরেই গুঞ্জন শুরু হয়েছে শিক্ষা শিবিরে। প্রশ্ন উঠছে, স্থায়ী সরকারি নির্দেশ থাকা সত্ত্বেও এই ধরনের অসঙ্গতি বা কারচুপি হচ্ছে কী ভাবে? এর জেরে কিছু শিক্ষকের জন্য শিক্ষকসমাজের সুনাম নষ্ট হতে পারে বলেও আশঙ্কা শিক্ষাজগতের একাংশের।
বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির সহ-সাধারণ সম্পাদক স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘সুস্পষ্ট নির্দেশ সত্ত্বেও এই ধরনের ঘটনা কেন ঘটছে, বোঝা যাচ্ছে না। সামান্য টাকার চেয়ে সামাজিক সম্মানটা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলেই মনে করি।’’
আবার এই ধরনের বিজ্ঞপ্তি জারি করার বিরুদ্ধেই সরব হয়েছেন পশ্চিমবঙ্গ শিক্ষক ও শিক্ষা বিষয়ক কর্মচারী সমিতির রাজ্য সভানেত্রী সঙ্ঘমিত্রা ভট্টাচার্য। তিনি জানান, বাড়িভাড়া ভাতা সংক্রান্ত নির্দেশিকাতেই গলদ আছে। আগে সেটা সংশোধন করা উচিত। তার আগে জারি করা এই ধরনের বিজ্ঞপ্তি পেশাগত জায়গায় আঘাত করছে বলে তাঁর অভিমত। ‘‘এই বিষয়ে অসঙ্গতি নিয়ে যে-ভাবে প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের কাঠগড়ায় তোলা হচ্ছে সেটা অনভিপ্রেত,’’ বলেন তিনি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy