সিপিএমের রাজনৈতিক লাইনের টানাপড়েনে শেষ পর্যন্ত বাংলা থেকে রাজ্যসভার প্রার্থী হতে দেখা যেতে পারে কংগ্রেসের জাতীয় স্তরের কোনও নেতা-নেত্রীকে। কংগ্রেস হাইকম্যান্ড ও প্রদেশ নেতৃত্বের আলোচনায় আপাতত উঠে এসেছে লোকসভার প্রাক্তন স্পিকার মীরা কুমারের নাম।
পশ্চিমবঙ্গ থেকে সিপিএম তাদের সাধারণ সম্পাদক সীতারাম ইয়েচুরিকে ফের রাজ্যসভায় প্রার্থী করলে তাঁকে সমর্থনে কোনও আপত্তি নেই কংগ্রেসের। কিন্তু সিপিএম গোটা বিষয়টি নিয়ে যে ভাবে পা ঘষছে, তাতে জটিলতা বাড়ছে। শেষমেশ দিল্লিতে কেন্দ্রীয় কমিটির চলতি বৈঠকে সিপিএম যদি ইয়েচুরিকে প্রার্থী না করার সিদ্ধান্ত নেয়, তখন তাদের কী করণীয়— তা নিয়েই সোমবার কংগ্রেস সহ-সভাপতি রাহুল গাঁধীর সঙ্গে আলোচনা হয়েছে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী, বিরোধী দলনেতা আব্দুল মান্নান এবং রাজ্যে এআইসিসি-র পর্যবেক্ষক সি পি জোশীর।
কংগ্রেস নেতৃত্ব আলোচনা করে দেখেছেন, তাঁদের সমর্থন নেওয়া যাবে না বলে ইয়েচুরিকে যদি সিপিএম প্রার্থী না করে, তা হলে কংগ্রেসের কাউকে সমর্থন করাও বাম বিধায়কদের পক্ষে অসুবিধা। সে ক্ষেত্রে রাজ্য থেকে কংগ্রেস কাউকে প্রার্থী দিল এবং সিপিএম ভোটদানে বিরত থাকল— এমন পরিস্থিতি হলে তৃণমূল ওই আসনটি জিতে নিতে পারবে। তার চেয়ে বরং প্রয়োজন হলে মীরার মতো কাউকে রাজ্য থেকে কংগ্রেস প্রার্থী করুক, এমন প্রস্তাবই রাহুলের সামনে দিয়েছেন প্রদেশ নেতারা। তাঁদের যুক্তি, সদ্যই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে কংগ্রেসের সঙ্গেই মীরাকে ভোট দিয়েছে সিপিএম। তবু তারা যদি ভোটদানে বিরত থাকে, তা হলেও মীরার সরাসরি বিরোধিতা করা অসুবিধাজনক হবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পক্ষেও। কারণ, তৃণমূলও তাঁকে রাষ্ট্রপতি পদে সমর্থন করেছিল। সে ক্ষেত্রে মীরার হাত ধরেই রাজ্য থেকে কংগ্রেসের এক জন সাংসদ হবেন। কংগ্রেসের এক নেতার কথায়, ‘‘সিপিএম সরে দাঁড়ালে রাজ্যসভার ষষ্ঠ আসনে তৃণমূল ভোট ভাঙাতে পারে। সেই আশঙ্কা মাথায় রেখেই প্রার্থী ঠিক করে ফেলতে হবে। কারণ, মনোনয়নের প্রক্রিয়া ২৮ জুলাই শেষ হয়ে যাবে।’’
বিরোধী শিবিরের টানাপড়েন মাথায় রেখে তৃণমূলও ষষ্ঠ আসনটি নজরে রাখছে। নিজেদের ২১১ জন বিধায়কের জোরে পাঁচ প্রার্থীকে সরাসরি জিতিয়ে ষষ্ঠ আসন দখলের জন্য প্রথম ও দ্বিতীয় পছন্দের ভোট অঙ্ক কষে ভাগাভাগি করবে তৃণমূল। তার জন্য প্রস্তুতি শুরু হয়েছে শাসক শিবিরে। এই অঙ্কেই ২০১৪ সালে কংগ্রেস সমর্থিত নির্দল প্রার্থী সৈয়দ আহমেদ মালিহাবাদীকে হারিয়ে আহমেদ হাসান ইমরানকে সাংসদ করেছিল তৃণমূল।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy